পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী থেকে : সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার চক্রান্তের অভিযোগ এনে আগামী শুক্রবার সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে হেফাজত। শক্তি সঞ্চয় করে ফের মাঠে নামতে চাইছে হেফাজতে ইসলাম। পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে অরাজনৈতিক এ সংগঠনটি।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নাস্তিক ব্লগারদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে ১৩ দফা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে হেফাজতে ইসলাম জাতীয়ভাবে আলোচনায় আসে। ওই বছরের ৯ মার্চ সারা দেশের শীর্ষ আলেমদের নিয়ে হাটহাজারীতে সম্মেলন করে ১৩ দফা দাবির আন্দোলন শুরু করে হেফাজত। সেই ১৩ দফার অন্যতম ছিল সংবিধানে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাসের নীতি পুনঃস্থাপন, আল্লাহ, রাসূল (সা.)’র অবমাননার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করে আইন পাস এবং নাস্তিক ব্লগারদের গ্রেফতার করে শাস্তি প্রদান। সেই দাবিতে সারা দেশে সম্মেলন করে জনমত সৃষ্টি করে ৬ এপ্রিল ঢাকায় লংমার্চ করে শাপলা চত্বরে লাখ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটায় হেফাজত ইসলাম।
জানা যায়, নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনের পর এবার সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার চক্রান্তের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে চাইছে হেফাজত। এই আন্দোলনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সারা দেশে মিছিল-মিটিং সভা-সমাবেশ চলছে। নাস্তিক ও ব্লগারদের ফাঁসির দাবি নিয়ে হেফাজতে ইসলাম ও তৌহিদী জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ আহম্মদ শফির ডাকে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মিছিল-মিটিং ও আন্দোলন শুরু করে। ঢাকায় লংমার্চ এবং পরবর্তীতে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচিতে লাখো মানুষের ঢল নামে। তবে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশের উপর পুলিশি ক্র্যাকডাউনের পর মামলা-হামলায় জর্জরিত হয় হেফাজত। এর মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য দিয়েছে হেফাজত। সভা-সমাবেশও করেছে সীমিত আকারে। লালদীঘি ময়দানে দুইদিনব্যাপী ইসলামী মহাসম্মেলনও হয় হেফাজতের আয়োজনে।
জানা যায়, হেফাজতে ইসলাম ঝিমিয়ে পড়লেও বর্তমানে সংবিধান হতে রাষ্ট্রধর্ম বাদ দেয়ার চক্রান্তের বিরুদ্ধে তারা আবার সোচ্চার হচ্ছে। সংবিধান হতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিলে হেফাজতে ইসলামসহ সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা আবারও ফুঁসে উঠতে পারে। এরই অংশ হিসেবে গত শুক্রবার হাটহাজারীতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছিল। এই প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজতের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরী। তিনি সেদিন তার বক্তব্যে বলেছিলেন বাংলার জমিনে ৯২ ভাগ মুসলমান বসবাস করছে। এদেশ মুসলিম দেশ। মুসলিম দেশের সংবিধান হতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম কখনো কেউ বাদ দিতে পারবেনা। রাষ্ট্রধর্ম যে দিন সংবিধান হতে বাদ দেবে সে দিন তৌহিদী জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। আগামী ২৭ মার্চ এই রায় যদি ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে দেওয়া হয়, তাহলে ২৮ মার্চ সারা বাংলাদেশের প্রতিটি মসজিদ থেকে এক যোগে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। তারপর হরতালসহ কঠিন কর্মসূচি আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এই আন্দোলন সফল করতে দেশব্যাপী হেফাজতের কমিটি গঠনসহ হেফাজতের সহযোগী সংগঠনগুলো পাড়া, মহল্লায় কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে হেফাজত নেতারা চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ২৫ মার্চ সারা দেশে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ ব্যাপারে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক স¤পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, যদি ২৭ মার্চ সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়া হয়, তাহলে ২৮ মার্চ আমাদের আমীরের সাথে আলোচনা করে হরতালসহ অবরোধ-এর মতো কঠিন কর্মসূচি আসতে পারে বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে হেফজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মইউদ্দীন রুহি বলেন, ৯২% মুসলমানের দেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকলে সমস্যা কি? যদি না থাকে তাহলে পরের দিন আমরা আমাদের আমীরসহ সবার সাথে আলোচনা করে হরতাল অবরোধসহ কঠিন কমসূচি দিব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।