পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী নয় বরং এ দুটি একে অপরের পরিপূরক ইসলামের কথা, স্বাধীনতা ঘোষণা এবং স্বাধীন সনদেও উল্লেখ আছে। বর্তমান সরকারি দলের পোস্টার লিফলেটেও আল্লাহর উপর আস্থা বিশ্বাস-এর কথা উল্লেখ আছে নির্বাচনী ইশতেহারে আছে ইসলামবিরোধী কোনো আইন পাস করা হবে না। সুতরাং রাষ্ট্রধর্ম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে ও চক্রান্ত করছে তাদেরকে এক বিন্দুও ছাড় দেওয়া হবে না।
খেলাফত আন্দোলন
মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশকে স্পেনের মতো বিধর্মী রাষ্ট্রে পরিণত করতে একটি মহল দীর্ঘদিন যাবৎ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ঐ ষড়যন্ত্রকারী মহলটি সংবিধান থেকে আল্লাহর নাম মুছে দেওয়া, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অবমাননা, কোরআনবিরোধী নারী নীতিমালাসহ একের পর এক জঘণ্য ষড়যন্ত্রে তারা সক্রিয়। এখন বাকিটুকু যা রয়েছে তাও বাদ দিতে তারা উঠে পরে লেগেছে। এদেশে কার্যত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম না থাকলেও ইসলাম শব্দটুকুও তারা সহ্য করতে পারছে না। যারা ইসলাম, মুসলমান, মসজিদ, মাদরাসা সহ্য করতে পারে না, শতকরা ৯২ ভাগ মুসলিম দেশে তাদের থাকার কোনো অধিকার নেই। তিনি দলমত-নির্বিশেষে সকল মুসলমান, আলেম-উলামাদের ঐক্যবদ্ধভাবে ইসলামের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।
আজ বুধবার বিকেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে শাহ্ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর এসব কথা বলেন। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের নায়েবে আমির মাওলানা আবু জাফর কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, শাহ্ সূফী আবদুল হান্নান আল হাদী, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ আশরাফ, মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজী, আলহাজ আজম খান, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি সুলতান মহিউদ্দীন, মাওলানা আবুল কাসেম কাসেমী প্রমুখ।
মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সাংবিধানিক, এর বিরোধীতা বাংলাদেশের সংবিধান পরিপন্থী ও রাষ্ট্রদ্রোহীতার শামিল। যারা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দিতে চায়, তারা বাংলাদেশের দুশমন, স্বাধীনতা বিরোধী, ইসলাম ও মুসলমানদের দুশমন। এদেশের মুসলমানরা প্রয়োজনে বুকের তাজা রক্ত দিবে, শহীদ হবে কিন্তু সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল হতে দেবে না।
ইসলামী নেতৃবৃন্দ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম কখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী নয়, বরং এ দুটি একে অপরের পরিপূরক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার সনদেও ইসলামের কথা বলা আছে। মুজিব নগরের স্বাধীনতা ঘোষণাতেও বলা আছে ‘সামাজিক ন্যায়বিচার, সাম্য ও মানবিক মূল্যবোধ’ এ তিনটিই ইসলামের কথা। এ তিনটি বিষয়ের দ্বারা রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের নির্দেশকেই বুঝানো হয়েছে। ইসলামী বুদ্ধিজীবী ফ্রন্টের আহ্বায়ক ও ঢাকাস্থ টাঙ্গাইল জেলা সমিতির চেয়ারম্যান শাহ্ সূফী ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আব্দুল হান্নান আল হাদী, আওয়ামী ওলামা লীগের নির্বাহী সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, ইসলামী ঐক্যজোট একাংশের চেয়ারম্যান মাওলানা মারুদুর রহমান বিক্রমপুরী আজ প্রদত্ত এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন। তারা বলেন, মুজিবনগরের স্বাধীনতা ঘোষণাতেও সামাজিক ন্যায়বিচার সাম্য ও মানবিক মূল্যবোধের কথা বলা আছে। একথাগুলোর দ্বারা এদেশের মুসলমানদের রাষ্ট্রধর্মের নির্দেশকেই বুঝানো হয়েছে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারসমূহেও কুরআন ও সুন্নাহবিরোধী আইন করবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং আওয়ামী ঘরনার নাস্তিক ও হিন্দু নেতৃবৃন্দের বক্তব্য রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী তা সঠিক নয়। মূলত কাউকে খুশি করতে তারা এসব মিথ্যাচার করে চলেছে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামের প্রচার প্রসারের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, কাকরাইলের তাবলীগি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন, ঘোড়র্দৌড়-এর নামে জুয়া নিষিদ্ধ করেছেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে মদ পরিবেশ নিষিদ্ধ করেছেন, টঙ্গিতে ইজতেমার মাঠ বরাদ্দ দিয়েছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরই অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে একক সিদ্ধান্তে ওআইসি ইসলামি কন্ফারেন্সে যোগদান করেন। তার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম সন্নিবেশিত করেছেন। সুতরাং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী নয় বরং একে অপরের পরিপূরক। তাই যারা রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী বলে সংবিধান থেকে তা বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্রে মাঠে নেমেছেন তাদেরকে কিন্তু এক বিন্দু পরিমাণও ছাড় দেয়া হবে না। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখতে যা যা দরকার ইসলামী জনতা তাই করবে।
ইসলামী ছাত্রসমাজ
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসউদ খান বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের উপর আঘাত অসলে তাওহিদী ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে প্রতিহত করবে। আজ বিকাল ৩টায় ৫১, ৫১/এ, পুরানা পল্টনস্থ আতহার আলী মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে যাত্রাবাড়ী থানা দায়িত্বশীলদের এক সভায় তিনি একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলামকে নিয়ে যে চক্রান্ত চলছে তা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এতে আরও বক্তব্য রাখেন, মো. রইছ উদ্দিন, মো. মাহবুবুর রহমান, আ. গণি, মো. ইলিয়াছ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।