Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নিখোঁজ মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের লাশ মিলল নির্মাণাধীন ভবনে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাজধানীর শুক্রাবাদ এলাকা থেকে নিখোঁজ মেরিন প্রকৌশলী রফিকুল হাসান রিমনের (৪২) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর গত রোববার রাত দেড়টার দিকে একটি নির্মাণাধীন ১০তলা ভবনের নিচতলার বেজমেন্টে ঝুলন্ত অবস্থায় পুলিশ ওই প্রকৌশলীর লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ ধারণা করছে, কেউ তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ সেখানে ঝুলিয়ে রেখে গেছে। হয়তো পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটতে পারে বলেও ধারণা করছে পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধারের সময় তার নাক মুখ দিয়ে রক্ত পড়ার দাগ দেখা গেছে। নিহতের চোখ ফোলা, মুখে কালচে দাগ, মুখের ডান পাশে কানের দিকে আঘাত করে থেঁতলানো ও ডান হাত ভাঙ্গা অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়া তার বুকে ও পিঠে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রফিকুল হাসান রিমন নামের ওই ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে গত শনিবার ঢাকার নিউ মার্কেট থানায় একটি জিডি করেছিল তার পরিবার।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত রিমন উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর সড়কের ২ নম্বর বাড়িতে থাকতেন। স¤প্রতি রিমনের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তাদের পরিবারে দুই সন্তানও রয়েছে। বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকে তার স্ত্রী রাজধানীর ৬৮ সায়েন্স ল্যাবরেটরি রোডের একটি বাসায় থাকেন। এর আগে, নিহত রিমন তার বন্ধু টুটুল এক সাথে ১৫ শুক্রাবাদের ওই নির্মাণাধীন ভবনের একটি ফ্ল্যাট কিনেন। এ নিয়ে বন্ধু টুটুলের সাথেও দ্বন্ধ চলছিলো বলেও জানা যায়। ডিএমপি’র রমনা বিভাগের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনাটি আত্মহত্যা নয়, হত্যাকান্ড। ঘটনাস্থলে গিয়ে আত্মহত্যার করার কোনো কারণ পাওয়া যায়নি। তবে সব বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নিহত রিমনের পারিবারিক ঘনিষ্ঠ বন্ধু জসিম উদ্দিন মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, রিমন একজন মেরিন প্রকৌশলী ছিলেন। বছরের অধিকাংশ সময়ই তিনি বিদেশে গিয়ে জাহাজের কাজ করতেন। বেশ কিছুদিন তিনি চায়নায় ছিলেন। দেড় মাস ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন। ২০০৭ সালে তিনি কাকন নামের একটি মেয়েকে বিয়ে করেন। তাদের ৫ বছর বয়সী এক ছেলে ও ৩ বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে। রিমনের পরিবারের সাথে কাকনের পরিবারের বিরোধ ছিল। এজন্য রিমন ও কাকনের মধ্যে প্রায়ই মনমালিন্য লেগে থাকতো। এরই জের ধরে কাকন ডিভোর্স লেটার দেন রিমনকে। কিন্তু রিমন সেটি কয়েক মাস পরে গ্রহণ করেন। জসিম উদ্দিন আরো জানান, তাদের দুই সন্তান মায়ের কাছেই থাকতো। রিমন দেশে আসার পর কিছুদিনের জন্য সন্তানদের তার কাছে নিয়ে আসেন। গত ১৬ই ডিসেম্বর ছেলে মেয়েকে মায়ের কাছে দেয়ার জন্য রিমন বাসা থেকে বের হন। এক পর্যায়ে তিনি এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান মার্কেটের গলির কাকনদের বাসায় সন্তাদের পৌঁছে দেন। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ওই দিন সারা রাত রিমনের কোন খোঁজ পাওয়া না গেলে পরের দিন পরিবারের পক্ষ থেকে নিউমার্কেট থানায় একটি জিডি করা হয়। পরে ওই রাতেই রিমনের লাশ পাওয়া যায় শুক্রাবাদ এলাকায়। খবর পেয়ে তার পরিবারের লোকজন এসে লাশ সনাক্ত করেন। জসিম উদ্দিন আরো বলেন, রিমন কিছুদিন আগেও আমাকে বলেছে যে, ভুল জায়গায় সংসার করে তার জীবনটা নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া সে তার শ্বশুর বাড়ীর সাথে তাদের বিরোধের কথাটাও অনেকদিন ধরে বলছিল। নিউ মার্কেট থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুস সালাম জানান, জিডি হওয়ার পরপরই তারা তদন্ত শুরু করেন এবং শুক্রাবাদের মেট্রো শপিং মল এলাকার সিসি ক্যামেরায় রিমনের সর্বশেষ অবস্থান পান। এরপর কী ঘটেছিল তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেরিন ইঞ্জিনিয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ