Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বাড়বে কাজের গতি - বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের কাজের মূল্যায়ন সুপ্রিম কোর্ট করবে

প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এম এ মালেক : বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের নতুন করে কাজের মূল্যায়ন করতে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। ইতোমধ্যে বিচারিক কাজের যথাযথ মূল্যায়ন এবং সাফল্য নির্ধারণ শীর্ষক কর্মশালার ধারণাপত্রের খড়সা প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী পহেলা এপ্রিল জুডিশিয়ারি সার্ভিসে কর্মরত কর্মকর্তাদের কর্মশালার ধারণাপত্রটি চূড়ান্ত করা হবে। নতুন করে কাজের মূল্যায়নে বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তারা পদোন্নতিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও পাবেন।
এদিকে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিচার বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তারা। তাদের মতে, এতে করে কর্মকর্তারা কাজের প্রতি আরো আগ্রহ পাবেন, অপরদিকে আদালতের মামলার জটসহ বিচারকাজ গতিশীল হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, প্রধান বিচারপতির একান্ত প্রচেষ্টায় এ উদ্যোগ চালু হতে যাচ্ছে। পুরানো নিয়মটি আধুনিকায়ন করে এটা চালু করা হচ্ছে। কর্মশালায় বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের মতামত নেয়া হবে। এরপর বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন প্রধান বিচারপতি। তিনি আরো বলেন, পার্শ¦বর্তী দেশ ভারতে আরো আগেই এ নিয়ম চালু রয়েছে। আমাদের দেশে এটা চালু হলে বিচারকাজে কর্মকর্তাদের মাঝে কাজে নতুন অনুপ্রেরণা সৃষ্টি হবে। এছাড়া আদালতের দীর্ঘদিনের অনেক জটিল জটিল মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা বাড়বে। আদালত সূত্রে জানা যায়, বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের মামলা নিষ্পত্তি ও প্রশাসনিক কাজের মূল্যায়নে মানদ- নির্ধারণে ১৯৮৮ সালে একটি নীতিমালা তৈরি করে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। এতে করে গড়ে একটি পয়েন্ট ধরে মানদ- নির্ধারণ করা হতো, যাতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা, সময় ব্যয়, জটিলতা, সাক্ষীর সংখ্যা, মামলা কীভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে এবং আইনগত বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য ব্যয়িত সময় ইত্যাদি বিষয় পর্যবেক্ষণ করে কাজের মূল্যায়ন করে বার্ষিক প্রতিবেদন দেয়া হতো। বিচারকালীন সময়ের যথার্থ ব্যবহার না করেও বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে প্রত্যাশিত মন্তব্য লাভ করেছে। ফলে অনেকের কাজের প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হয়। সার্বিকভাবে পুরনো মানদ-টি তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। এছাড়া প্রতিদিন মামলা যেমন বাড়ছে, তেমনিভাবে বিচার অঙ্গনের কাজের পরিধি বাড়ছে। বিচারকাজের জনবলও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের নিয়মটিতে মানদ- নির্ধারণ জটিল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় বিচারকাজ আরো গতিশীল করতে এবং নিয়োজিত কর্মকর্তাদের মানদ- নির্ধারণে বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দায়িত্ব গ্রহণের পর তার একান্ত উদ্যোগে নতুন করে কাজের মূল্যায়ন চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এ নতুন নিয়ম বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে ইউএসএআইডি। আগামী ১ ও ২ এপ্রিল সাভারের খাগনে অবস্থিত ব্র্যাক সেন্টারে ফর ডেভেলমেন্ট ম্যানেজমেন্ট ওই কর্মশালার আয়োজন করেছে। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের। দুই দিনব্যাপী কর্মশালার প্রথম দিনে কর্মশালার উদ্বোধন করবেন প্রধান বিচারপতি এবং ২য় দিনে উদ্বোধন করবেন আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা। সারা দেশের অধস্তন আদালতের বাছাইকৃত কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। কর্মশালায় কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে নতুন নিয়মটি। এতে করে তিনটি পয়েন্টে ভাগ করে খসড়াও প্রস্তুত করা হয়েছে। তারা কাজের মানদ-ে সর্বোচ্চ পয়েন্ট (অসাধারণ) পেলে পদোন্নতি পাবেন। কাজের প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি মামলা বা কাজের বিপরীতে পয়েন্ট বা ক্রেডিট বা গ্রেড নির্ধারণ করে মাসিক, ত্রৈমাসিক, ষাণ¥াষিক ও বার্ষিক সর্বনি¤œ সীমা নির্ধারণের কথা ভাবা হচ্ছে। নতুন নিয়ম চালু হলে পুরনো মামলা ও জটিল জটিল মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা বাড়বে। কারণ পুরনো মামলার নিষ্পত্তি হলে পয়েন্ট অনেক বেশি পাবে। এদিকে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিচার বিভাগের কর্মরত কর্মকর্তারা। তাদের মতে, এটা আরো আগেই করা উচিত ছিল। এখন অনেক সময় কাজের মূল্যায়ন না করে অন্যভাবে পদোন্নতি দেয়া হয়, যেটি খুবই খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। এছাড়া কাজের মূল্যায়ন না হলে কাজের প্রতি আগ্রহ কম থাকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাড়বে কাজের গতি - বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের কাজের মূল্যায়ন সুপ্রিম কোর্ট করবে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ