পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শিক্ষামন্ত্রীর ঘুষ নেওয়ার কথাতেই প্রমাণ হয় যে বর্তমান সরকার আত্মস্বীকৃত চোর ও দুর্নীতিবাজ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সহনীয় মাত্রায় ঘুষ নিতে বলে দেশের শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ একটি ভয়ঙ্কর বার্তা পাঠিয়েছেন। দেশের শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য যদি এটাই হয়, তাহলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সততা-নৈতিকতার পাঠ কোথা থেকে নেবে? গতকাল (সোমবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন মন্ত্রীরা দুর্নীতি করে, শুধু যে অফিসার চোর তাই না মন্ত্রীরাও চোর, আমিও চোর, তাই ঘুষ না নিতে বলার সাহস আমার নাই। এসময় শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সহনীয় মাত্রায় ঘুষ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা ঘুষ খাবেন, তবে সহনশীল হইয়া খাবেন, সহনশীল হইয়া মানে এই নয় যে আপনারা ঘুষ খাইয়েন না, এটা অর্থহীন কথা হবে।’ দেশের শিক্ষামন্ত্রীর যদি এই বক্তব্য হয়, তাহলে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা সততা, নৈতিকতার পাঠ কোথায় নেবে? শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে এটাই ফুটে উঠছে যে- কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা, তোমরা নীতি, নৈতিকতা, আদর্শ এবং ন্যায়বোধের বিবেক শাসিত উন্নত মানুষ হওয়ার বদলে সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতির পাঠ নিতে শেখো। তাহলেই তোমাদের সাফল্য আসবে।
তিনি বলেন, তাঁর (শিক্ষামন্ত্রীর) কথায় মনে হয়-সৃজনশীল, সৌম্য, সুশিক্ষিত মানুষ হওয়ার বদলে ছাত্ররা বখাটে হোক। তাঁর এই বক্তব্যে আরো প্রতীয়মান হয় যে, তিনি চাচ্ছেন-ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জ্ঞানদীপ্ত প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আদর্শ জীবন গঠনে উদ্বুদ্ধ না হয়ে বরং দুর্নীতি, দখলবাজী, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাস, দলবাজী, দুর্বৃত্তপনা, ইভটিজিং, মাদকসহ লুটপাট করার অর্থবিত্তের কাছে নতি স্বীকার করতে শিখুক। শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যে জাতির হৃদয়ের স্পন্দনকে থামিয়ে দেয়ার সামিল। দেশে বিদ্যমান নৈরাজ্যকর অমানিষার মধ্যে তাঁর এই বক্তব্য দেশের জন্য আরো ভয়াবহ উদ্বেগ, ভয় ও বিপদের কারণ হতে পারে। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে প্রমাণিত হলো-বর্তমান সরকার আত্মস্বীকৃত চোর ও দুর্নীতিবাজ। দেশে যে জঙ্গলের রাজত্ব চলছে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে সেটিরই বহি:প্রকাশ
শিক্ষা ভবনে রোববার পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) কর্মকর্তাদের ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষমন্ত্রী বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, সব জায়গায় যে বলছি, অপচয়-দুর্নীতিতে আমরা কঠোর অবস্থান নেব এবং দুর্নীতির ক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স। এটা আমাদের বলতে হবে কিন্তু আমি ইডির (ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট) সভায় বলেছি, আপনারা দয়া করে ভালো কাজ করবেন। আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনার ঘুষ খাবেন, তবে সহনশীল হইয়্যা খাবেন। অসহনীয় হয়ে বলা যায়, আপনারা ঘুষ খাইয়েন না, এটা অবাস্তবিক কথা হবে। অবশ্য পরে নাহিদের দপ্তর থেকে জানানো হয়, মন্ত্রীর ‘খন্ডিত’ বক্তব্য প্রচার হওয়ায় ‘বিভ্রান্তি’ সৃষ্টি হয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়া জানাতে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেন, একজন মন্ত্রী যখন জাতির মেরুদন্ডটি নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনিই যখন অনৈতিক কথা বলেন, তখন রাষ্ট্র ও রাষ্ট্র কাঠামো আছে বলে আর মনে হয় না। সা¤প্রতিক সময়ে প্রায় সব পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, এই শিক্ষামন্ত্রীর আমলে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত, বসন্ত, হেমন্তে প্রশ্নপত্র গোপন থাকতে চায় না। বন্ধ দুয়ার ভেদ করে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই প্রশ্নপত্র বাজারে কেনা বেচা হয়। জড়বস্তু প্রশ্নপত্রে যেন প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে। এইজন্যই সে অর্গল ভেঙ্গে লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষামন্ত্রী নিজেদের লোকদেরকে এই কেনা বেচার সুযোগও করে দিয়েছেন সুকৌশলে। আওয়ামী সরকারের মন্ত্রীরা এক অভিনব কায়দা উদ্ভাবন করেছেন যেখানে প্রাইমারির প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে পিইসি, জেএসসি, জেডিসি, এসএসসি, এইচএসসি, বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা, চাকুরিতে নিয়োগ পরীক্ষা সবখানেই প্রশ্নপ্রত্র ফাঁস হয় লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে। এতো কিছুর পরও মিডিয়ার বদৌলতে এই প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারির সাথে যারা জড়িত তারা সরকারেরই মায়ামুগ্ধ ছাত্রলীগের সোনার সন্তানেরা। শিক্ষামন্ত্রীর কথায় মনে হচ্ছে, তিনিই এসব কেলেঙ্কারির উৎসাহদাতা। যে উদ্দেশ্য নিয়ে ১৪ ডিসেম্বর দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করেছিল হানাদার বাহিনী, সেই একই উদ্দেশ্য নিয়ে জাতিকে মেধাহীন করতে শিক্ষামন্ত্রী প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের জন্য অবিরাম গতিতে কাজ করে যাচ্ছেন।
সরকারই চেয়েছে চালের দাম কিছুটা বাড়ুক’- এমন বক্তব্যের জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতেরও সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে সরকারের চরম গণবিরোধী রূপ আবারও প্রকাশিত হল। জনগণের লুটপাটে উৎসাহিত হয়ে সরকার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে দ্বিধা করছে না। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের এ নীতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবুল কালাম সিদ্দিকী, মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।