পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1720349760](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৈধতা লাভের সুযোগ শেষ হচ্ছে আজ : ব্যাপক হারে ধরপাকড় শুরু হবে
শামসুল ইসলাম : মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের রি-হিয়্যারিং কর্মসূচির আওতায় নিবন্ধন কার্যক্রম আজ রোববার শেষ হচ্ছে। অবৈধ অভিবাসী কর্মীদের বৈধকরণের নিবন্ধন কার্যক্রমের সময়সীম আর বাড়াবে না মালয়েশিয়া সরকার। আজকের মধ্যেই বাংলাদেশিসহ অবৈধভাবে কর্মরত বিদেশিদের বৈধতার জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে এ কর্মসূচির আওতায় ৫ লক্ষাধিক অবৈধ বাংলাদেশী কর্মী নিবন্ধন কার্যক্রম সর্ম্পন্ন করেছে। মালয়েশিয়া থেকে একাধিক সূত্র এতথ্য জানিয়েছে। দেশটিতে ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কয়েকটি ক্রাইটেরিয়ার মাধ্যমে বৈধকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথমে রি-হিয়্যারিং এবং পরবর্তীতে এর সঙ্গে (যাদের কোনো কাগজপত্র নেই) যুক্ত হয় ই-কার্ড প্রোগ্রাম। ই-কার্ড এর প্রক্রিয়া শুরু চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি আর শেষ হয় ৩০ জুন।
নিবন্ধিতদের মধ্যে নাম ও বয়স জটিলতায় কমপক্ষে ৫৫ হাজার কর্মী ভিসা পাননি। তারা এ জটিলতা নিরসনের সুযোগ পাবেন, নাকি দেশে ফিরতে হবে তা এখনও নিশ্চিত নয় । তবে নিবন্ধিত কর্মীদের ভিসাসহ বৈধতার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নিবন্ধন শেষ হওয়ার পর পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে তাদের ভিসাসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুযোগ দিয়েছে দেশটির ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার রাতে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনার মো: শহীদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
যারা ই-কার্ডের আওতায় নিবন্ধিত হয়েছে তাদেরকে রি-হিয়্যারিং এর মাধ্যমে আগামী বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বৈধ হতে হবে এবং রি-হিয়্যারিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে যারা নিবন্ধিত হয়েছেন এবং যারা এখনও নিবন্ধন করেননি তাদের দ্রুত মাই-ইজি, ভুক্তিমেঘা ও ইমান এ তিন কোম্পানির মাধ্যমে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈধতার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দেশটির অভিবাসন বিভাগের পাশাপাশি বাংলাদেশ হাই কমিশন কর্তৃপক্ষ বারবার তাগিদ দিয়ে আসছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় প্রচুর বিদেশি কর্মী বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় কাজ করছেন। দেশটিতে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ ইন্দোনেশিয়ার, ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ নেপালের, ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ বাংলাদেশের, ৬ দশমিক ৯ শতাংশ মিয়ানমারের, ভারতের ৫ দশমিক ১ শতাংশ, ফিলিপাইনের ৩ দশমিক ১ শতাংশ, ২ দশমিক ৫ শতাংশ পাকিস্তানের এবং থাইল্যান্ডের রয়েছে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যান্য দেশের ৪ শতাংশ কর্মী কাজ করছে মালয়েশিয়ায়। যারা আকাশ পথে দেশটির ইমিগ্রেশন পার হয়ে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর অবৈধ হয়েছে এবং ৬ মাস অতিবাহিত হয়েছে কেবলমাত্র তারাই এ কর্মসূচির আওতায় বৈধ হতে পারবে। এ ছাড়া যারা অবৈধভাবে সাগরপথে দেশটিতে প্রবেশ করেছেন তাদের এ সুযোগের মধ্যে রাখা হয়নি। তাদের জন্য চালু ছিল ই-কার্ড (এনফোর্সমেন্ট কার্ড) প্রোগ্রাম। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ দেশটিতে অবৈধ অভিবাসী কর্মীদের ধরপাকড় অব্যাহত রেখেছে। মালয়েশিয়ায় রি-হিয়্যারিং কর্মসূচির আওতার বাইরে থেকে যাওয়া কোনো অভিবাসী কর্মী ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে তার ১০ হাজার রিংগিত জরিমানাসহ এক বছর জেল হতে পারে। সচেতনতার অভাব, প্রতারণার শিকারসহ নানা কারণে এখনো প্রায় ২ লাখ অবৈধ বাংলাদেশী কর্মী রি-হিয়্যারিং কর্মসূচির’ বাইরে রয়েছে। মালয়েশিয়া থেকে একাধিক সূত্র এতথ্য জানিয়েছে। এরপরও থামছে না ট্যুরিস্ট ও ভিজিট ভিসার নামে দেশটিতে পাড়ি জমানোর সংখ্যা। স¤প্রতি ‘বাংলাদেশ নাইটস’ নাম দিয়ে পরিকল্পিতভাবে আদম পাচারের অভিযোগে চলচ্চিত্র নির্মাতা অনন্য মামুনকে গ্রেফতার করেছে মালয়েশিয়া পুলিশ। এ ঘটনার পর দেশটির সব বিমান বন্দরে ইমিগ্রেশন বিভাগ কড়া নজরদারি আরোপ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া মানব পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতারে মাঠে রয়েছে দেশটির গোয়েন্দা পুলিশ। এমন পরিস্থিতিতে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেখানে বৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেছেন জাতীয় শ্রমিক লীগ মালয়েশিয়া শাখার সভাপতি নাজমুল ইসলাম বাবুল ও সহ-সভাপতি শাহ আলম হাওলাদা। জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতৃদ্বয় বলেন, দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে হাজার হাজার অবৈধ বাংলাদেশী রি-হিয়্যারিং কর্মসূচির বাইরে থেকে যাচ্ছে। এসব দালাল চক্রের বিরুদ্ধে হাই কমিশনকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। সম্প্রতি সরকারি সফরে গিয়ে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর বিমান বন্দরে হেনস্থার শিকার হয়েছেন একাধিক যুগ্ন-সচিবসহ ১২জন কর্মকর্তা। এছাড়া কুয়ালালামপুরসহ দেশটির কোনো না কোনো এলাকায় প্রায়ই পুলিশি অভিযানে বাংলাদেশিসহ অবৈধ বিদেশিরা ধরা পড়ছে। পরে তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮শ’ বাংলাদেশি কর্মী বিভিন্ন ক্যাম্পে আটক রয়েছেন বলে জানা গেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আটকৃতরা টিকিটের টাকা ও হাইকমিশন থেকে আউট পাস সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হলে তাদের সেখান থেকে পাঠানো হচ্ছে সেন্ট্রাল জেলে।
বিএনপি মালয়েশিয়া শাখা’র (একাংশের) সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সালহ উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, সচেতনতার অভাব এবং মধ্যস্বত্ব্যভোগি দালালদের প্রতারণার শিকার হয়ে বহু অসহায় অবৈধ বাংলাদেশী কর্মী বৈধকরণের আওতায় এখনো নিবন্ধিত হওয়ার সুযোগ পায়নি। প্রতারণার শিকার হাজার হাজার অবৈধ বাংলাদেশী কর্মীর রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। আতঙ্কিত এসব অবৈধ কর্মীরা বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠাতে পারছে না। এক প্রশ্নের জবাবে কাজী সালাহ উদ্দিন বলেন, রি-হিয়্যারিং কর্মসূচির বাইরে থেকে যাওয়া লাখ লাখ কর্মীদের বৈধকরণের সময়সীমা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের স্বার্থে মালয়েশিয়ায় দালালদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবী জানান। আওয়ামী লীগ মালয়েশিয়া শাখার আহবায়ক রেজাউল করিম রেজা ও যুগ্ন আহবায়ক রাশেদ বাদল বলেন, দালাল চক্রের মাধ্যমে টাকা দিয়ে অবৈধ প্রচুর বাংলাদেশী প্রতারণার শিকার হয়ে রি-হিয়্যারিং কর্মসূচির বাইরে রয়েছে। মধ্যস্বত্ব্যভোগি দালালদের বিরুদ্ধে হাই কমিশন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় অসহায় অবৈধ কর্মীরা অহরহ প্রতারণার শিকার হচ্ছে। অনেকে এক বছরের অস্থায়ী কার্ড পেয়ে বৈধ করণের কার্যক্রম থেকে দূরে রয়েছে। নেতৃদ্বয় মালয়েশিয়ায় সাধারণ ক্ষমার (রি-হিয়্যারিং )কর্মসূচির আওতায় বৈধতা লাভের জন্য আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।