পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের তাবলিগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভী গতকাল শনিবার ঢাকা ছেড়েছেন। গতকাল শনিবার সকালে তিনি সফরসঙ্গীদের নিয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। বেলা ১১টায় তার ফ্লাইট নির্ধারিত থাকলেও কুয়াশার কারণে তা কিছুটা বিলম্ব হয়। পরে বেলা ১২টার দিকে জেট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তিনি দিল্লির উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে। তাবলিগ জামাতের একাংশ, হেফাজত ও কওমিপন্থী আলেমদের বিরোধিতার মুখে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ না নিয়েই ফিরে যেতো হলো মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভিকে। বিতর্কিত ও আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে সমালোচিত হয়েছিলেন দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের এ জিম্মাদার। রমনা থানার ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মাওলানা মোহাম্মদ সাদকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে আমরা বিমানবন্দরে পৌঁছে দিয়েছি। এর আগে গত শুক্রবার কাকরাইল মসজিদে তিনি জুমার নামাজ পড়ান এবং দীর্ঘ সময় বয়ান করেন। যাওয়ার আগে মাওলানা সাদ ইজতেমা উপলক্ষে ঢাকায় আসা বিভিন্ন দেশের তাবলিগ জামাতের আমির ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ সভা করেন। সভায় বিভিন্ন দেশে তাবলিগ জামাতের দাওয়াতি কার্যক্রম ও তাবলিগ পরিচালনায় মজলিশে শুরা গঠন এবং আগামী বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঠিক করা হয়। গত বুধবার মাওলানা সাদের বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেয়া ঠেকাতে বিমানবন্দর সড়কে বিক্ষোভ করে তাবলিগ জামাতের একটি অংশ। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে মাওলানা সাদকে বাংলাদেশ থেকে ভারতের দিল্লিতে ফেরত পাঠানোরও দাবি তোলা হয়। নইলে পরিস্থিতি খারাপ হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। ওই দিন বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুটি পক্ষের বৈঠকে হয়। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা যথাসময়ে হবে। শান্তিপূর্ণভাবে হবে। যাদের নিয়ে বিতর্ক ছিল, তাদের নিয়ে একটা সমঝোতায় তারা এসেছেন। তিনি বলেন, মাওলানা সাদ সুবিধামতো সময় বাংলাদেশ থেকে চলে যাবেন। তিনি ইজতেমায় অংশ নেবেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে থাকবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি কাকরাইলে থাকবেন। সূত্র জানায়, দিল্লির মাওলানা সাদ তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি। ২০১৫ সাল থেকে তিনি বিশ্ব ইজতেমায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করে আসছেন। স¤প্রতি বেশ কিছু বক্তব্য ও কর্মকান্ডের কারণে আলেমদের বড় একটি অংশ তার বিরোধিতা করে আসছে। তিনি যেন এবারের বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে না পারেন এ ব্যাপারে আলেমদের একটি পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হয়েছে। বিরোধিতার মুখেই গত বুধবার মাওলানা সাদ ঢাকায় আসেন। কাকরাই মারকাজ সূত্রে জানা গেছে, ইজতেমায় আসা বিদেশি অতিথিরা মাওলানা সাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। শুত্রবার আসরের পর কাকরাইল মসজিদে সাদ কান্ধলভীর ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ সাঈদকে বয়ান করতে দেখা যায়। এর আগে আরেক ছেলে মাওলানা ইউসুফও বয়ান করেন বলে জানা গেছে। কাকরাইলের ওই সূত্র জানায়, মাওলানা সাদের যে বক্তব্যের কারণে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, সে ব্যাপারে ইতিপূর্বে তিনি লিখিত ও মৌখিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছেন। তার বক্তব্যে আস্থাশীল হয়ে ইতিমধ্যে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসার মোহতামিম (অধ্যক্ষ) আবুল কাসেম নোমানী মাওলানা সাদকে চিঠি দিয়েছেন। এরপরও একটি পক্ষ দেওবন্দ মাদ্রাসার দোহাই দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কাকরাইল মারকাজের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি বলেন, গত শুক্রবার সকালের বয়ানে মাওলানা সাদ তার বিরুদ্ধে যেসব বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক ওঠে, সে বিষয়েও তিনি কথা বলেছেন। তিনি হজরত মুসা (আ.)-কে নিয়ে তার বক্তব্যের জন্য ভুল স্বীকার করেন এবং ক্ষমা চান। তাবলিগ জামাত সূত্র জানায়, মাওলানা সাদ ১৯৮৯ সাল থেকে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় আসা শুরু করেন। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি ইজতেমায় বয়ান করে আসছেন। গত দুই বছর তিনি আমবয়ানের পাশাপাশি আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন। বিতর্কিত বক্তব্যের অভিযোগে এবার তার নেতৃত্ব নিয়ে তাবলিগ জামাতকেন্দ্রিক আলেম সমাজ বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই বিভক্তির প্রকাশ ঘটে এবার বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে তার ঢাকায় আসার পর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।