Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডাবল লেন হচ্ছে ৩২০ কি.মি. সড়ক

ঢাকার চারিদিকে বিপর্যস্ত সড়কের তালিকা প্রস্তুত : এলজিইডি’র নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কার্যক্রম গ্রহণ

| প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ উপজেলার রুপসী-কাঞ্চন সড়কটির র্দীঘদিন ধরে বেহাল দশা। প্রায় ১৪ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ ঢালাই, ইট-সুরকি উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দক। আর এই খানাখন্দে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মালবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন। সড়কের বেহাল দশার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। স্থানীয় সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জর রুপগঞ্জের তারাবো-কাঞ্চন পৌরসভার সেতুবন্ধন তৈরি করেছে সড়কটি। ১৯৮৭ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ হিসেবে নির্মিত হওয়ার পর এলজিইডির সড়ক হিসেবে অধিভুক্ত করা হয়। এই সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠেছে দেশের বৃহত্তম বেশ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। ঢাকা সিলেট মহাসড়ক থেকে সংযোগ হয়ে জায়দেবপুর-কাঞ্চন-মদনপুর (এশিয়ার হাইওয়ে ) বাইপাস সড়কের সঙ্গে মিশেছে। এছাড়া রাজধানী ঢাকার কাছে হওয়ায় প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে কয়েক হাজার যানবহান চলাচল করে। গত কয়েক বছর ধরে উপজেলার এশিয়ান হাইওয়েতে যানবাহনের বাড়তি চাপে যানজট সৃষ্টি হলে বিকল্প পথে পাড়ি দিতে দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলগামী মালবাহী যানবাহন রূপসী হয়ে এই সড়কে ঢুকে সরাসরি বঙ্গবন্ধু সেতুমুখী চলে যায়। এছাড়া স্থানীয় কিছু যানবাহনের স্ট্যান্ড ছাড়াও বিপুল সংখ্যক গাড়ি যাতায়াত করে এই সড়কে। সিটি গ্রæপ, নাভানা ফার্মাসিটিক্যাল, গ্যালকো স্টিল, বাংলাদেশ এডিভয়েল, পারটেক্স গ্রæপ, প্রাণ আরএফএল, পূর্বাচল পেপার মিল, অনন্ত পেপার মিল, পেপারটেকসহ ৩০টি শিল্পকারখানার হাজার হাজার মালবাহী যানবাহন প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে।
শুধু রুপগঞ্জ নয়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার সড়কগুলোর একই দশা। গেল বর্ষায় সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে যানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। এছাড়া সড়কের কারনে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে আছে। স্থানীয় ভুক্তভোগিরা জানান, উপজেলার মানিকপুর বাজার থেকে দয়াকান্দা পর্যন্ত সড়কের পুরোটাই ভাঙা। রামচন্দ্রদী থেকে উচিতপুরা পর্যন্ত সড়কের দুই পাশের মাটি সরে গিয়ে পুরো সড়ক ভেঙে জমির সাথে মিশে যাচ্ছে। আড়াইহাজার-জাঙ্গালিয়া সড়কের শিবপুর নামক স্থানে সড়কের মাঝখানে বিরাট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকার পার্শ্ববর্তী গাজীপুর শিল্পাঞ্চল এলাকার সড়কগুলোর অবস্থাও একই রকম। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, ভাঙাচোরা সরু সড়কে যাত্রীবাহী টেম্পু, অটোরিকশা বা রিকশা চলাচলের মতো অবস্থা নেই। তার উপর চলাচল করছে মালবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন ভারী যানবাহন। এতে করে কোনো কোনো স্থানে সড়কের অস্থিত্বই বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বলছে, এক যুগ আগে এসব সড়কে যে ধরনের যান চলাচল করত, এখন তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শিল্পের পণ্যবাহী ভারী যানবাহনও। যানবাহনের সংখ্যাও বেড়েছে, যার চাপ নিতে পারছে না সিঙ্গেল লেনের এসব সড়ক। এটি বিবেচনায় ঢাকার পার্শ্ববর্তী ৩২০ কিলোমিটার সড়ক ডাবল লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সড়কগুলো চিহ্নিতও করা হয়েছে।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ঢাকা পার্শ্ববর্তী বিপর্যস্ত এ ৩২০ কিলোমিটার সড়কের তালিকা তৈরির কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এর মধ্যে সাভার উপজেলার ১২৩ কিলোমিটার, রূপগঞ্জ উপজেলার ৭৪ কিলোমিটার, আড়াইহাজার উপজেলার ৮৫ কিলোমিটার ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৮ কিলোমিটার সিঙ্গেল লেন সড়ক ভেঙে ডাবল লেনে রূপান্তরের প্রয়োজনীয় কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে এলজিইডি। এলজিইডি’র একজন প্রকৌশলী জানান, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এরই মধ্যে রাজধানীর পার্শ্ববর্তী ৩২০ কিলোমিটার সড়ক ডাবল লেনে উন্নীতকরণে অর্থায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এলজিইডির নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা জানান, ঢাকাকে ঘিরে রাখা ৩২০ কিলোমিটার সড়ক এখন ক্রমবর্ধমান যানবাহনের চাপ নিতে পারছে না। দ্রæত অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের কারণে এমনটি ঘটছে। এ অবস্থায় সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ককে স্বাভাবিক রাখতে ৩২০ কিলোমিটার সিঙ্গেল লেনের সড়ককে ডাবল লেনে রূপান্তরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওই কর্মকর্তা জানান, ঢাকার পার্শ্ববর্তী বেশকিছু ইউনিয়নের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বসতবাড়ি বা মিল কারখানা নির্মাণের জন্য ইউনিয়নের সরু কাঁচাপাকা সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারী যানবাহন চলাচল করছে। এভাবে ভারী যান চলাচল বাড়লেও অর্থাভাবে এখানকার সড়কগুলো উন্নয়ন করা যায়নি। কারণ এসব সড়কের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় নির্বাহ হয় ইউনিয়ন পরিষদের থোক বরাদ্দের সামান্য অংশ থেকে। এ অবস্থায় এক যুগ আগে নির্মিত সড়কগুলো ভেঙে ডাবল লেনে উন্নীত করার কোনো বিকল্প নেই। এলজিইডি সূত্র জানায়, নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প-২ -এর মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে ঢাকার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ৩২০ কিলোমিটার সিঙ্গেল লেন সড়ক ডাবল লেনে উন্নীত করা হবে। পর্যায়ক্রমে আরো বিস্তৃত হবে এ কার্যক্রম। প্রয়োজনে সিটি করপোরেশনের পার্শ্ববর্তী ভাঙাচোরা সিঙ্গেল লেনের প্রতিটি সড়ক ভেঙে ডাবল লেনে রূপান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে এলজিইডির। ###



 

Show all comments
  • আলিম ৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ২:০৭ পিএম says : 0
    ২ লেন, চার লেন, ৬ লেন না করে যেসব লেন আছে তা সংস্কার করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • শ্যামল ৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ২:০৭ পিএম says : 0
    ভাল উদ্যোগ।
    Total Reply(0) Reply
  • শবনম ৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ২:০৭ পিএম says : 0
    দেশের কোথাও সড়ক ভাল নেই। ভাঙা চোরা রাস্তা আগে মেরামত করুন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাবল লেন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ