Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউপি নির্বাচনে প্রাণহানির দায় নির্বাচন কমিশনের : বিএনপি

প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রথম ধাপে সহিংসতায় ২২ জন নিহত হয়েছে দাবি করে এর জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) দায়ী করেছে বিএনপি। দলটির অভিযোগÑএ ব্যাপারে ইসি কোনো ভূমিকাই পালন করেনি, শুধু দায়সারাভাবে কিছু কথা বলে গেছেন। নির্বাচন কমিশন মানসিক অস্থিরতায় ভুগছে। ফলে এখনো নির্বাচনী এলাকায় ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে।
ইউপি নির্বাচনের একদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে ২২ মার্চ ভোটের দিন পর্যন্ত সারাদেশে ৭১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংঘাত-সংঘর্ষ-সহিংসতা, পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবির গুলি এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পৈশাচিক হামলায় এই ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিনজন প্রার্থীও রয়েছেন বলে এই বিএনপি নেতার দাবি। তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
তিনি বলেন, এখনও নির্বাচনী সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। মানুষের বাড়ীঘরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অগ্নিসংযোগসহ হামলা-লুটপাট, নির্যাতন ও তাÐবলীলা চালাচ্ছে। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে এক ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রশাসন ও পুলিশ নিয়ে যে বক্তব্যগুলো দিয়েছেন সে বিষয়ে তার নিজস্ব ক্ষমতা প্রয়োগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এতগুলো জীবন দিতে হতো না।
রিজভী বলেন, আজকে এতোগুলো প্রাণহানির জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী। তাদের এই আনুগত্যমূলক আচরণ, সেবাদাসমূলক আচরণের কারণে এতোগুলো জীবনহানি হল, এতো মানুষ নিহত হল, মানুষের অঙ্গহানি ঘটল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদের মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, নির্বাচনের আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, প্রশাসনের কাক্সিক্ষত সহযোগিতা পাচ্ছি না। যদি কোথাও সংঘাত-সংঘর্ষ হয় তবে পুলিশকে দায়-দায়িত্ব নিতে হবে। আবার নির্বাচন শেষে তিনিই (সিইসি) বললেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। তার এই ধরনের কথা-বার্তায় মনে হয়েছে, তিনি মানসিক অস্থিরতায় ভুগছেন। সিইসি প্রশাসন ও পুলিশকে নিয়ে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, সে বিষয়গুলোতে তার নিজস্ব ক্ষমতা প্রয়োগ করে ব্যবস্থা নিলে এতোগুলো মানুষের প্রাণহানি ঘটত না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইসি সরকারের কথামতো কাজ করে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সিইসি মাঝে মাঝে বজ্রাদপি কঠিন কথা বললেও যখন সরকারের দিকে তাকান তখন কুসমাদপি কোমল হয়ে পড়েন। কারণ তিনি আনুগত্য বিসর্জন দিতে চান না। রক্তস্রোতের মধ্যে নির্বাচনকে ভাসিয়ে দিয়ে হলেও তিনি সরকারের ইচ্ছা পূরণের সর্বোচ্চ আত্মনিয়োগ করেন।
তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের স্নায়ু শিথিল হয়ে গেছে, মস্তিষ্ক অলস হয়ে গেছে। হৃদয় দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণেই তারা (ইসি) আজ নিথর, লক্ষ্যভ্রষ্ট ও বিপথগামী একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে। সংঘাতে মানুষের মৃত্যুতে তারা শিহরিত হয় না, অসংখ্য মানুষের অঙ্গহানি তাদের বিবেককে নাড়া দেয় না। তাদের চাকরিতে যাতে কোনো ছেদ-যতি না ঘচে তারা সেই প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।
এছাড়া বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উলাহ বুলু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও যুব দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নিরবসহ ১৭ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বুধবার জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। খুলনা সিটি করপোরেশন বরখাস্ত মেয়র মনিরুজ্জামান মনির নিঃশর্ত মুক্তিও দাবি করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব।
রিজভী অভিযোগ করেন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ২১ মার্চ যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়ন ছাত্রদল সহ-সভাপতি তনুকে কুপিয়ে নৃশংস কায়দায় হত্যা করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। তিনি অবিলম্বে তনুর হত্যাকারীদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করে কঠিন শাস্তি এবং তার রুহের মাগফিরাত শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ জেড এম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবীর খোকন, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন, রফিক শিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউপি নির্বাচনে প্রাণহানির দায় নির্বাচন কমিশনের : বিএনপি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ