Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোনা পাচার হচ্ছে ভারতে

মিজানুর রহমান তোতা : | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সীমান্তের এপার ও ওপারে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক, বেনাপোল অন্যতম ট্রানজিট রুট
‘শরীরের বিভিন্নস্থানে সোনার বার ও বিস্কুট লুকিয়ে গুনগুনিয়ে গান গেয়ে সাধারণ বেশে স্বাভাবিক চলাচলের একপর্যায়ে পাচারকারীরা সীমান্ত পেরিয়ে চলে যাচ্ছে, কেউ ধরা খাচ্ছে, কেউবা খাচ্ছে না’ সীমান্তের গা ঘেষা গ্রামের একাধিক ব্যক্তি এই চিত্র বর্ণনা করেন। বিজিবির হাতে দফায় দফায় সোনাসহ আটক পাচারকারী ঘটনায়ও এর প্রমাণ মিলেছে। সীমান্ত সুত্র জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিমের ৬শ’ কিলোমিটার সীমান্তের একাধিক ফাঁকফোকর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে সোনা পাচার হয়ে যাচ্ছে ভারতে। সাম্প্রতিক সময়ে পাচারের মাত্রা বহুগুণে বেড়েছে। বাংলাদেশ-ভারত চোরাচালান পণ্য প্রায় শূন্যের কোঠায় এলেও ভারত থেকে মাদকসহ ক্ষতিকর পণ্য পাচার অব্যাহত রয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে মূল্যবান সোনা পাচার হয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র বেনাপোল ও বেনাপোলের পার্শ্ববর্তী সীমান্ত এলাকা থেকে চলতি বছরে প্রায় ৪৫ কেজি সোনা ভারতে পাচারের প্রাক্কালে উদ্ধার হয়েছে।
সীমান্ত সুত্র জানায়, বেনাপোল সোনা পাচারের অন্যতম রুট হিসেবে ব্যবহার করছে সংঘবদ্ধ পাচারকারীরা। যাদের রয়েছে সীমান্তের এপার ও ওপারে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। সীমান্তের একাধিক সুত্রে এই তথ্য জানা গেছে। অবশ্য বিজিবি বলেছে, সোনা পাচারের চেষ্টা হয় ঠিকই কিন্তু পাচারের প্রাক্কালে আটকও হচ্ছে। বিজিবি, পুলিশ ও কাস্টমস সুত্র জানায়, চলতি বছরে অন্তত ১৮দফায় প্রায় ৪৫ কেজি সোনা উদ্ধার হয়েছে বেনাপোল ও বেনাপোলের পাশ্ববর্তী পুটখালীসহ বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট থেকে। সুত্র জানায়, সর্বশেষ ১১ডিসেম্বর দুপুরে বেনাপোলের পুটখালী পশ্চিমপাড়ার একটি আমবাগান থেকে বিজিবি কেজি ১শ’৫০ গ্রাম ওজনের ১০পিস সোনার বার ও দেড় লাখ টাকাসহ রনি হোসেন নামে এক সোনা পাচারকারীকে আটক করে। এর আগে ৮ডিসেম্বর মাত্র ৩দিনের ব্যবধানে বেনাপোল থেকে ৪ কেজি ২শ’৮০গ্রাম ওজনের ২৬টি সোনার বারসহ বেনাপোলের বালুন্ডা গ্রামের ইমরান ও বিল্লাল হোসেন নামে আরো সোনা পাচারকারীকে আটক করে বিজিবি। বড় এই চালানটি বিজিবির ৪৯ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল হক এর নির্দেশ মোতাবেক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি টহল দল অভিযান চালিয়ে বেনাপোল থেকে ভারতে পাচারের প্রাক্কালে আটক করে। যার আনুমানিক সিজার মূল্য এক কোটি নব্বই লাখ চুরাশি হাজার টাকা।
সীমান্ত সুত্র জানায়, ভারত থেকে সর্বনাশা ফেনসিডিল, হেরোইনসহ মাদক ঢুকছে বাংলাদেশে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে চলছে মাদক চোরাচালান। একইভাবে বাংলাদেশ থেকে মূল্যবান সোনা পাচার হচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিমের সীমান্তবর্তী জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার বিজিবি, পুলিশসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ব্যাপকভাবে তৎপর চোরাচালান বন্ধে। তারপরেও সীমান্তের ফাঁকফোকর দিয়ে চোরাচাল চলছেই। নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে চোরাচালানীরা সামান্য লাভের আশায় সর্বনাশ ঘটাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সোনা পাচার হচ্ছে ভারতে

১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ