Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাম্পকে ফেসবুকে হুমকি দিয়েছিলেন আকায়েদ -দাবি গোয়েন্দাদের

নিউইয়র্কে আকায়েদের আত্মীয়দের বিবৃতি : আমৃত্যু কারাবাস হতে পারে

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নিউ ইয়র্কে বোমা হামলাকারী আকায়েদ উল্লাহর (২৭) পরিবারের সদস্যরা হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, হামলায় তাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশন্স-এর মাধ্যমে তারা একটি বিবৃতিতে এ সব কথা বলেছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন। এতে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের আচরণে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ৪ বছর বয়সী আমাদের সন্তানদের পর্যন্ত ঠান্ডার ভিতর বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে তাদেরকে আটক রাখা হয়। এটা করা হয়, যখন তাদের পিতামাতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল তখন। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, একজন টিনেজার আত্মীয়কে তার হাই স্কুলের ক্লাস থেকে টেনে বের করে নেয়া হয়েছে এবং কোনো আইনজীবী বা তার পিতামাতার অনুপস্থিতিতেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের আইনী ব্যবস্থার কাছে এমন আচরণ আমরা প্রত্যাশা করি না। আগামী দিন বা সপ্তাহগুলোতে অবস্থার উন্নতি হবে বলে আমরা আশা করি। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নিউ ইয়র্কে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আহত অবস্থায় গ্রেফতার বাংলাদেশি যুবক আকায়েদ উল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির উদ্দেশ্যে জনসমাগমস্থলে বোমা হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে, যা আদালতে প্রমাণিত হলে তার বাকি জীবন কারাগারেই কাটবে। গত সোমবার ম্যানহাটনে ব্যস্ততম পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে ওই বিস্ফোরণে আকায়েদ ছাড়াও তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার ম্যানহাটন ফেডারেল কোর্টে তার বিরুদ্ধে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা, জনসমাগমস্থলে বোমা হামলা, ধ্বংসাত্মক ডিভাইস ও বিস্ফোরক ব্যবহার করে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ফেডারেল প্রসিকিউটরদের ওই লিখিত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণের পর আকায়েদ পুলিশকে বলেছে, আমি এটা ইসলামিক স্টেটের জন্য করেছি। ২৭ বছর বয়সী আকায়েদ নিজের সঙ্গে রাখা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণে আহত হয়ে এখন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন। তিনি আত্মঘাতী হামলার চেষ্টা চালিয়েছিলেন বলে পুলিশ বলছে। প্রসিকিউটররা বলছেন, ২০১৪ সালে ইন্টারনেটে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের বিভিন্ন জিনিসপত্র দেখে উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকতে থাকে আকায়েদ। এখন তিনি এ হামলা করেছেন মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ থেকে। তাদের বাইরে নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টও আকায়েদের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখা, পাইপ বোমার বিস্ফোরণ এবং সন্ত্রাসবাদী হুমকির অভিযোগ এনেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, আকায়েদের বিচারে ফেডারেল প্রসিকিউটরদের অভিযোগগুলোই বিবেচ্য হবে। আর তাতে তার সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদন্ড হতে পারে। সাত বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো আকায়েদ প্রথম দিকে ট্যাক্সি চালাতেন, ২০১৫ সাল থেকে একটি আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। ছয় মাস বয়সী সন্তান নিয়ে তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস থাকেন ঢাকায়। নিউ ইয়র্কের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা দাবি করেছে, আকায়েদ উল্লাহ তার ফেসবুকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তাদের দাবি, কিছুদিন আগে ফেসবুকে এক পোস্টে আকায়েদ বলেছিলেন যে, ট্রাম্প তুমি তোমার জাতিকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছ। গতকাল বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি, আইএসের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে হামলা চালান ২৭ বছর বয়সী ও বাংলাদেশি। নিউ ইয়র্ক পুলিশ এক টুইটে জানায়, তা বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে সমর্থন, সন্ত্রাসী হুমকি ও অস্ত্র রাখা আইনে মামলা করা হয়েছে। আইনজীবীদের দাবি, আকায়েদ নিজেই স্বীকার করেছেন যে আইএসের জন্য তিনি এই হামলা চালিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ