পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানসম্মত এবং একটি মীমাংসিত বিষয়। সংবিধান সংশোধন কমিটির কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত নিজেও রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের কোনো পরিবর্তন করেননি। বিশ্বের ৬১ দেশে সংখ্যাগরিষ্টদের ধর্ম রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃত। তাই এ বিষয়ের রিট খারিজযোগ্য। এ বিষয়ে কোনো চক্রান্ত হলে গজব নেমে আসবে।
আইনজীবী পরিষদ
সংবিধান সমুন্নত সংগ্রামী আইনজীবী পরিষদের উদ্যোগে গতকাল বিকেলে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, এদেশ বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মুসলিম দেশ। এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান। এদেশের মুসলমানরা স্বভাবগতভাবেই ধর্মপ্রাণ ও ধর্মভীরু। যে দেশে ১০ লাখ মসজিদ রয়েছে। যেদেশে প্রতি জুমার জামাতে কোটি কোটি লোকের সমাগম হয়। সেদেশে সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের ধর্ম হিসেবে রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলামই থাকতে হবে। বর্তমানে বিশ্বের ৫৮টিরও অধিক দেশে সংখ্যাগরিষ্টদের ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, যারা বলে রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম নেই, ধর্ম হলো ব্যক্তির, এছাড়া রাষ্ট্রে একাধিক ধর্মাবলম্বিরা রয়েছে ফলে কোনো নির্দিষ্ট ধর্মকে প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। যদি তাই হয়, তাহলে একইভাবে রাষ্ট্রেরও কোনো ভাষা থাকতে পারে না। কারণ রাষ্ট্র কখনো কথা বলে না। কথা বলে ব্যক্তি। অথচ এদেশে চাকমা-মারমা-সাওতাল-বিহারিসহ বহু ভাষাভাষী লোক রয়েছে। তাই রাষ্ট্র ভাষা বাংলা কী বাদ দেওয়া হবে? যদি না দেওয়া হয় তাহলে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবেও ‘ইসলাম’ বাদ দেওয়া যেতে পারে না।
বক্তারা বলেন, পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী কমিটির কো-চেয়ারম্যান ছিল সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। যে সংখ্যালঘুদের নেতা ও প্রতিনিধি। তার নেতৃত্বেই সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী হয়েছে এবং পাস হয়েছে। সেই পঞ্চদশ সংশোধনীতেও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রয়েছে। সংখ্যালঘুদের নেতা ও প্রতিনিধি হিসেবে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ‘ইসলাম’ স্বীকার করে নেওয়ার পর এটা নিয়ে সংখ্যালঘুদের বিতর্ক থাকবে কেন?
বক্তারা বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে শুধু ইসলামকেই রাষ্ট্রধর্ম করা হয়নি বরং হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ধর্মকেও ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাহলে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে শুধু ইসলাম ধর্ম বাদ দেওয়ার জন্য রিট নবায়ন করা আবার অন্যান্য ধর্ম নিয়ে চুপ থাকার রহস্য কি?
বক্তারা বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের সময় মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যেখানে দুইজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর রাষ্ট্রধর্মের বিরোধিতাও মেনে নেননি। একটি মীমাংসিত বিষয় সেখানে নতুন করে রাষ্ট্রধর্ম ইস্যু তোলা কী করে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম, প্রধান আলোচক ছিলেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ, সম্পাদক- মাসিক আল বাইয়্যিনাত ও দৈনিক আল-ইহসান বিশেষ অতিথি ছিলেন এ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম এমপি, প্রফেসর ডক্টর আলহাজ এম.এম. আনোয়ার হোসেন, বিশিষ্ট আইনজীবী-বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, প্রিন্সিপাল-বঙ্গবন্ধু ল কলেজ, ফার্মাসিস্ট আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান, স্পেশালিস্ট- ব্যুরো ভ্যারিটাস (বাংলাদেশ), বাংলাদেশ প্রতিনিধি-ইসলামিক ক্রিসেন্ট অবজারভেশন প্রজেক্ট (ওঈঙচ), মুনসাইটিং কমিটি ওয়ার্ল্ড-ওয়াইড প্রমুখ।
সভায় আরও আলোচনা করেন, এডভোকেট হাসান শহীদ কামরুজ্জামান দুর্বার, ডক্টর মুহম্মদ ইউনুছ আলী আকন্দ ও এডভোকেট এস.এম শফিকুল ইসলাম।
হেফাজত ঢাকা মহানগর
এদেশে কোনো রাম-দাদাদের পরামর্শে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার চিন্তা করলে আল্লাহর গজব নেমে আসবে। এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সাড়ে ১৫ কোটি ঈমানদার মুসলমান ইসলাম-ঈমান রক্ষার দাবিতে গর্জে উঠবে। গতকাল হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর আহ্বায়ক আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে এক জরুরি সভায় তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, দেশে যখন সমস্যার কোনো অন্ত নেই, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই, দেশের সীমান্ত এলাকা বাংলাদেশিদের জন্য সংরক্ষিত নয়, গরিব দেশের অর্থ সংরক্ষণ ও অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রবিন্দু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ড ডিজিটাল পদ্ধতিতে শুধু অরক্ষিতই নয় বরং দেশি-বিদেশি অর্থ লুণ্ঠনকারী আইটি বিশেষজ্ঞ দুষ্ট চক্রের কঠিন বেড়াজালে আবদ্ধ। লুণ্ঠনকারীদের খুঁজে বের করা, লুণ্ঠিত অর্থ উদ্ধার করা এবং আগামীতে লুণ্ঠনের পথ চিরতরে বন্ধ করার কার্যকর যথাযথ কোনো সরকারি উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, ভারতীয় আইটি বিশেষজ্ঞ ব্যবসায়ী, দেশীয় আইটির উদ্ভাবকসহ এই সেক্টরের সকল রাগব-বোয়ালরা এই ব্যাংক লুণ্ঠনের সাথে জড়িত। নতুবা এই জঘণ্য ন্যক্কারজনক পুকুর চুরির ক্লু বের করতে এত গড়িমশি কেন? তা দেশবাসী জানতে চায়। উক্ত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন: হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর যুগ্ম আহ্বায়ক এড. মাওলানা আব্দুর রাকিব, মাওলানা আবুল কালাম, মাও. মোস্তফা আজাদ, মাও. আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাও. মাহফুজুল হক, ড. আহমদ আব্দুল কাদের, মাও. আব্দুর রব ইউসূফী, হাকীম আব্দুল করীম খান, মাও. ইমদাদুল ইসলাম, সদস্য সচিব মাও. জুনায়েদ আল-হাবীব, যুগ্ম সদস্য সচিব মাও. ফজলুল করীম কাসেমী, মাও. মঞ্জুরুল ইসলাম, মাও. শফীকউদ্দীন প্রমুখ।
কর্মসূচি : রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের সংবিধানে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখার দাবিতে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের উদ্যোগে আজ বুধবার বিকাল ৫টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। এতে খেলাফত আন্দোলনের আমির হাফেজ মাওলানা শাহ্ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর, কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।