পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তার সম্পর্কে বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার কোনও রেকর্ড নেই বলে যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়েছে
নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন বাস টার্মিনালে বিস্ফোরণে জড়িত সন্দেহে আটক বাংলাদেশি আকায়েদ উল্লাহর স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জুঁই (২৪) ও শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্যান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সোয়া তিনটার দিকে রাজধানীর জিগাতলার মনেশ্বর রোডের একটি বাসা থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ ও সিটিটিসি’র দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সিটিটিসির উপ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আকায়েদের স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছি। তাদের কাছ থেকে আকায়েদ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। আকায়েদের শ্বশুরের নাম জুলফিকার হায়দার এবং শাশুড়ির নাম মাহফুজা আক্তার। গত বছর জান্নাতুল ফেরদৌস জুঁইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এ বছরের ১০ জুন সন্তানের জনক হয় আকায়েদ। আকায়েদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আকায়েদ সন্তান হওয়ার খবর পেয়ে এ বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর দেশে এসেছিল। এক মাস অবস্থানের পর ২২ অক্টোবর সে আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যায়। এর আগে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে আকায়েদ দেশে এসে জুঁইকে বিয়ে করে। আকায়েদের গ্রামের বাড়ি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের স›দ্বীপে। ২০১১ সালের ফের্রুয়ারি মাসে বাবা-মায়ের সাথে সে যুক্তরাষ্ট্রে যায়। পরে আকায়েদ স্থায়ী মার্কিন অধিবাসী হিসেবে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে বসবাস করতে শুরু করে। সেখানে ড্রাইভিংয়ের কাজ করতো সে। আকায়েদের চাচাতো ভাই সোহরাব গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, আমার চাচা (সানাউল্লাহ) ঢাকার হাজারীবাগে থাকতেন। সেখানে চাচা একটি মুদি দোকান চালাতেন। সেখান থেকে তারা আমেরিকা গেছেন। আকায়েদ আমাদের চাচাতো ভাই। ওরা ঢাকা থাকতো, গ্রামে তেমন একটা আসে না। ছোটবেলাতেই ওরা ঢাকা চলে যায়। যোগাযোগ তেমন একটা নাই, আসা-যাওয়া নাই। তাই আমরা খুব বেশি কিছু জানি না। গত (সোমবার) টিভিতে দেখেছি। পরে থানা থেকে আমাকে ফোন দিয়েছিল। আমি যা যা জানি তাদের বলেছি। পরে তারা আমাকে থানায় যেতে বলেছে। আমি তো চট্টগ্রাম থাকি, তাই আজ (গতকাল মঙ্গলবার) স›দ্বীপ যাচ্ছি। তিনি বলেন, আকায়েদরা চার ভাইবোন। সে বিয়ে করছে চাঁদপুরে। বিয়ের পরে আমরা জানতে পেরেছি এ কথা। তার একটি ছেলে আছে বলে শুনেছি। তবে বয়স কতদিন বলতে পারি না। তার বড় বোনের শ্বশুরবাড়িও চাঁদপুরে। সোহরাব বলেন, আমার চাচা ফ্রিডম ফাইটার (মুক্তিযোদ্ধা) ছিলেন। ২০০৯ বা ২০১০ সালের দিকে তারা যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। ২০১১ সালের শেষ দিকে আমি বিদেশে থেকে আসি। তার আগেই আমার চাচা আমেরিকা চলে গেছেন। তিনি সেখানেই মারা গেছেন। আকায়েদ তার বড় সন্তান। সেখানে সে কী কাজ করতো জানি না। তার বাকি তিন ভাইবোন কী করে জানি না। যোগাযোগ তেমন একটা নাই। ওরাও তেমন যোগাযোগ করে না, আমরাও করি না। আকায়েদ উল্লাহর শ্যালক হাফিজ মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, এ বছর আকায়েদ দেশে আসার পর তার সাথে দেখা হয়েছে। তবে তারা ঘূর্ণাক্ষরেও টের পাননি সে অন্য কোনোদিকে মোটিভেটেড হয়েছে কিনা। সে সাধারণ মুসুল্লির মতো মসজিদে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, গত সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ারের কাছে পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে বিস্ফোরণ ঘটে। এর সাথে আকায়েদ উল্লাহ নামে এক বাংলাদেশি যুবকের সংশ্লিষ্টতা পায় নিউ ইয়র্ক পুলিশ। বিস্ফোরণে তার শরীর পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি জখম হয়েছে। এখন তিনি হাসপাতালে রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আকায়েদ উল্লাহর (২৭) বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার কোনও রেকর্ড নেই বলে যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়েছে। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হোম গ্রোন সন্ত্রাসী বলেও আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ। সরকারের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ওই ঘটনার পরপরই আমাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করে। তারা আকায়েদের অতীত কর্মকান্ড এবং সে বাংলাদেশে কোনও জঙ্গি তৎপরতার সাথে জড়িত ছিল কিনা জানতে চায়। এ অনুরোধ পাওয়ার পর বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনুসন্ধান চালায়। সবকিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তারা জানায়, আকায়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের কোনও রেকর্ড নেই। ফলে এটি প্রতীয়মান হয় যে, আকায়েদ উল্লাহ যুক্তরাষ্ট্রের হোম গ্রোন বা স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।