পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যুদ্ধ, মারামারি, রক্তপাত, গ্রেফতার, হত্যা, বিরোধ আর কতদিন? এই প্রতিহিংসার রাজনীতি করে আমাদের লাভ কী হচ্ছে? এর অবসান হতে হবে। দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে মৌলিক পরিবর্তন না আনতে পারলে দেশের স্বাধীনতার সফলতা আসবে না। আমাদের নেত্রী যে ভিশন-২০৩০ রূপরেখা দিয়েছেন, তাতে মৌলিক পরিবর্তনের কথা বলেছেন।
শরিক দল জাগপার অঙ্গসংগঠন যুব জাগপার আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
২৪ মার্চ ‘কালো দিবস’ উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। এ দিনে সামরিক ফরমান জারি করে অসংখ্য ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বহুদলীয় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। কেড়ে নেয়া হয়েছিল মানুষের স্বাধীনতা, বাক, ব্যক্তি, বিবেক, মুদ্রণ ও সমাবেশের স্বাধীনতাকে।
তিনি বলেন, যেকোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকারকে জোরালোভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। কিন্তু ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চের এই দিনটিতে স্বৈরাচার এরশাদ অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে ইতিহাসের নির্লজ্জ স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে। এরশাদ কেবলমাত্র ক্ষমতা দখল করে ক্ষান্ত থাকেননি, বরং জনগণের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে দীর্ঘ ৯ বছর দেশবাসীকে এক চরম বিভীষিকাময় দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে নিক্ষেপ করেছিল।
১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত জাতির জীবনে এক কলঙ্কময় অধ্যায় রচিত হয়েছিলÑ এ মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, নৈতিক রাজনৈতিক কর্মকা-, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, সীমাহীন দুর্নীতিই স্বৈরাচারী শাসনের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়ায়। সেই স্বৈরশাসকই অভিন্ন বৈশিষ্ট্যের বর্তমান দুর্বিনীত শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে আঁতাত করে পুনরায় বহুমাত্রিক গণতন্ত্রের পথচলাকে ধুলোয় মিশিয়ে দেশের মানুষকে খাঁচায় বন্দী করে রাখতে চাচ্ছে।
যুব জাগপার আলোচনা সভা
পুরানা পল্টনে ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে যুব জাগপার উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার সামনে তৎকালীন ছাত্রনেতা শফিউল আলম প্রধানের স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মির্জা ফখরুল।
এ সভায় তিনি বলেন, আজকেও পত্রিকায় দেখলাম সারাদেশের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে তুমুল সহিংসতা হয়েছে। এই নির্বাচনের মতো অতীতে পৌরসভা, উপজেলা নির্বাচনগুলোতেও একই ঘটনা ঘটেছে। আজ কোথাও মানুষ শান্তিতে নেই- সেখানে নির্বাচনে সহিংসতা, সেখানে বীভৎসতা, সেখানেই মৃত্যু, হত্যা। তারপরও প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, খুব সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। তার এই বক্তব্যের সাথে বাস্তবতার মিল নেই।
নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনির বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, সরকারি দলের একজন নেত্রী যিনি আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি বলেছেন, এত ভালো নির্বাচন আগে কখনো হয়নি। এই যদি অবস্থা হয়, এই যদি চিত্র হয়, তাহলে দেশের মানুষ কার কাছে যাবে? কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
গত মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন জেলার ৭১২টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ হয়। ভোটের সময় কয়েকটি জেলায় সংঘর্ষে অনেকে আহত হন। তবে রাতে ভোট গণনার সময় পাঁচ জেলায় সহিংসতায় ১১ জন নিহত হন।
বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থ লোপাটের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকারের আমলে টাকা চরমভাবে হরিলুট হয়েছে। বাকি ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, সেই ব্যাংকেরও টাকা লোপাট হয়েছে। ওই ঘটনার দুই দিন যেতে না যেতেই জনতা ব্যাংক থেকে আবার টাকা লুট হয়েছে। তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে? সেই পূঁজিবাজার লুট করা, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ সব হরিলুট হচ্ছে। আজ সব জায়গায় যেন বর্গী আসছে বাংলাদেশে। একটা স্লোগান উঠেছে, যা কিছু পারো, অতি দ্রুত লুট করে নিয়ে যাও, লুট করে নিয়ে গিয়ে বিদেশে পাচার করো, বিদেশে বাড়ি-ঘর তৈরি করো।
২০ দলীয় জোট সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক দেশ গড়ে তুলতে হলে, দেশে পরিবর্তন আনতে হলে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমাদের ২০ দলীয় জোট জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করেছে। আমাদের দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলো সম্পৃক্ত করতে হবে। আমরা এদেশের সকল নেতা, রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি সকলকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে চাই।
সরকার দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো ‘ধ্বংস করে ফেলেছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই সরকার আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামো একে একে সব ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে। সংসদকে ধ্বংস করেছে। যে সংসদ গণতন্ত্রের মূল চাবিকাঠি সেটাও নেই। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য সত্যিকার অর্থে একটা নিরপেক্ষ প্রশাসন দরকার, সেই প্রশাসন দলীয় করে ফেলা হয়েছে। কোনো ইনস্টিটিউশন আর অবশিষ্ট নেই।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে খালেদা জিয়ার উপস্থাপিত ‘ভিশন-২০৩০’-এর কথা তুলে ধরে ফখরুল ইসলাম বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে মৌলিক পরিবর্তন না আনতে পারলে দেশের স্বাধীনতার সফলতা আসবে না। আমাদের নেত্রী যে ভিশন-২০৩০ রূপরেখা দিয়েছেন, তাতে মৌলিক পরিবর্তনের কথা বলেছেন।
যুব জাগপার সভাপতি ফাইজুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, এনডিপির সভাপতি খন্দকার গোলাম মূর্তজা, এনপিপির সভাপতি ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার লুৎফর রহমান, সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন বাবুল, যুব জাগপার সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদউদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।