পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শামীম ওসমানের নির্দেশে আমাকে হত্যা করতেই এই হামলা, ডিসি-এসপির প্রত্যাহার চাই -আইভী : আইভীর লোকজন গুলি করেছে -শামীম ওসমান
নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী ও প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল, গুলিবর্ষণ এবং দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে শহরের চাষাড়া এলাকা। সংঘর্ষে নাসিক মেয়র আইভীসহ উভয়পক্ষের শতাধিক আহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শহরের চাষাড়ায় এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় আতঙ্কে শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল। সংঘর্ষের সময় পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। সংঘর্ষের শেষ পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ব্যাপক কাদানে গ্যাস ছুড়েছে। শামীম ওসমানের সশস্ত্র ক্যাডার নিয়াজুল তার মিছিলে ব্যাপক গুলিবর্ষণ করেছে বলে মেয়র আইভী জানান। গুলিবিদ্ধ আইভী সমর্থক নাসিরকে (৫০) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গুরুতর আহত প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ ফটোসাংবাদিক তাপস সাহাসহ ২৫ জনকে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, সড়ক থেকে হকার বসানো ও উচ্ছেদকে করাকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান ও মেয়র আইভী এর মধ্যে বেশ কয়েক দিন ধরেই পাল্টাপাল্টি বাক্য বিনিময় হচ্ছিল। সব শেষ গত সোমবার এমপি শামীম ওসমান ফুটপাতে হকার বসানোর ঘোষণা দেন। আর তা প্রতিরোধের ঘোষণা দেন মেয়র আইভী। এরই জের ধরে আজকের এই সংঘর্ষ হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ১৮ মিনিটে নগর ভবনের সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও কাউন্সিলরদের নিয়ে অবস্থান নেন মেয়র আইভী। জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান আইভীর পক্ষে নেতাকর্মীদের নিয়ে শোডাউন করে চাষাড়ার দিকে আসতে থাকেন। পরে নেতাকর্মীদের নিয়েই আইভী হকারদের উচ্ছেদ করতে করতে চাষাড়ার দিকে আসে। অন্যদিকে চাষাড়া শহীদ মিনারে শামীম ওসমান সমর্থিত হকারদের কয়েকটি গ্রুপ বিকেল সোয়া ৪টার দিকে অবস্থান নেন। আইভী চাষাড়া সায়াম প্লাজার সামনে আসলে পুলিশ মিছিলটি আটকে দেয়। তখন বাধা উপেক্ষা করে মিছিল সামনের দিয়ে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতন্ডা ঘটে। ওই সময়ে একজন হকারকে মারধর করা হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তখন হকারদের পক্ষে শামীম ওসমান সমর্থিত আ’লীগের লোকজন এগিয়ে আসলে কোন ধরনের উত্তেজনা ছাড়াই তাদের উপর ইটপাটকেল ছোড়া হয়। শুরু হয় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সকল মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়। যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
শামীম ওসমানের নির্দেশে আমাকে হত্যা করতেই এই হামলা, ডিসি-এসপির প্রত্যাহার চাই : আইভী
শামীম ওসমানের নির্দেশে তার ক্যাডার বাহিনী হত্যার উদ্দেশ্যে আমার উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। আমার নিরস্ত্র নিরীহকর্মীদের উপর বৃষ্টির মত ইট-পাটকেল ও গুলি বর্ষণ করেছে। এতে সাংবাদিকসহ আমার অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আমি শান্তিপ‚র্ণভাবে বিকাল ৪টায় ফুটপাত দিয়ে হেঁটে হেঁটে আসতে ছিলাম। শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের চাষাড়া সায়েম প্লাজার সামনে আসা মাত্র শামীম ওসমানের ক্যাডার নিয়াজুল পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করে। আমার নেতাকর্মীরা মার খেয়ে আহত হয়ে এক ঘন্টার মত আমাকে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে ঘিরে রাখলেও পুলিশ সম্পূর্ণ নীরব ভূমিকা পালন করেছে। তাহলে পুলিশ প্রশাসন কি চেয়েছে। আমাকে হত্যা করা হোক। তারপর আমার লাশ পৌঁছে দিবে?। হামলার সময় প্রশাসনের নিষ্ক্রীয় ভূমিকার কারণে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রত্যাহার দাবি করেছেন। তিনি বলেন, প্রকাশ্যে এক ঘন্টা আমার উপর সশস্ত্র হামলা করা হলো। আমাকে রক্ষা করার জন্য নেতাকর্মীরা নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে মার খাচ্ছিল এবং একে একে তারা আহত হচ্ছিল, আমি আহত হলাম। সাংবাদিক আহত হলো, অসংখ্য নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আহত হলো অথচ পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করলো। এটা মেনে নেয়া যায় না। শুধু তাই নয়, এজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি. তাও আবার ক্ষমতাসীন দলের মেয়র রাস্তার মার খাচ্ছে পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। কাদের ঈশারায় প্রশাসন এমন ভূমিকা পালন করেছে। আমি ডিসি ও এসপির প্রত্যাহার দাবি করছি। হামলা ও সংঘর্ষের পর নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকের এসব কথা বলেন। আইভীর প্রেস বিফ্রিং শেষ হওয়ার সন্ধ্যা ৬টা দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মতিয়ার রহমান প্রেসক্লাবে গিয়ে আইভীর সাথে দেখা করতে গেলে উত্তেজিত হয়ে উঠেন উপস্থিত সবাই। এসময় তারা উচ্চস্বরে বলতে থাকেন, রাস্তায় নীরব দাঁড়িয়ে তামাশা দেখেছেন, এখন কেন এসেছেন? চলে যান, আপনাদের সাথে কোন কথা বলবে না আপা। তখন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রেসক্লাবের সভাপতির রুম থেকে বেরিয়ে যান।
আইভীর লোকজন গুলি করেছে : শামীম ওসমান
এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, পুলিশের উপস্থিতিতে মেয়র আইভীর লোকজন হকারদের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে নগরীর সায়াম প্লাজার সামনে মেয়র আইভী ও শামীম ওসমানের সমর্থক হকারদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনার পর চাষাড়ায় এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন শামীম ওসমান। এ সময় শামীম ওসমান তার নেতাকর্মীদের এ সংঘর্ষে না জড়াতে আহŸান জানান। তিনি বলেন, কোনো একটি পক্ষ আমাদের দুর্ণাম করতে এ সংঘর্ষের সৃষ্টি করছে। তোমরা এ ফাঁদে পা দিও না। শান্ত থাকো।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার মইনুল হক বলেন, আমরা ঘটনাস্থলের মাঝখানে থেকে উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। সবার জানমালের নিরাপত্তার দিতে চেষ্টা করেছি। তবুও কয়েকজন আহত হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।