দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
প্রশ্ন : দায়া করলে আল্লাহ খুশি হন?
উত্তর : আল্লাহ তা‘আলা মোমিন বান্দার সবচেয়ে আপনজন। তাঁর আপনজন কোনো কিছু প্রার্থণা করা মাত্রই তিনি কবুল করে নেন। মোমিন বান্দা আল্লাহকে ডাক দেয়ার সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলা সাড়া দিয়ে থাকেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে,‘আর আমার বান্দারা যখন আপনার নিকট আমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে, আমি নিকটেই আছি। আমি দোয়া কবুল করি, যখন সে আমার কাছে দোয়া করে।’ (সূরা বাকারা:১৮৬)। ‘আর তোমরা তোমাদের রবকে ডাক বিনীতভাবে ও নিরবে। নিশ্চয়ই তিনি সীমালংঘনকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সূরা আরাফ:৫৫)। আল্লাহ তা‘আলার নিকট চাইলে তিনি খুশি হন। আল্লাহর চেয়ে উত্তম দাতা ও সাহায্যকারী মোমিন বান্দার জন্য দ্বিতীয় আর কেউ নেই। তিনিই একমাত্র বান্দার সকল অভাব অভিযোগ পূরণ করতে পারেন। যারা আল্লাহর নিকট চায়না তাদের প্রতি তিনি অসন্তোষ্ট হন। হযরত আবদুল্লাহ (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা) এরশাদ করেছেন,‘তোমরা আল্লাহ তা‘আলার নিকট তাঁর দয়া ও রহমত চাও। কেননা আল্লাহ তা‘আলা চাইলে খুশি হন।’(তিরমিযি:৩৫৭১)।
আল্লাহ তা‘আলা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী। তিনিই অসহায় মানুষের সহায়। বিপদ আপদ থেকে উদ্ধারকারী। কোরআনে এরশাদ হয়েছে,‘কে আছে অসহায় ও বিপন্নের ডাকে সাড়া দেয় যখন সে ডাকে এবং কষ্ট ও বিপদ দূরীভ‚ত করে দেয়?’ (সূরা নমল:৬২)। ‘তোমরা ভয় এবং আশা নিয়ে আল্লাহকে ডাক । নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’(সূরা আরাফ:৫৬)। হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা) এরশাদ করেছেন,‘ দোয়া মোমিনের হাতিয়ার, দ্বীনের স্তম্ভ এবং আসমান এবং জমিনের নূর।’ (মু. হাদিস:৪৬৫)।
যারা আল্লাহকে ডাকে কিংবা আল্লাহর নিকট কিছু চায়। আল্লাহ তাদের হাতকে কখনও খালি ফেরত দেন না। হযরত সালমান ফারসী (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা) এরশাদ করেছেন,‘ নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলার নিকট অনেকের লজ্জা ও আত্মমর্যাদা আছে। সুতরাং যখন মানুষ চাওয়ার জন্য তাঁর নিকট দুই হাত উত্তোলন করে, তখন তিনি সেই হাত দু’টিকে ব্যর্থ ও খালি ফেরত দিতে লজ্জা বোধ করেন।’ ( মুসলিম:৩২১)।
আল্লাহর নিকট চাওয়ার উত্তম পদ্ধতি হলো দোয়া করা। দোয়ার মাধ্যমে মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। হযরত আবু হোরায়রা হতে (রা) বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা) এরশাদ করেছেন,‘আল্লাহ তা‘আলার নিকট দোয়া অপেক্ষা কোনো জিনিসই অধিক ফযিলত ও সন্মানের নেই।’ (তিরমিযি:৩৩৭)। দোয়া করার পূর্বে করণীয় হলো; পাক পবিত্র হওয়া, হালাল খাওয়া, নিয়ত ঠিক করা, আদবের সাথে বসা, হারাম জিনিস বর্জন করা। দোয়া কবুলের বিশেষ মূহুর্ত হলো; জুমা‘আর রাত, আরাফাতের দিন, ইফতারের পূর্ব মূহুর্ত, বাইতুল্লাহ তাওয়াফের সময়, শেষ রাত্রে তাহাজ্জুদ নামাজের পর, শবে কদরের রাতে ইত্যাদি। যাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন; পিতা মাতা, শিক্ষক, মুসাফির, বুজুর্গ, মযলুম ব্যক্তি ইত্যাদি।
মানুষের যা কিছু প্রয়োজন তা আল্লাহর নিকটই চাইতে হবে। তবে একে অপরের নিকট দোয়া চাইতে কোনো নিষেধ নেই। হযরত আবু হোরায়রা (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা) এরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন- আমি আমার বান্দার সাথে তেমন ব্যবহার করি, আমার প্রতি সে যেমন ধারনা রাখে আর সে যখন আমাকে ডাকে তখন আমি তার সাথেই থাকি।’ (মুসলিম:৬৮২৯)। সুতরাং যারা দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহকে খুশি করতে পারবে । নি:সন্দেহে তারা পরোকালে সফলকাম হবে।
উত্তর দিচ্ছেন : ফিরোজ আহমাদ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।