পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চীন এসে দাঁড়ালো ইসলামাবাদের পাশে
পাকিস্তানকে আর অর্থ সাহায্য করা হবে না। দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বোকা বানিয়ে আর্থিক সাহায্য নিয়ে পাকিস্তান সেটা সন্ত্রাসমূলক কাজে ব্যবহার করেছে। ট্রাম্পের এই টুইটের পরই সামরিক সাহায্য পাকিস্তানকে আপাতত দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন প্রশাসন।
স্বভাবতই এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পাকিস্তান। ইসলামাবাদ প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, আফগানিস্তানে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে অন্যকে দোষারোপ করা বন্ধ করুক মার্কিন সরকার। চুপ থাকেনি চীনও। তারা পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে। বলেছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তান অনেক কিছু ত্যাগ করেছে এবং লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রসঙ্গত, নতুন বছরের সূচনায় পাকিস্তানকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট একটি টুইট করেন, আর অর্থ সাহায্য নয় পাকিস্তানকে। এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানকে ২৫৫ মিলিয়ন ডলার সামরিক সাহায্য দেওয়ার কথা আপাতকালীন ভিত্তিতে বন্ধ করে দেয়। এরপরই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী খওয়াজা আসিফ বলেন, তারা আসল সত্যটা সারা দুনিয়ার সামনে শিগগিরই প্রকাশ করবেন। এর কিছুক্ষণ পরেই পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানানো হয়, সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড হেলিকে জরুরি তলব করে এর প্রতিবাদ জানায়।
পরে টুইটারে ট্রাম্পের টুইটের প্রতিক্রিয়ায় ফুঁসে ওঠেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খুররাম দস্তগীর খান এবং তথ্য স¤প্রচার মন্ত্রী মারিয়াম আওরঙ্গজেব। খররম দস্তগীর খান বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী জোটের অংশ হিসেবে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রকে মুফতে স্থল ও আকাশসীমা এবং দেশটির সামরিক ঘাঁটিসমূহ ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে। এছাড়া গত ১৬ বছর ধরে আল কায়দাকে ধ্বংস করতে পাকিস্তান মার্কিন সেনাকে সবরকম ভাবেই সহযোগিতা করেছে। সেটা যোগাযোগ ব্যবস্থাই হোক বা সামরিক শক্তি দিয়েই হোক বা তথ্য দিয়ে। কিন্তু মার্কিন প্রশাসন তার বদলে শুধু অবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে। প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে অকারণে পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ালো চীন
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর্থিক সহযেগিতা বন্ধের হুমকির পর পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে চীন। গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্পের হুমকির বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নারী মুখপাত্র দাবি করেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তান অনেক কিছু ত্যাগ করেছে এবং লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
নারী মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেন, পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবিরোধী পূর্ণ স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা পারস্পরিক শ্রদ্ধার সঙ্গে করছে বলে আমরা খুশি। তারা এই অঞ্চল ও বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য একসঙ্গে কাজ করছে।
চীনকে পাকিস্তানের ‘সব সময়ের বন্ধু’ হিসেবে মনে করা হয়। উভয় দেশের ঘনিষ্ঠ কূটনীতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক রয়েছে।
হুয়া আরও বলেন, আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট নীতি আফগানিস্তান ও এই অঞ্চলের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নকে সহযোগিতা করবে।
২০১৮ সালের প্রথম দিনে বছরের প্রথম টুইটে পাকিস্তানকে দেওয়া আর্থিক সহযোগিতা বন্ধের হুমকি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি অভিযোগ করেন, পাকিস্তান সহিংস জঙ্গিদের আশ্রয় ও তাদের সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে।
টুইটারে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বোকার মতোই পাকিস্তানকে গত ১৫ বছরে ৩৩ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতা দিয়েছে। বিপরীতে তারা আমাদের মিথ্যা ও শঠতা ছাড়া কিছুই দেয়নি। তারা আমাদের নেতাদের বোকা ভাবছে’।
ট্রাম্প আরও লিখেছেন, ‘আমরা আফগানিস্তানে যেসব সন্ত্রাসীদের তাড়া করছি তাদের নিরাপদ আশ্রয় দিচ্ছে পাকিস্তান। আমাদের কোনও সহযোগিতা করছে। আর না।’
গত সপ্তাহে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পাকিস্তান কার্যকর অভিযান পরিচালনা না করায় দেশটির জন্য বিলম্বে বরাদ্দকৃত ২৫৫ মিলিয়ন ডলার প্রত্যাহার করার বিষয়টি ট্রাম্প প্রশাসন বিবেচনা করছে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের বিষোদগার অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ‘পাকিস্তান বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা ও সন্ত্রাসীদের প্রায়ই নিরাপদ আশ্রয় দেয়।’ গত বছরের ডিসেম্বরেও ট্রাম্প বলেছিলেন, সবার ভালোর জন্য তিনি হয়তো পাকিস্তানকে দেওয়া সহযোগিতা বন্ধ করে দিতে পারেন।
এছাড়া মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও গত সপ্তাহে আফগানিস্তান সফরের সময় বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানকে নজরে রাখছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।’ সব মিলিয়ে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক অবনতির দিকে গড়িয়েছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, নিউ ইয়র্ক টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।