পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : গভর্নর হিসেবে নিজেকে সফল এবং দায়িত্বশীল দাবি করেলেও শক্তভাবে ব্যাংকিং খাতের তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার অভিযোগ ছিল সদ্য পদত্যাগকারী গভর্নর ড. আতিউর রহমানের বিরুদ্ধে, যার প্রভাব পড়ে ব্যাংকিং খাতে। আর যে কারণে এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের আয় (টার্নওভার) কমেছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা এবং লোকসান দিয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। একই সঙ্গে সরকারি কোষাগারে প্রদেয় লভ্যাংশের পরিমাণও কমেছে ২ হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল দায়িত্ব ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করা। তবে তাতে কিছুটা ঘাটতি ছিল। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কৃষি, এসএমই এবং অন্তভুক্তিমূলক অর্থনীতি নিয়ে কাজ করছে। ফলে জনবল সংকট এবং সার্বিক সক্ষমতায় তদারকিতে এগিয়ে আসতে পারেনি। তিনি বলেন, সময়ের সাথে নতুন ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অনিয়ম এবং দুর্নীতির ধরন পাল্টেছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সফল হতে পারেনি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের ব্যাংকটিতে ১৬ হাজার ৩ কোটি টাকার ইক্যুইটি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৭২২ কোটি টাকার সংরক্ষিত আয়। এ ছাড়া পুনর্মূল্যায়িত ৭ হাজার ২০ কোটি টাকার রিজার্ভ, সংবিধিবদ্ধ ১ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকার ফান্ড, অসংবিধিবদ্ধ ১ হাজার ৪২২ কোটি টাকার ফান্ড, সাধারণ রিজার্ভ ৪৮০ কোটি, অন্যান্য রিজার্ভ ১ হাজার ১৩৪ কোটি ও মুদ্রা তারতম্য রিজার্ভ রয়েছে ২ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকার।
ব্যাংকটিতে ৬৪১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার সোনা ও রুপা এবং ১ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকার দেশীয় কয়েন ও নগদ টাকা রয়েছে। এর বাইরে সরকারের কাছে ১১ হাজার ২২৯ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে ১০ হাজার ৭০৪ কোটি টাকাসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মোট ২৪ হাজার ৬১ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৪ হাজার ৯১৬ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা এবং ৫০ হাজার ৩০২ কোটি টাকার দেশীয় মুদ্রা ডিপোজিট রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্পদের পাশাপাশি দায়ও রয়েছে। ব্যাংকটির কাছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ১৬ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাবদ দায় রয়েছে ১৮ হাজার ৭২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়ের মূল উৎস হচ্ছে সুদ। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সুদ বাবদ ২ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা আয় করেছে। এ ছাড়া কমিশন ও ডিসকাউন্ট বাবদ আয় করে ১৭২ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে সুদ বাবদ ৩ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা আয় করে। এ ছাড়া কমিশন ও ডিসকাউন্ট বাবদ ১২২ কোটি টাকা আয় করে।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক ও তার অধীনস্ত (সাবসিডিয়ারি) প্রতিষ্ঠানসমূহ ২ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির রিজার্ভে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় মূল্য হ্রাস পাওয়ায় এই লোকসান হয়েছে।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে অ-বিক্রীত বা রিজার্ভে রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রার দাম কমে বাংলাদেশ ব্যাংকের লোকসান হয়েছে (আন-রিয়েলাইজড) ৩ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। আর বিক্রয়ে লোকসান হয়েছে (রিয়েলাইজড) ১০ কোটি টাকা। তবে ব্যাংকটি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আন-রিয়েলাইজড ১ হাজার ১১৪ কোটি ও রিয়েলাইজড ২০০ কোটি টাকা মুনাফা করে।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের লভ্যাংশ গ্রহণ প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। আলোচ্য বছরে সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকার লভ্যাংশ পেয়েছে। যা আগের বছরে পেয়েছিল ৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা।
বৈদেশিক বিনিয়োগ
বিদেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। ইউএস ডলার ট্রেজারি বিল, বৈদেশিক বন্ডসহ বিভিন্ন খাতে এই বিনিয়োগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউএস ডলার ট্রেজারি বিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। এছাড়া বৈদেশিক বন্ডে ৬৭ হাজার ৯২৫ কোটি টাকাসহ বিদেশে মোট ১ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে ১৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।