পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনভেস্টিং চ্যানেল : ইরান কি বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে? ওয়াশিংটন ও তেলআবিবে ইরানি মোল্লাদের শত্রæরা তাই মনে করেন যেমনটা মনে করে পাশ্চাত্য মিডিয়ার বেশিরভাগ। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবরে বলা হয় যে ইরানের এলিট বিপ্লবী রক্ষী কোর তেহরানের নিরাপত্তা দায়িত্ব নিচ্ছে। এতে এটাই প্রমাণ হয় যে ইরাকের শাসকরা কোনো সুযোগ দিতে চায় না। এটা হয়ত বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত।
ইরানের ইসলামী ধর্মতাত্তি¡করা সর্বশেষ এ ধরনের গোলযোগ দেখেছিলেন ২০০৯ সালে। তখন শান্তিপূর্ণ গণ পথবিক্ষোভের ব্যাপারটি পরিচালিত হয়েছিল বিশিষ্ট রাজনীতিক মির হোসেইন মুসাভির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ ব্যানারে এবং সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য তা গ্রীন মুভমেন্টের রূপ গ্রহণ করেছিল। মুসাভি ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন এবং তার প্রতিদ্ব›দ্বী মাহমুদ আহমাদিনেজাদের কাছে পরাজিত হন। এ আন্দোলন মুসাভির ঘাঁটির বাইরেও মধ্যবিত্ত শ্রেণির কিছু অংশকে পক্ষে আনে, বিশেষ করে ছাত্রদের, তখন তেহরানের বাইরে ও দেশের অন্যান্য প্রধান শহরে অবস্থান ধর্মঘট বিস্তার লাভ করে। যখন এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেল যে আহমাদিনেজাদ কোথাও যাচ্ছেন না এবং বিক্ষোভের প্রতি ওবামা প্রশাসনের উদাসীনতায় আন্তর্জাতিক সমর্থন অর্জিত হল না, তখন আন্দোলন গতি হারিয়ে স্তিমিত হয়ে য্ায়।
এবার আমাদের বলা হচ্ছে যে বিষয়গুলো সম্ভবত আলাদা। প্রথম দৃষ্টিতে এতে সত্য আছে বলে মনে হতে পারে। সহিংস আন্দোলনের প্রথম ঢেউ ৩৯টি আঞ্চলিক শহরে লাগলেও বিস্তৃত রাজধানীর (যা ঐতিহাসিকভাবে অধিক রাজনীতিকীকৃত) অংশ মাত্রে তা পৌঁছতে পেরেছে। ২০০৯ সালে ৯ মাসের বিক্ষোভকালে সরকারী হিসেবে নিহতের সংখ্যা ছিল ৩৬। অন্যদিকে সর্বশেষ আন্দোলনের প্রথম পাঁচদিনেই নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। খবরে বলা হয়েছে, চলমান গোলযোগে থানা ও সেনা ছাউনিগুলো লক্ষ্যবস্তু হয়। অন্যদিকে সশস্ত্র ব্যক্তিরা কয়েকটি বিক্ষোভে অনুপ্রবেশ করে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। ২০০৯ সালে এ রকম কিছু ঘটেনি। আবার গ্রীন আন্দোলনে বারাক ওবামার আগ্রহ না থাকার বিপরীতে ডোনাল্ড ট্রাম্প এ আন্দোলনের খবর পাওয়ার পর টুইটে তার সমর্থন ব্যক্ত করেন যদিও কেউই জানত না যে কি ঘটছে।
এ সব ও অন্যান্য কারণে এবারের আন্দোলন ২০০৯ সালের চেয়ে কম সংখ্যক ইরানিকে আকৃষ্ট করতে পারলেও সম্ভবত কর্তৃপক্ষের জন্য তা দমন ও পরিস্থিতি শান্ত করা অনেক বেশি জটিল। বিক্ষোভকারী ও দাঙ্গাকারীরা তাদের কৌশলে অনেক বেশি সহিংস এবং ভৌগোলিক ভাবে অধিকতর বিস্তৃত বলে মনে হচ্ছে। উপরন্তু সমাবেশগুলো আরো স্বতস্ফ‚র্ত দেখা যাচ্ছে এবং দ্রæত ওয়াশিংটনের সমর্থন পেয়েছে। আরো গুরুত্বপূর্ণ যে সম্ভবত তারা নেতৃত্বহীন এবং শাসক পরিবর্তনের অগোছালো উদ্দেশ্য ছাড়া সুস্পষ্ট লক্ষ্যহীন। এর ফলে এক বিক্ষোভ থেকে পরবর্তী আরেক বিক্ষোভে সামঞ্জস্যহীন সেøাগান উচ্চারিত হচ্ছে: আয়াতুল্লাহর মৃত্যু চাই, বিদেশী সামরিক অভিযানে আর অর্থ ব্যয় নয়, বেকারত্ব ও দুর্নীতির অবসান চাই, বৃহত্তর স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র চাই, রেজা শাহর আত্মা শান্তি পাক।
২০০৯ সালের গণবিক্ষোভের মত বর্তমান বিক্ষোভ কার্যত প্রায় অভিন্ন মনে হতে পারে। সে সময় তাদের প্রতি সমর্থন না দেয়ার জন্য ওবামাকে আজো নিন্দা করা হয়। কিন্তু তিনি বাস্তব জ্ঞান থেকেই বলেছিলেন যে আহমাদিনেজাদ ও মুসাভির মধ্যে পার্থক্য যতটা বলা হচ্ছে ততটা বিরাট নাও হতে পারে। এ কারণে তিনি গ্রীন মুভমেন্টের পিছনে তার দেশের সমর্থন দিতে আগ্রহী নন। কার্যত, এ দুজনের মধ্যে মুসাভি বেশি কট্টরপন্থী।
পাশ্চাত্য সংবাদ মাধ্যমের কেউ কেউ ব্যাপক ভাবে বিশ^াস করে যে গ্রীন মুভমেন্ট এক ধরনের তারুণ্য প্রধান দলীয় জোট যারা তেহরানকে বার্সেলোনার মধ্যপ্রাচ্য সংস্করণে পরিণত করতে চায়। বাস্তব হচ্ছে, মুসাভি বিশ^াস করেন যে ধর্মীয় মহল আয়াতুল্লাহ খোমেইনির আদর্শের সাথে বিশ^াসঘাতকতা করেছে এক সময় তিনি যার চিহ্নিত উত্তরসুরি ছিলেন। তার প্রতি আমাদের উদার অনুমোদন ও সমর্থন অবশ্যই প্রকৃত বৈপরীত্যের কথা বলবে যে খোমেইনি বিপ্লবীদের অধিকাংশকেই হত্যা করে তাদের সাথে বিশ^াসঘাতকতা করেছিলেন এবং তারপর পশ্চাৎপদ মধ্যযুগীয় ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন।
যখন গ্রীন মুভমেন্ট ব্যর্থ হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে , একজন কট্টর সমালোচক তখন বিপরীত যুক্তি দিতে পারেন। একটি শক্ত হাতের দমন চালানোর উস্কানি দিয়ে কট্টর ধর্মীয় নেতা মুসাভি দ্রæত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সাথে জোট বাঁধলেন এবং কি সে কারণ যা সামাজিক উদারীকরণের পদক্ষেপকে বিপরীতমুখী করল?
আজ কি আবার সেই একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে?
বিশেষ কৌত‚হলের ব্যাপার যে প্রথম বিক্ষোভ সংঘটিত হয় ইরানের পবিত্র শহর মাশাদে যা কট্টর পন্থী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ইবরাহিম রইসির ঘাঁটি। গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির কাছে পরাজিত হন। প্রথম দিকের বিক্ষোভগুলোতে উচ্চারিত প্রধান ¯েøাগান ‘রুহানির মৃত্যু চাই’ কি আশ্চর্যজনক ছিল? বিভিন্ন স্থানে তখন থেকে যারা যোগদান করেছেন আরো একবার তারা কি দক্ষতার সাথে রুহানির অবমাননার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় নেতাদের তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরায় আরোপের প্রয়োজনে এ ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য ব্যবহৃত হবেন?
এই বিভ্রান্তিকর পর্বে যে কোনো ঘটনায় পাশ্চাত্যের উচিত ২০০৯ সালের মত ইরানের অভ্যন্তরের অস্থির পরিস্থিতিতে উস্কানি দেয়া থেকে বিরত থাকা। আমরা যদি তথাকথিত আরব বসন্তের বিপর্যয়কর বিপ্লব থেকে কিছু শিক্ষা নিয়ে থাকি তা হচ্ছে এই যে বিশে^র এই অংশে সামাজিক আন্দোলন থেকে বিজয়ীরা কখনোই পাশ্চাত্যপন্থী তারা নয় যাদের উপর প্রাথমিক ভাবে আমরা বাজি ধরি।
সর্বোপরি রুহানি সে কথাই বলেছেন যা যে কোনো পশ্চিমা নেতাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে বলতেনঃ জনগণের সমাবেশ ও বিক্ষোভ করার অধিকার আছে, কিন্তু তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা বা সম্পদের ক্ষতি করার অধিকার নেই। সন্দেহ নেই যে ইরান ব্যাপক মানবাধিকার লংঘনকারী। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মিসর বা সউদী আরবের মত আমাদের মিত্ররা আরো বেশি খারাপ। সুতরাং আমাদের আসলে যা জিজ্ঞেস করা উচিত তা হচ্ছে হোয়াইট হাউসের উঁচু ব্যক্তি থেকে নিচু পর্যন্ত প্রত্যেকেই কেন এ ধরনের ভন্ডামির আশ্রয় নেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।