পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগ্রাসী ঋণ বন্ধের নির্দেশ গভর্নরের
বিদায়ী বছরে কয়েকটি ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদে আকস্মিকভাবে বড় পরিবর্তন হয়েছে। ওই পরিবর্তনের ফলে চাকরি হারাতে হয়েছে শীর্ষ নির্বাহীদেরকেও। তাই ব্যাংকিং খাতে আকস্মিক পরিবর্তনের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি)। আর তাই এ ধরনের অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতা চেয়েছেন এমডিরা। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় গভর্নর ফজলের কবিরের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এমডিদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)। বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন গভর্নর। এছাড়া আগ্রাসীভাবে ঋণ বিতরণ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারল্য সংকটের আশঙ্কায় ঋণ বিতরণের অনুমোদিত মাত্রাও কমিয়ে আনা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, গত বছরের শুরুতে ইসলামী ব্যাংকের মালিকানায় বড় পরিবর্তন হয়। পরে সোসাল ইসলামী ব্যাংকেও চেয়ারম্যান-ভাইসচেয়ারম্যানসহ অন্যান্য পদে বড় পরিবর্তন আসে। সম্প্রতি এবি ব্যাংকেও চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যানসহ কয়েকটি পদে পরিবর্তন আসে। তাই সংশ্লিষ্টরা এটাকে ‘ব্যাংক দখল’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ইসলামী ব্যাংক এবং সোসাল ইসলামী ব্যাংকে পিরবর্তনের ঘটনায় এমডিরাও চাকরি হারিয়েছেন। আরও কয়েকটি ব্যাংকে এ ধরনের পরিবর্তনের গুজব রয়েছে।
গতকালের ব্যাংকার্স সভা শেষে এবিবির চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গত বছর কয়েকটি ব্যাংকের আকস্মিক পরিবর্তন হয়েছে। এতে ম্যানেজমেন্ট ও আমানতকারীরা ভীত হয়ে পড়েছেন। পরিবর্তন অবশ্যই কাম্য। তবে আকস্মিকভাবে কোন পরিবর্তন হওয়া উচিত নয়। গভর্নরের কাছে আমরা বলেছি। গভর্নর বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, শেয়ারহোল্ডারা শেয়ার কেনাবেচা করেন। এতে কেউ বেশি শেয়ার কিনে এজিএম বা বোর্ড সভার মাধ্যমে পরিচালক হতেই পারেন। এক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হলে বা সুশাসনের অভাব থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংকটি বিষয়টি দেখে এবং দেখছে।
প্রতি তিন মাস পরপর ওই ব্যাংকার্স সভা অনুষ্ঠিত হয়। গভর্নর সভাপতিত্বে গতকালের সভায় সব ব্যাংকের এমডিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় দেশের সামষ্ঠিক অর্থনীতি, ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত ঋণ বিতরণ, আমদানি-রপ্তানী, ডলারের বিনিময় মূল্য, রেমিটেন্স পাঠানোর খরচ কমানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সভা সূত্র জানায়, সাধারণ ব্যাংকগুলো সংগৃহীত আমানতের সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ এবং ইসলামী ব্যাংকগুলো সংগৃহীত আমানতের সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে পারে। কোন কোন ব্যাংক এরচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে। যার ফলে ঋণের প্রবৃদ্ধি অনেক বেশি হচ্ছে। এই আগ্রাসীভাবে ঋণ বিতরণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর ফজল কবির।
এস কে সুর চৌধুরী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নতির স্বার্থে ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ ঋণ বিতরণ বাড়তে পারে। কিন্তু বর্তমানে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি ১৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এতে তারল্য সংকট হতে পারে। এজন্য ঋণ আমানতের অনুপাত (এডিআর) কমানো হতে পারে। আগামী মুদ্রানীতি ঘোষণা এ বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এস কে সুর চৌধুরী জানান, ডলারের বিনিময় মূল্য নির্র্ধারণে সব ব্যাংকে সতর্ক করা হয়েছে। বিলাসবহুল পণ্য আমদানি না প্রয়োজনী পণ্য আমদানিতে অর্থায়ন করতে বলা হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকের কর্মী নিয়োগে আবেদনের ক্ষেত্রে ফি নেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলো দাবি করেছিল। সেই দাবি নাকোচ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মুদ্রানীতি নিয়ে পর্যালোচনা এবং আগামী মুদ্রানীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সাইবার হামলার বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে।
সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, অনুমোদিত মাত্রার তুলনায় বেশি হারে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। ঋণ যেহারে বাড়ছে সেই হারে আমানত বাড়ছে না। এজন্য তারল্য কমে যাচ্ছে। এটি প্রতিরোধে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর। ঋণ বিতরণের অনুমোদিত মাত্রা কমিয়ে আনা হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তিনি আরও বলেন, আমদানি ব্যয় অনেক বেশি হচ্ছে। সেই তুলনায় রপ্তানী ও রেমিটেন্স বাড়ছে না। এজন্য চলতি হিসাব ভারসাম্যে বড় অঙ্কের ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি পূরণে রপ্তানী ও রেমিটেন্স বাড়ানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর সার্ভিস চার্জ কমিয়ে প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ২০ টাকা করতে বলা হয়েছে। এছাড়া ডলারের বিক্রয় মূল্য সমহারে নির্ধারণের জন্য ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।