Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দু’দেশের সম্পর্কে আরেকটি মাইলফলক প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০০ এএম, ২৪ মার্চ, ২০১৬

বিশ্বে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো -মোদী
বিশেষ সংবাদদাতা : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ এবং ব্যান্ডউইথ বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের আরেকটি মাইলফলক হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছিল তা অটুট রয়েছে এবং তা আরও সুদূরপ্রসারী হচ্ছে।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের সময় ঢাকা থেকে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। দিল্লি থেকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ত্রিপুরা থেকে প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যৌথভাবে ত্রিপুরা-কুমিল্লা আন্তঃদেশীয় গ্রিডের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি।
এ ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ঐতিহাসিক এ ঘটনায় আজ আমাদের মধ্যে এমন এক গেটওয়ে খুলছে, যা আমাদের আরো সামনে অগ্রসর হতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ডিজিটাল বিশ্বের এ গেটওয়ে খুলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রযুক্তির উৎকর্ষে দু’টি দেশের প্রধানমন্ত্রী ও একজন মুখ্যমন্ত্রী মিলে কোনো কিছুর উদ্বোধন, দুনিয়ায় এমন মুহূর্ত কমই আসে। এ ঘটনা বিশ্বে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে উল্লেখ করে ভবিষ্যতে দুই দেশের যোগাযোগের নতুন নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মোদি।
সকাল সাড়ে দশটার পর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শেখ হাসিনা, অন্যদিকে দিল্লিতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নরেন্দ্র মোদি দুই দেশের কর্মকর্তাদের নিয়ে অবস্থান করছিলেন। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে ত্রিপুরা থেকে সংযুক্ত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর বক্তব্যের পর বক্তব্য দেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।
ভিডিও কনফারেন্সে বাংলা ভাষায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান এবং ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ভারতবাসীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সবাইকে অভিনন্দন জানান। মোদির বক্তব্যের শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও হিন্দিতে মোদি ও ভারতবাসীকে শুভেচ্ছা জানান। দোল উৎসব উপলক্ষেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি।
শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন ভারত সরকার এবং ভারতীয় জনগণ যেভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছিলেন, সে কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। সেই থেকে আমাদের মধ্যে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তা অটুট রয়েছে। বর্তমানে আরও সুদূরপ্রসারী কার্যক্রম করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ এবং ব্যান্ডউইথ বিনিময়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক সৃষ্টি করলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ আমদানি আমাদের জ্বালানি চাহিদা পূরণ করবে। বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ রফতানির ফলে ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ডিজিটাল সংযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং সেখানকার জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও যথেষ্ট অবদান রাখবে। আমাদের বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় হবে। তিনি বলেন, ত্রিপুরা থেকে বিদ্যুৎ আমদানির মধ্য দিয়ে আমাদের আরেকটি রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি পূরণ হলো। ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে আমি যখন ত্রিপুরা সফরে যাই, সে সময় এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এটা বাস্তবায়ন করায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে জ্বালানি খাত নিয়ে আমাদের দুই দেশের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। যেটা এই অঞ্চলে প্রথম এবং আমরা ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছি। আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাব বলে আশা করছি। ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র রামপালে নির্মাণ করা হচ্ছে। যা আমি মনে করি, দুই দেশের সম্পর্কের নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। ব্যান্ডউইথ ভাগাভাগি, উপকূলীয় এলাকায় জাহাজ চলাচল, পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল সরবরাহের মতো নতুন যোগাযোগ আমাদের সামগ্রিক ক্ষেত্রে সংযোগ হওয়ার ক্ষেত্রে একটা নতুন মাত্রা দিয়েছে।
ভারত বাংলাদেশের পরবর্তী ক্ষেত্র হবে আন্তঃসংযোগের সম্প্রসারণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শুধু বস্তুগত সংযোগই নয়, আমরা দু’দেশের মধ্যে ভার্চুয়াল সংযোগ, মানুষে মানুষে যোগাযোগ, চিন্তা-চেতনার সংযোগসহ সকল ধরনের সংযোগ স্থাপন করতে চাই।
আঞ্চলিক আন্তঃসংযোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সড়ক, রেল যোগাযোগ, বিদ্যুৎ-গ্রিড এবং বিদ্যুৎ বিপণন খাতে সহযোগিতার জন্য আমরা বিবিআইএন ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় কাজ শুরু করেছি। এর আওতায় ভুটান ও নেপালের পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প উন্নয়নে যৌথ বিনিয়োগের জন্য প্রকল্প চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই এই অঞ্চলে দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে। এই দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ আমরা একা করতে পারি না। আমাদের যৌথ উদ্যোগ দরকার। এ ক্ষেত্রে তা আমরা অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে করতে সক্ষম হয়েছি। বরং এখন মনে করি, দুই দেশের মানুষ যারা এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে আছে, তাদের জীবনমান যৌথভাবে উন্নত করতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, আমরা চাই, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সেই সঙ্গে দুই দেশেরই উন্নয়ন। এই অঞ্চলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশ এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। আমি নিশ্চিত, আমাদের জনগণের বৃহৎ কল্যাণ সাধনের জন্য ভবিষ্যতে এ ধরনের আনন্দঘন আরও মুহূর্তের এ সময় মানিক সরকার ইন্টারনেট-ব্যান্ডউইথ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। ইন্টারনেট ত্রিপুরার মানুষকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
 ভিডিও কনফারেন্সে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তার জন্যও ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী আরো বেশি ব্যান্ডউইথ নিতে চাইলে বাংলাদেশ থেকে তা দেওয়া যাবে বলে মানিক সরকারকে আশ্বস্ত করেন। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও ত্রিপুরা থেকে আরো বিদ্যুৎ আনার বিষয়ে সহযোগিতা করবেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানান।  
ভিডিও কনফারেন্সের সময় গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হোসেন তৌফিক ইমাম, মশিউর রহমান, তৌফিক-ই-ইলাহী ও গওহর রিজভী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম,  বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক এবং বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটেও থাকতে চায় ভারত ঃ
জল ও স্থলে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতার যে সূচনা হয়েছে তাকে মহাকাশে নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, আমরা দুই দেশ মিলে বিশ্বের সামনে একটি উদাহরণ তৈরি করছি- প্রতিবেশীর সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক রাখতে হয়; আন্তঃনির্ভরশীল পৃথিবী বাস্তবায়নের পথ কোনটা হতে পারে।
বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপালের মধ্যে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলের জন্য বিবিআইএন চুক্তির কথা উল্লেখ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছুদিন আগে আমরা একযোগে রোড কানেক্টিভিটির কাজ শুরু করেছি। আজ আমরা বিদ্যুতের মাধ্যমে নতুন শক্তি তৈরি করছি। একবিংশ শতাব্দীর যে প্রয়োজন, সেই ডিজিটাল কানেক্টিভিটিও একযোগে করছি। তার মানে জল-স্থল-নভঃ সব জায়গায় বাংলাদেশ-ভারত একসঙ্গে চলছে আর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
মোদি বলেন, আমি আগেও বলেছি, মহাকাশেও আমাদের একসঙ্গে চলা উচিত। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ভারতের একান্ত ইচ্ছা, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে এক সঙ্গে চলতে চায়।    
ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্যের শুরুতে মোদি ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলেন, প্রথমে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা... একটু দেরি করে জানাচ্ছি। আগামী ২৬ তারিখে আপনাদের জাতীয় দিবস। ভারতের জনগণের তরফ থেকে জানাই অভিনন্দন।
মোদি বলেন, আজ ভারতের হোলি উৎসব। ভারতে হোলি খুবই পবিত্র উৎসব। বাংলাদেশেও কিছু জায়গায় এই উৎসব পালন করা হয়। আজ আরেকটি মহত্ত্বপূর্ণ দিন। তিনি সমগ্র দেশবাসীকে হোলির শুভ কামনা জানিয়ে বলেন, ‘হোলি রংয়ের উৎসব। হোলির এই পবিত্র উৎসবের দিনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ভারতের ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে ১০০ মেঃওঃ বিদ্যুৎ আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রপ্তানি (শেয়ারিং) কার্যক্রমের উদ্বোধন হওয়ায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন রঙে রাঙানো হলো।’
তিনি বলেন, আজ হলো বাংলাদেশ-ভারতের টি-টোয়োন্টি ক্রিকেট ম্যাচ। আমি দুটি টিমকে অনেক শুভ কামনা জানাই। ভারত আর বাংলাদেশ যখন খেলে, তখন খেলার জয়-পরাজয় ছাপিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ খেলার শক্তি সৃষ্টি হয়। বিদ্যুৎ যেমন শক্তি দেয়, তেমন আমাদের দু’টি টিম আজ বন্ধুত্বপূর্ণ  ‘স্পোর্টসশিপের’ জায়গা থেকে খেলবে, আমার এই শুভ কামনা।
বিদ্যুৎ ও বান্ডউইথ বিনিময়ের এই ঘটনাকে মোদি অভিহিত করেন এক ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসেবে। দুনিয়ায় এমন মুহূর্ত কমই আসে যখন দুটি দেশের প্রধানমন্ত্রী ও একজন মুখ্যমন্ত্রী মিলে আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্যে কোনো কিছুর উদ্বোধন করলেন। এ দিক থেকে এটি খুবই মহত্ত্বপূর্ণ দিন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানজির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অটুট ছিলো। আজও আমরা আপনার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে চলছি। আমরা দুই দেশ মিলে বিশ্বের সামনে একটি উদাহরণ তৈরি করছি। তিনি শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেন, বঙ্গবন্ধু সব সময়ই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রেখেছেন। আপনিও সে সঙ্কটকালীন সময়ে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন। একটা সময় ছিল বাংলাদেশ দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্ত ছিল। আজ বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রান্তিকালে যেমন আমরা পাশাপাশি যেমন ছিলাম, এখনো আছি।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে ব্যান্ডউইথ যাওয়া প্রসঙ্গে মোদি বলেন, আমাদের জন্য একটি গেটওয়ে খুলছে। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে প্রবেশের আমাদের দুটি গেটওয়ে একটি পশ্চিমে আরেকটি দক্ষিণে। আমাদের পূর্বে কিছু ছিল না। পূর্বের গেটওয়ে আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সাথে মিলে পূর্বে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করছি। ভারতের পূর্বাঞ্চলের তরুণদের জন্য এ দিনটিকে ‘নতুন চেতনা জাগানোর দিন’ অভিহিত করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আজকের দুনিয়া কমিউনিকেশনের শক্তিতে চলে। আজকের দিন সেই শক্তি বাড়ানোর দিন। এজন্য আপনি যে সহযোগিতা করেছেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ সে সুযোগ করে দিয়েছে বলে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রয়োজনে আরো অধিক পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহে ভারত প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান। তিনি বলেন, আসাম, ত্রিপুরাসহ এ অঞ্চলের জন্য যে ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন করা হয়েছে, তার ধারণক্ষমতা আমরা প্রথম থেকেই বেশি রেখেছি। আসছে দিনগুলোয় প্রয়োজন হলে আমরা আরো বেশি বিদ্যুৎ রফতানি করতে পারবো।
 ঢাকা থেকে শেখ হাসিনা ও দিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদির ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একযোগে উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গেই ভারত-বাংলাদেশ ৪শ’ কেভি ডাবল সার্কিট লাইনটিতে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু হয়েছে। এ লাইন দিয়ে ত্রিপুরার পালাটানা গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনা হবে। বিদ্যুৎ আনতে বাংলাদেশ অংশে ২৭.৮ কিমি ও ভারতে অংশে ২৪ কিমি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। লাইনটি বাংলাদেশে কুমিল্লার কসবা দিয়ে প্রবেশ করেছে। সব মিলিয়ে গ্রিড লাইনটির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৫২ কিলোমিটার।
ফজিলাতুন্নেসা মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করালেন প্রধানমন্ত্রী
আমাদের বিশেষ সংবাদদাতা জানান, গাজীপুরের কাশিমপুরের তেতুউবাড়িতে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার বিকেলে হাসপাতালে গেলে প্রধানমন্ত্রীকে হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জয়তুন বিনতে সোলায়মান, ডিরেক্টর আরিফ মাহমুদ ও নার্সিং ডিরেক্টর নুরি লিজা স্বাগত জানান। এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে এ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম জানান, আগের বারের মতোই প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালের কাউন্টারে গিয়ে নিজ হাতে রেজিস্ট্রেশন ও চেক-আপের ফি প্রদান করেন। দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহর তত্ত্বাবধানে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য চেকআপ শুরু হয়। দেশের খ্যাতনামা ডাক্তাররা এখানে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী এ হাসপাতালটিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পছন্দ করেন। প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করেন।



 

Show all comments
  • Rahman ২৪ মার্চ, ২০১৬, ১০:৪১ এএম says : 1
    ভারত ছাড়া অন্য দেশের মাইল ফলক কই?তারে ছাড়া আর নাই? সুবিদা কে পাইতেছে আওয়ামি লীগ না ভারত?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দু’দেশের সম্পর্কে আরেকটি মাইলফলক প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ