পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ইসলামিক স্টেট (আইএস) ইউরোপের দেশগুলোতে হামলা চালাতে সক্ষম। সম্প্রতি ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে তাদের ভয়াবহ হামলার পর তা প্রমাণিত হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে ইরাক বা সিরিয়া থেকে আসা আইএস বোমাবাজরা এসব হামলা চালায়নি। বরং এসব হামলা চালিয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশের স্বাধীন আইএস সেলগুলো। তারা কি আরো হামলা চালাবে? ২২ মার্চ বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে বিমান বন্দর ও মেট্রো রেলস্টেশনে ভয়াবহ হামলার পর এসব বিষয় ইউরোপীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ভ্রƒতে নতুন করে কুঞ্চন তুলেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাসেলসে হামলাকারী জিহাদিদের মত সেলগুলো আইএস গ্রুপের নেতৃত্বের দ্বারা সমর্র্থিত, তবে কোথায় ও কখন হামলা করা হবে তা তারাই নির্ধারণ করে। আর এ ধরনের স্বাধীনতা তাদেরকে খুঁজে বের করাকে কঠিন ও দ্বিগুণ বিপজ্জনক করে তুলেছে। ফলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তারা দু:স্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। খবর এএফপি।
ডালাসের টেক্সাস বিশ^বিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবাদ ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রবার্ট টেলর বলেন, এসব হচ্ছে নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য দুঃস্বপ্ন। কারণ এসব হামলা প্রতিহত করা প্রায় অসম্ভব। তারা সম্ভাব্য যে কোনো নমনীয় লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারে।
ব্রাসেলসে হামলা ছিল ইউরোপে আইএসের সর্বশেষ হামলার ঘটনা। এতে ৩৫জন নিহত ও ২৭০ জন আহত হয়েছে। সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামী খিলাফত ঘোষণার দু’বছরেও কম সময়ের মধ্যে গ্রুপটি তার উগ্রপন্থার লক্ষ্য হাসিলে ইউরোপীয় নাগরিকদের সমন্বয়ে সেলগুলোর একটি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করে। স্বদেশী এসব জিহাদিকে প্রশিক্ষণ, পকিল্পনা ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে আইএস ইউরোপের রাজধানীগুলোতে তার উপস্থিতি সম্প্রসারিত করে।
টেলর বলেন, এগুলো হচ্ছে সমন্বিত হামলা। তারা অবশ্যই এর মহড়া দিয়েছে। তারা পরিকল্পনামত কাজ করেছে এবং আমার ধারণা যে সুনির্দিষ্ট একটি গ্রুপ তাদে নির্দেশদাতা।
তিনি বলেন, তাদের সব কাজ তাদের প্রধান আল বাগদাদি জানেন কিনা আমার সন্দেহ আছে। আমার ধারণা আমাদের এখানে ব্যক্তিভিত্তিক সেল রয়েছে যারা অপেক্ষাকৃত স্বাধীন ভাবে কাজ করে।
জর্জ ওয়াশিংটন বিশ^বিদ্যালয়ের ফেলো জে.এম.বার্জার বলেন, এটা পরিষ্কার যে ব্রাসেলস ও গত বছর প্যারিসের হামলা আইএস অনুপ্রাণিত হামলার চেয়েও বেশি কিছু। তিনি বলেন, তিন বা চারজন হামলাকারী সম্পর্কে যেহেতু নিশ্চিত হওয়া গেছে তাই এটা নিশ্চিত যে এটি একক ব্যক্তির হামলা নয়, তারা আর কোনো সমর্থন পাওয়ার আশাও করছিল না।
বার্জার বলেন, ইরাক ও সিরিয়ার আইএস কেন্দ্রীয় কমান্ড এ হামলার কিছু অথবা সকল লোক এবং কারিগরি ও আর্থিক সম্পদ সরবরাহ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিতেও পারে, নাও দিয়ে থাকতে পারে। তবে মাঠ পর্যায়ের জিহাদির সম্ভত টার্গেট ও সময় নির্ধারণ বিষয়ে যথেষ্টই স্বাধীনতা আছে।
সবচেয়ে শক্তিশালি জিহাদি গ্রুপ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর থেকেই আইএস পাশ্চাত্যের উপর হামলার আহবান জানিয়ে আসছে। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি নাগাদ সিরিয়া ও ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলা শুরুর পর এ আহবান জোরদার হয়।
বার্জার বলেন, ব্রাসেলসের হামলার পিছনে আইএস সেল থাকতে পারে যারা প্যারিস হামলায় ১৩০ জন লোকের গণহত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল।
তিনি বলেন, যদিও নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো বেশি আগাম হয়ে যায় , তবে খুবই সম্ভাবনা যে আইএসের সে একই নেটওয়ার্ক ব্রাসেলসে হামলা করেছে যারা প্যারিসে হামলা চালিয়েছিল।
উল্লেখ্য, প্যারিস হামলার শেষ জীবিত সন্দেহ ভাজন সালাহ আবদেসালামকে ব্রাসেলসে গ্রেফতা করার চারদিন পর সেখানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটল।
মার্কিন থিংকট্যাংক মিডল ইস্ট ফোরামের রিসার্চ ফেলো আয়মেন আল-তামিমি বলেন, এ সপ্তাহে ব্রাসেলসের হামলা একক ব্যক্তির হামলার তুলনায় অনেক বেশি উন্নতমানের। তিনি বলেন, এতে ২০১৪-র শেষ ও ২০১৫-র প্রথম দিকে তুলনায় আইুএসের ইউরোপে হামলা চালানোর সামর্থ প্রতিফলিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এ সব হামলারর বিশদ তথ্য আইএস প্রধান বাগদাদি ও অন্য ঊর্ধ্বতন নেতারা আগে থেকে জানতেন কিনা তা নিয়ে অবশ্যই বিতর্ক রয়েছে, কিন্তু এ হামলাকে আইএসের স্বাধীন হামলা বলে চিত্রিত করা বিশ^াসযোগ্য নয়।
আইএসের আত্মপ্রকাশের পর হাজার হাজার ইউরোপীয় সহানভূতিশীল ইরাক ও সিরিয়ায় গিয়ে তাদের পক্ষে যোগ দিয়ে লড়াই করে।্ তাদের অনেকেই আবার দেশেও ফিরে এসেছে, বিশেষ করে বেলজিয়াম ও ফ্রান্সে।
বেলজিয়াম হচ্ছে ইউরোপের সেই দেশ যার নাগরিকরা সর্বোচ্চ সংখ্যায় আইএসের সাথে যোগ দিয়ে লড়াই করেছে। তাদের সংখ্যা কমপক্ষে ৪৯৪।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।