Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জীবন মরণের সন্ধিক্ষণে

যশোর-বেনাপোল সড়কের ২ হাজার ৩১২টি শতবর্ষী গাছ

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ঐতিহাসিক যশোর রোড। বৃটিশ আমলে কোলকাতা থেকে যশোর পর্যন্ত এই রোডের দুইধারে হাজার হাজার গাছ লাগানো হয়। যে গাছগুলোর বয়স এখন ১শ’৭০ বছর। শতবর্ষী এই গাছগুলো নিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা আলোচনায় এসেছে। হয়েছে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি। একবার বিনা টেন্ডারে গাছ বিক্রি নিয়ে দারুণ হৈচৈ পড়ে। আবার জেলা পরিষদ ও সড়ক বিভাগের মধ্যে দ্ব›দ্ব হয় মালিকানা নিয়ে। যা মন্ত্রণালয় পর্যন্ত যায়। সর্বশেষ এই রোডের ২সহস্রাধিক গাছ কাটা না কাটা নিয়ে চলছে পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন। সামাজিক যোগাযোগে উঠছে তুমুল ঝড়। গাছগুলো এখন জীবন মরণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। গাছগুলো নিয়ে চলছে টানাহেচড়া। শেষ পর্যন্ত গাছগুলোর ভাগ্যে কী আছে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিক সড়ক যশোর-বেনাপোলের ৩৮কিলোমিটারে ২হাজার ৩শ’১২টি শতবর্ষী গাছের জীবন রক্ষা হবে কি হবে না তা নিয়ে প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। সড়কটি ফোর লেনে উন্নীতকরণের জন্য গাছগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গাছ রক্ষার আন্দোলনের প্রস্ততি চলছে জোরেশোরে। আগামীকাল বুধবার যশোর প্রেসক্লাবের সামনে সচেতন যশোরবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন করা হবে বলে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ইকবাল কবীর জাহিদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ঐতিহাসিক গাছগুলো রক্ষার জন্য আন্দোলন করা হবে। যশোর রোডের ১শ’৭০ বছরের গাছ ওপারেও (পেট্রাপোল থেকে কোলকাতা) রয়েছে। সেখানে গাছ রেখেই সড়ক উন্নয়ন হয়েছে। তার প্রশ্ন এপারে নয় কেন?
জানা যায়, গত ৬জানুয়ারী যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে জনপ্রতিনিধি, সড়ক বিভাগের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, স্থানীয় কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার প্রতিনিধিদের অধিকাংশই গাছ কাটার পক্ষে মত দেন। কেউ কেউ বহু পুরাণো গাছ রাখলে দুর্ঘটনা ঘটবে এমন মন্তব্যও করেন। সে মোতাবেক ‘জনস্বার্থে’ উল্লেখ করে বহু পুরাণো গাছগুলো কেটে সড়ক উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পর থেকেই পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি ও সামাজিক যোগাযোগে ঝড় ওঠে। যা ক্রমাগত বাড়ছে। যশোর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, যশোর-বেনাপোল সড়ক প্রশস্ত ও উন্নয়নে ৩শ২৮কোটি ৯২লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অচিরেই কাজ শুরু হবে। সড়ক উন্নয়নে গাছগুলো কাটার কোন বিকল্প নেই। যারা গাছ কাটার পক্ষে তাদের যুক্তি হলো, গাছের বয়স অনেক বেশী, ওগুলো রেখে ফোর লেন করা সম্ভব হবে না। সড়কের মাঝে রাখলে দুইপাশের অনেক জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। তারা গাছ কাটার বিকল্প দেখছেন না। না কাটার পক্ষের যুক্তি হচ্ছে, পরিবেশ রক্ষায় গাছগুলো বাঁচিয়ে রাখা জরুরি। উন্নয়ন তো মানুষের জন্য, পরিবেশ হুমকিতে ফেলে গাছ কাটা হবে আত্মঘাতি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যশোর-বেনাপোল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ