Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আপনাদের জিজ্ঞাসার জবাব

| প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

প্রশ্ন : নবীজীর শান ও মান সম্পর্কে কিছু বলুন?
উত্তর : মহান আল্লাহর যত সৃষ্টি আছে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ, সবচেয়ে মর্যাদা মন্ডিত সৃষ্টি হলেন তাঁর পেয়ারা হাবিব আমাদের প্রাণের আঁকা তাজেদারে মদিনা হজরত মুহাম্মাদ মুস্তফা (সা.)। তার মর্যাদা সম্পর্কে আমরা যতই বলি, যতই লিখি, যতই শুনি তা কখনোই শেষ হবে না, পরিপূর্ণ হবে না। কবি বলেন- ‘খোদা কি আজমত কিয়া হ্যায়, মুহাম্মাদ মোস্তফা জানে মাকামে মোস্তফা কিয়া হ্যায়, মুহাম্মাদ কা খোদা জানে।’ অর্থাৎ, ‘মহান আল্লাহর বড়ত্ব-মহত্ব শুধু মুহাম্মাদই (সা.) ভাল জানেন। আর মুহাম্মাদ (সা.) শান-মানও আল্লাহ তায়ালাই ভাল বুঝেন।’ আমাদের মত সল্প জ্ঞানের মানুষের পক্ষে মুহাম্মাদ (সা.) এর প্রকৃত শান-মান বর্ণনা সম্ভব নয়। আর যতটুকুই বা আমরা বলব, তা মূলত মহাসমুদ্রের এক বিন্দু পানির চেয়ে অনেক কমই বলা হবে। তাই তো আরেক কবি বলেছেন, ‘বাদ আজ খোদা তুই বুজুর্গ, কিচ্ছা মুখতাছার’। অর্থাৎ, হে সরকারে কায়েনাত, আপনার মর্যাদা আর কতটুকুই বলতে পারব, সংক্ষেপে এতটুকই বললাম, আল্লাহর পরেই আপনার স্থান।’
হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘একদিন ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) এসে বললেন- ‘হে মুহাম্মাদ (সা.)! পূর্ব থেকে পশ্চিম, সমগ্র ভ‚খন্ড আমি তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি কিন্তু আপনার মত মর্যাদা সম্পন্ন আর কাউকে পাইনি। আপনার সম্মানে আপনার বংশ হাশিমকে এত মর্যাদা দেওয়া হয়েছে যে, হাশিম বংশের পিতার চেয়ে কোন মর্যাদামন্ডিত পিতা আমি পৃথিবীর বুকে পাইনি।’ (মাদারিজুন নুবুয়ত)। একদিন হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) প্রিয়নবী (সা.) এর শান ও মান বর্ণনা করছিলেন। তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তায়ালা অন্যসব নবী (আ.) থেকে হুজুর পাক (সা.)কে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন।’ একজন প্রশ্ন করল, ‘কীভাবে ব্যখ্যা করে বুঝিয়ে দিন।’। ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, অন্যসব নবী (আ.) সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আমি কোন রাসুলকেই তাঁর স্বজাতির ভাষাছাড়া প্রেরণ করিনি।’ (সূরা ইবরাহিম, আয়াত : ৪)। আর হুজুর (সা.) সম্পর্কে বলেছেন, আপনাকে সব মানুষ ও জাতির জন্যই রাসুল করে পাঠিয়েছি।’ (সূরা সাবা, আয়াত : ২৮)।
রাসুল (সা.) এর শান-মান সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুহাম্মাদ (সা.) আপনি বলুন, (দুনিয়ার মানুষ) তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসো তবে আমি নবীকে অনুসরণ করে চলো। তাহলে আল্লাহও তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহগুলো মাফ করে দিবেন। আল্লাহ ক্ষমাকারী ও দয়াময়।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)। তাহলে দেখা যাচ্ছে, আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে এবং আমাদের জীবনের ভুল-ত্রæটি মাফ করিয়ে নিতে চাইলে প্রিয়নবী (সা.) এর আনুগত্য-অনুসরণ এবং ভালোবাসা একান্তই অপরিহার্য।
নবী (সা.) এর আনুগত্য করতে গিয়ে, তাঁর সুন্নাহর পথে চলতে গিয়ে কোনরকম বেয়াদবি যেন প্রকাশ হয়ে না পড়ে সে সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। আল্লাহ বলেন- ‘বিশ^াসী বান্দাগণ! তোমাদের কণ্ঠস্বর যেন আমার হাবিবের পবিত্র কণ্ঠস্বরের উপরে না ওঠে। তোমরা একে অপরের সঙ্গে যেভাবে কথা বল, আমার বন্ধুর সঙ্গেও সেভাবে কথা বল না। যদি এমনটি করো তবে তোমাদের আমলগুলো বরবাদ হয়ে যাবে তোমরা টেরও পাবে না।’ (সূরা হুজুরাত, আয়াত : ২)। অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুহাম্মাদ (সা.) তোমার প্রভুর কসম! ততক্ষণ পর্যন্ত তারা মোমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা নিজেদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদে তোমাকে ন্যায় বিচারক না মানবে।’ (সূরা নিসা, আয়াত : ৬৫)।
উত্তর দিচ্ছেন : মুফতি আনিসুর রহমান জাফরী



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ