পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শৈত্য প্রবাহ ও প্রচন্ড শীতে ঘরেই টিকে থাকতে পারছেনা মানুষ। জরুরি কোন কাজ ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন কেউ। গরম কাপড় কিংবা আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন সকলেই। কিন্তু একই সময়ে বেতন-ভাতার দাবিতে দিন নেই রাত নেই রাস্তার উপর বসে কাটছে জাতি গড়ার কারিগর শিক্ষকদের।
সামান্য শীতের কাপড়ে দিন কোনভাবে পার করলেও রাতে অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা। গায়ে একটি পাতলা কম্বল জড়িয়ে রাস্তার উপরেই শুয়ে শুয়ে কাটাচ্ছেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষকরা। শিক্ষকদের এমন মানবেতর দিনাতিপাতেও তাদের উপর নজর পড়ছেনা সরকারের। টানা ৮দিন অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া না পেয়ে বাধ্য হয়ে আমরণ অনশন কর্মসূচি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু অনশন কর্মসূচির দুই দিন পার হলেও এখনো শিক্ষকরা তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে কোন আশ্বাস পর্যন্ত পাননি। অথচ এই শিক্ষকরাই কেউ কেউ ৪০ বছর পর্যন্ত বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে চলেছেন। মঙ্গলবার ও বুধবার রাতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাত ও রাস্তার একাংশজুড়ে পাতলা কম্বল জড়িয়ে শুয়ে আছেন ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকরা। কেউ কেউ ঘুমিয়ে পড়েছেন, কেউবা শীতে কাপছেন। এসময় বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ক্বারী রুহুল আমিন চৌধুরী বলেন, মাদরাসা শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে মানবেতন জীবন যাপন করছে। তাই বাধ্য হয়ে ঘর-সংসার ছেড়ে টানা আটদিন অবস্থান ধর্মঘটের পর দুদিন ধরে অনশনে নেমেছি। তিনি জানান, কেউ কেউ ৪০ বছর ধরে এসব মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোন বেতন পাননি। এভাবে কতদিন চলে। যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণ করা হয়েছে। সেখানে একই স্তরের ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকদের এমন মানবেতর জীবন-যাপন কিভাবে মেনে নেওয়া যায়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষকরা শিক্ষক হলে, আমরা কি? আমরা কেন বেতন-ভাতা পাবো না।
এদিকে দুই দিন ধরে অনশন চালিয়ে আসা শিক্ষকদের মধ্যে প্রায় ৪০জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতির ব্যানারে মঙ্গলবার সকাল থেকে আমরণ অনশনে নামেন তারা। অনশনের দ্বিতীয় দিন গতকাল সকালে দেখা যায় মাদুর বিছিয়ে শিক্ষকরা শুয়ে-বসে আমরণ অনশন করছেন। ‘বেতন দেন নাইলে বিষ দেন’, ‘মা জননী শেখ হাসিনা ক্ষুধার জ্বালায় বাঁচি না’, ‘আর কতদিন কাঁদবো বেতনের জন্য’, ‘প্রাইমারি জাতীয়করণ আমরা কেন হব না’, ‘মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী আর কতদিন’, ‘এক দফা এক দাবি জাতীয়করণ চাই’, প্রাইমারিরা শিক্ষক, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ীরা কি ভিক্ষুক, এমন নানা ¯েøাগানে তৈরি ফেস্টুন, মাথায় ব্যাচ পরে বিভিন্ন জেলা থকে আগত প্রায় সহা¯্রাধিক স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা আন্দোলন যোগ দিয়েছেন।
রুহুল আমিন চৌধুরী বলেন, গত ১০ দিন ধরে আন্দোলনে যোগ দেয়া শিক্ষকদের মধ্যে ৪০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাড়ালেও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন-ভাতা না বাড়িয়ে বঞ্চিত করা হয়েছে। অথচ আমরা প্রাথমিকের মতোই পাঠদান দিয়ে চলছি। আটদিন ধরে অবস্থান ধর্মঘট চলার পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য অমরণ অনশনের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি। আশা করি অতিসত্বর সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দিবেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, লেখাপড়া শিখে শিক্ষকতায় এসেছি। বেতন-ভাতা না পাওয়ায় পরিবারের ভরণপোষণের খরচ চালতে পারছি না। রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণ করতে হবে। শিক্ষকরা বলেন, তীব্র শীতের মধ্যে রাস্তায় বসে আন্দোলন করলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস মিলেনি। অথচ আমাদের পাশেই আন্দোলন করছিলেরন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেছেন। আমরা একই দেশের নাগরিক। তাদের মতোই শিক্ষক। কিন্তু আমাদের দিকে কারও কোনো দৃষ্টি নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধি যোগাযোগও করেনি। এ কারণে বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। দাবি আদায় ছাড়া রাজপথ ছাড়বেন না বলেও জানান তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।