Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই

প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: ভোজ্যতেলের দাম কমানোর ঘোষণা দিলেও নির্ধারিত দিন শনিবার রাজধানীর কোনও বাজারেই সয়াবিন তেলের দাম কম দেখা যায়নি। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তেলের দাম নিয়ে ত্রেুতাদের কোন কথা বলার সুযোগ নেই। কেন কম নিবেন না এমন কথা বলতেই দোকান মালিকরা সরাসরি উত্তরে জানিয়েছে দিচ্ছে, উপর থেকে কম দামে না পেলে আমরা কিভাবে কমে দেব।
গতকাল শনিবার সকাল থেকে খোলা বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৮৮ থেকে ৯৩ টাকা।  বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ৯৫ টাকা থেকে ১০২ টাকা দরে। যা বিক্রি হওয়ার কথা ছিল ৯০ টাকা থেকে ৯৭ টাকা ধরে। আর ৫ লিটারের বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে আগের মূল্য ৪৫০ টাকা থেকে ৪৮০ টাকা দরে।
জানতে চাইলে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, এগুলো হচ্ছে মিলমালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের ‘ভোজবাজি’। তারা সরকারকে শান্ত রাখতে এবং সরকারের কাছ থেকে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিতে এ ধরনের ঘোষণা দিয়েই খালাস। দাম আর সেভাবে কমান না।
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদের উপস্থিতিতে ব্যবসায়ীক নেতারা গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য পরামর্শক কমিটির সভায় ঘোষণা দিয়েছিলেন, শনিবার থেকে দেশের সর্বত্র প্রতিলিটার সয়াবিনে ৫ টাকা করে কমবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজধানী পাইকারি ব্যবসায়ী সমিতির এক নেতা বলেছেন, শনিবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নে অন্তত আরও সপ্তাহখানেক সময় তাদের দিতে হবে। মিলগেটে দাম কমলেও সেই তেল এনে পাইকারি ও পরবর্তী সময়ে খুচরা ও ভোক্তা পর্যায়ে এ সুবিধা দিতে কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উৎপাদন খরচের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। এ কাজটি করছেন আমদানিকারক, উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম অতীতের যেকোনও সময়ের তুলনায় কম। সেই হিসেবে দেশের কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদিত পণ্যমূল্য নির্ধারণ করেননি। খুচরা পর্যায়ে ভোজ্যতেলের দাম তারা কমিয়েছেন খুব সামান্যই। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমার সুফল ব্যবসায়ীরা পেলেও ক্রেতারা পাননি।
বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম পাঁচ বছরের মধ্যে এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিনের দাম ছিল ৬০২ ডলার। একই দিন তা সর্বনিম্ন ৫৯৯ ডলারেও বিক্রি হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, দেশে আমদানির পর এগুলো পরিশোধন করে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া, প্রচার ও ব্যবসায়ীদের মুনাফাসহ প্রতি লিটারে খরচ পড়ে ৬০ সর্বোচ্চ ৬২ টাকা। কিন্তু খুচরাবাজারে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা দরে। বোতলজাত সয়াবিন এখনও বিক্রি হচ্ছে ৯৮ থেকে ১০২ টাকা লিটার দরে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম সবচেয়ে বেশি উঠেছিল। ওই সময় প্রতিটন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১ হাজার ৪১৪ ডলার। ওই বছর দেশের বাজারগুলোয় প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা দরে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ৫০ শতাংশ কমলেও দেশীয় বাজারে কমেছে মাত্র ৯ শতাংশ। এখন মিলমালিকদের ঘোষণা অনুযায়ী লিটার প্রতি ৫ টাকা কমলে এ হার হবে সর্বোচ্চ ১৪ শতাংশ।
২০১৫ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ৫ দশমিক ৭২ শতাংশ, আগস্টে সামান্য বেড়ে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে কমে ৬ দশমিক ১২ শতাংশ, অক্টোবরে কমে ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ, নভেম্বরে কমেছে ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ