পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইইউ-এর কাছে প্রত্যাখ্যাত নেতানিয়াহু : সেনা পাঠাতে প্রস্তুত মালয়েশিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিকতায় ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছ থেকেও জেরুজালেমের স্বীকৃতির আশা করছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ফ্রেডেরিকা মোঘেরিনির সঙ্গে বৈঠকে এমন প্রত্যাশার কথা জানান তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, নেতানিয়াহুর সেই আহŸানে সাড়া দেননি মোঘেরিনি। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই ইস্যুতে জোটের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে।
গত বুধবার জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরাইলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির কথাও জানান তিনি। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে যখন নিন্দার ঝড় বইছে তখনই ব্রাসেলস সফরে গেলেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। ২০ বছরেরও বেশি সময় পর এটাই প্রথম কোনও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসেলস সফর। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শহরটিতে পৌঁছানোর পর আবারও ট্রাম্পের ঘোষণাকে সাধুবাদ জানান নেতানিয়াহু। তিন হাজার বছর ধরে জেরুজালেম ইহুদিদের রাজধানী দাবি করে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রাম্প সত্যকেই যথাযথভাবে উপস্থাপন করেছেন’।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ফ্রেডেরিকা মোঘেরিনির সঙ্গে বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি সব কিংবা বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশ জেরুজালেমে তাদের রাজধানী সরিয়ে নেবে, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেবে এবং নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি ও শান্তির জন্য আমাদের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে যুক্ত থাকবে।’
নেতানিয়াহুর সেই আহŸানে সাড়া দেননি মোঘেরিনি। তিনি বলেছেন, জেরুজালেম ইস্যুতে ‘আন্তর্জাতিক ঐকমত্যকে’ই স্বীকৃতি দিয়ে যাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ইহুদিদের ওপর হামলারও নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। মোঘেরিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি দ্বি রাষ্ট্র নীতির ভিত্তিতে জেরুজালেমকে দুই দেশের রাজধানী করাই ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের সংঘাত নিরসনের ক্ষেত্রে একমাত্র বাস্তব সমাধান।’
এদিকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান বলেছেন, ওআইসির বৈঠকের মাধ্যমে আমরা দেখিয়ে দেবো যে, জেরুজালেমকে ইসরাইলি রাজধানী স্বীকৃতির বাস্তবিক প্রয়োগ সহজ হবে না। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামীকাল বুধবার জেরুজালেম ইস্যুতে জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে ওআইসির নেতারা। ১৯৬৯ সালে গঠিত এই সংস্থাটিতে ৫৭টি মুসলিম রাষ্ট্র রয়েছে।
গত বুধবার জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, খুব শিগগিরই মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর নিন্দার ঝড় ওঠে আন্তর্জাতিক মহল থেকে। উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো আন্তর্জাতিক জোট।
সেই বিষয়ে আলোচনা করতে ওআইসির জরুরি বৈঠক এরদোগান। এছাড়া ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন তিনি। এরদোগান জানান, আমরা সবাইকে জানিয়েছি যে, মার্কিন সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইন, কূটনীতি বা মানবিকতাকে সমর্থন করে না।
বিশ্বনেতাদের সঙ্গে আলোচনায় ১৯৬৭ সালের সীমান্ত অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। আগামীকাল এ ইস্যুতে তুরস্কে ওআইসি’র জরুরি সম্মেলনের কথাও উল্লেখ করেন এরদোগান। তিনি বলেন, জেরুজালেম মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের পবিত্র শহর; এ ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ-এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য এ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ।
এর আগে শনিবার মিসরের কায়রোতে জরুরি বৈঠকে বসে আরব লিগও। তারাও মার্কিন সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন। আরব লিগের মহাসচিব আবুল গাইস বলেন, ‘ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী এবং এটি ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’
এদিকে সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের রাজপথে নেমে এসেছে হাজার হাজার জনগণ। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন তারা। ফিলিস্তিন ছাড়িয়ে এই প্রতিরোধ ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতেও। মার্কিন দূতাবাসকে ঘিরে বিক্ষোভ করছেন বিশ্বের লাখ লাখ মুসলিম।
সেনা পাঠাতে প্রস্তুত মালয়েশিয়া
ফিলিস্তিনের বায়তুল মুকাদ্দাস শহরকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুরো মুসলিম বিশ্বের মুখে চপেটাঘাত করেছেন। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় যদি প্রয়োজন হয় তাহলে মালয়েশিয়া ফিলিস্তিনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে। মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিশাম উদ্দিন হোসেইন একথা বলেছেন। তিনি বলেন, আমাদেরকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। মালয়েশিয়ার সামরিক বাহিনী সবসময় প্রস্তুত আছে এবং সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করছে। হিশাম উদ্দিনের বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা ‘বার্নামা’ এ খবর দিয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, আমরা দোয়া করছি যেন চলমান এ দ্ব›দ্ব বড় ধরনের সংঘাতের পর্যায়ে না যায়। গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বায়তুল মুকাদ্দাসকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর মালেশিয়ায় বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক দেশের সমস্ত মুসলমানকে মার্কিন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া, প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়ায়ও একই ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশ হচ্ছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, বার্নামা, মিডল ইস্ট মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।