Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ট্রাম্পের চাপ পাকিস্তানকে চীনের আরো কাছে ঠেলে দিতে পারে

| প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

টাইমস অব ইন্ডিয়া : পাকিস্তানের উপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপ দেশটিকে চীনের আরো কাছে ঠেলে দিতে পারে। পাকিস্তানে একটি চীনা সামরিক ঘাঁটি তৈরির ব্যাপারে চীনের আলোচনার ঘটনায় তারই আভাস মিলছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
শুক্রবার বেইজিংয়ে চীনের এক সরকারী সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, পাকিস্তানের প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কঠোর মনোভাব চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা বন্ধনকে আরো জোরদার করবে। এরই অংশ হিসেবে চীন ইরানের চাবাহার বন্দরের সন্নিকটে একটি পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটি লাভ করতে যাচ্ছে।
ট্রাম্প ১ জানুয়ারি এক টুইটে পাকিস্তানের কঠোর সমালোচনা করেন। এতে তিনি সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার জন্য পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেন। চীনের গেøাবাল টাইমস পত্রিকা এক খবরে বলে, ট্রাম্পের এ ভ‚মিকা ইতোমধ্যে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠা চীন-পাকিস্তান সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বেইজিং ৫০ বিলিয়ন ডলারের চীন -পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মার্কিন কঠোর অবস্থান ইসলামাবাদকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক লেনদেনে চীনা মুদ্রা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতে ভ‚মিকা রেখেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল, গেøাবাল টাইমসের খবরে ওয়াশিংটন টাইমসের একটি খবর উদ্ধৃত করা হয়েছে। তা হল, চীন বিদেশে তার দ্বিতীয় সামরিক ঘাঁটি নির্মাণের ব্যাপারে পাকিস্তানের সাথে বৈঠক করছে। এটি কৌশলগত সমুদ্র পথে চীনের বৃহত্তর সামরিক নৌ সক্ষমতা অর্জনের অংশ।
এ সামরিক ঘাঁটিটি জিওয়ানিতে নির্মিত হতে পারে। এ পাকিস্তানি বন্দরটি ওমান উপসাগর সীমান্তে ইরানের চাবাহার বন্দরের কাছে এবং বালুচিস্তানের গোয়াদর বন্দরের অল্প দূরে অবস্থিত। বর্তমানে চীন আরব সাগরের উষ্ণ পানিতে প্রবেশ লাভের জন্য ভারতের মুম্বাই বন্দরের বিপরীতে গোয়াদর বন্দরের উন্নয়ন করছে।
জিওয়ানি চাবাহার বন্দর থেকে পাথর ছোঁড়ার দূরত্বে অবস্থিত। আফগানিস্তানে ভারতীয় পণ্য রফতানির একটি বাণিজ্য করিডোর নিশ্চিত করতে ইরান, ভারত ও আফগানিস্তান যৌথভাবে চাবাহার বন্দরের উন্নয়ন করছে।
পর্যবেক্ষকরা বলেন, চীন গোয়াদর বন্দরের উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ সময় জিওয়ানির বিষয়টি পাকিস্তানের একটি চাপ সৃষ্টির কৌশল হতে পারে। এর আগের খবরগুলোতে বলা হয়েছিল যে গোয়াদরে চীন তার নৌসেনাদের ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে।
ট্রাম্পের চাপ পাকিস্তানকে চীনের আরো ঘনিষ্ঠ হওয়ার দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে যখন চীনা সরকারী সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে তখন বিশ্লেষকরা দু’দেশের মধ্যে ইতোমধ্যে বিদ্যমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করছেন।
উহুয়ান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থ ও নিরাপত্তা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডং ডেংজিন বলেন, চীনা মুদ্রা ব্যবহারের অনুমোদনের পাকিস্তানের সিদ্ধান্ত কোনো নাটকীয় নীতি পরিবর্তন নয়, কারণ বহু পাকিস্তানি কোম্পানিই ইতোমধ্যে ইউয়ানকে গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, তবে যে সময় এ ঘোষণাটি দেয়া হয়েছে তা তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে।
ডেংজিন গেøাবাল টাইমসকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের চেয়েও বেশি কিছু। এটা যুক্তরাষ্ট্রকে বলা যে যে চীনের সাথে পাকিস্তানের গভীর সম্পর্ক আছে এবং পাকিস্তান চীনের সাথে আরো বেশি ঘনিষ্ঠ হবে।
ফুদান বিশ^বিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ সেন্টারের অধ্যাপক লিন মিংওয়াং জিওয়ানিতে চীনাা সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে বলেন, বেইজিং ও ইসলামাবাদ উভয়েরই পাকিস্তানে নৌ ও বিমান স্থাপনা প্রতিসঠার ক্ষমতা আছে, কিন্তু এই সময়ে তা অপ্রয়োজনীয়।
তিনি বলেন, তবে এটা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের জবাবে একটি ব্যাকআপ প্ল্যান হতে পারে।
লিন মনে করেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা তাদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলকে চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যায় তাহলে চীন সমুদ্র পথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবশ্যই পাকিস্তানের সাথে একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। গেøাবাল টাইমস বলে, চীন ভারত মহাসাগরে আফ্রিকার শৃঙ্গে জিবুতিতে তার প্রথম বৈদেশিক সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করেছে। চীন সরকারী ভাবে বলেছে যে এটা হচ্ছে নৌদস্যুতা দমনে মোতায়েন তার নৌসোদের সেবা দিতে লজিস্টিক ঘাঁটি। জিবুতি ছাড়াও চীন শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা সমুদ্র বন্দর ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে।



 

Show all comments
  • শুকুর আলী ৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:৫৯ পিএম says : 0
    ট্রাম্পের ভুল নীতি আমেরিকাকে বিপেদে ফেলবে
    Total Reply(0) Reply
  • আবির ৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:৫৯ পিএম says : 0
    বাংলাদেশ চায়না সম্পর্কও চীন পাকিস্তান সম্পর্কের মত হওয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ