Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাম্পের নীতি : সবার ওপর ইহুদি সত্য

হোসেন মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সভ্যতার ইতিহাসের প্রতিটি পর্বে শক্তিমান ও ভাগ্যবান মানুষদের এগিয়ে চলার সাথে সাথে জড়িয়ে আছে দুর্বল ও ভাগ্যহীনদের অনিঃশেষ বেদনার অশ্রু ও বুকের হাড়-পাঁজর ছুঁয়ে উঠে আসা অন্তহীন হাহাকার। অজ্ঞাত-অখ্যাতদের শ্রম ও জীবনের বিনিময়ে তৈরি হওয়া পিরামিড, তাজমহল প্রভৃতি আজো অমর হয়ে আছে, রয়ে গেছে রাজপুুরুষদের মমিও, কিন্তু স্মৃতি আর কালের পাতায় নেই হতভাগ্য নির্মাণ শ্রমিকেরা। তারা সবাই ধূলি হয়ে বাতাসে মিশে গেছে। চিরকাল ধরেই শক্তিমানের হাতে এভাবে চিহ্নহীন হয়েছে শক্তিহীনেরা। সাম্প্রতিক কালের ইতিহাসে এই নিগ্রহের শিকার ফিলিস্তিনিরা। বিশে^র সর্বাপেক্ষা পরাক্রমশালী শক্তি এ কালে আবার তার দানবীয় শক্তির অযৌক্তিক দম্ভ দেখালো। বিশ^ মুসলিম ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সকল আপত্তি-হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ইহুদি জবরদখলকৃত পবিত্র নগরী জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিল ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্র। এ সিদ্ধান্তে মুসলিম বিশ^ মর্মাহত, অপমানিত ও ক্রুদ্ধ। বিশ^সমাজের বিরাট অংশই মার্কিন এ সিদ্ধান্তের বিরোধী। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র প্রমাণ করল যে শক্তি দিয়ে রাশিয়া বা চীনের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া তাদের জন্য কঠিন হতে পারে, কিন্তু মুসলিম উম্মাহকে সহজেই অগ্রাহ্য করা যায়। ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো প্রমাণ করলেন, ‘সবার উপর ইহুদি সত্য- তাহার উপর নাই’। যুক্তরাষ্ট্র যত বড় পরাশক্তিই হোক, দেশটির অস্তিত্বের জিয়নকাঠিটি রয়েছে ইহুদিগোষ্ঠিটির হাতে। তারা ইসরাইলের ক্রীড়নক মাত্র।
গত ৬ ডিসেম্বর বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। কয়েকদিন আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল, ট্রাম্প শিগগিরই এ ঘোষণায় স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন। অবশেষে সেটা করেন তিনি। ট্রাম্পের কথা, এটা তার নির্বাচনী ওয়াদা ছিল। সেটাই তিনি পালন করেছেন। তার মতে, এ পদক্ষেপ ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। এ যে এক হাস্যকর কথা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার এ ঘোষণার আগেই এটা যে প্রচন্ড বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে এবং এর নেতিবাচক দিক সম্পর্কে মার্কিন প্রশাসনকে ব্যাপকভাবে হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়েছিল। ট্রাম্প নিজেও এর সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে জানতেন। তা সত্তে¡ও শুধু ইহুদিদের তুষ্ট করার জন্যই এ ভয়ংকর সিদ্ধান্ত নেন।
মুসলিম বিশ^ তথা মুসলমানদের প্রতি পাশ্চাত্যের এ আচরণ নতুন কিছু নয়। এ প্রসঙ্গে আমরা স্মরণ করতে পারি ব্রিটেনের কথা। বিশে^র বহু গোলমালের পিছনে উপনিবেশবাদী এ দেশটির ঘৃণ্য ভ‚মিকা রয়েছে। যেমন তারা ডুরান্ড লাইনের মাধ্যমে পাকিস্তান-আফগানিস্তান, ম্যাকমোহন লাইনের মাধ্যমে চীন-ভারত সীমান্তে অমীমাংসিত বিরোধের জনক, তেমনি কাশ্মীর নিয়ে রক্তাক্ত সংঘাতের পিছনেও রয়েছে তাদের ভ‚মিকা। ব্রিটেনের সর্বাপেক্ষা কদর্য কাজ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া হিসেবে ইসরাইল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা। ১৯১৭ সালের ২ ডিসেম্বর বেলফুর ঘোষণার মধ্য দিয়ে ইহুদিদের একটি আবাসভ‚মি প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করে ব্রিটেন। তারই পরিণতিতে ১৯৪৮ সালে ব্রিটেন তাদের দখলীকৃত ফিলিস্তিনের বুকে প্রতিষ্ঠা করে মুসলিম বিশে^র অভিশাপ ইসরাইল রাষ্ট্র। সেদিন গোটা পাশ্চাত্য মুসলিম বিশে^র সকল আপত্তি-প্রতিবাদকে অবহেলা করে ইসরাইলের প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করেছিল ও দেশটিকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। সেদিন কোনো বিশ^শক্তি বা বড় শক্তিই ফিলিস্তিনি ও আরব বিশ^সহ মুসলিম জাহানের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। এভাবে ব্রিটেন তার সা¤্রাজ্য হারালেও হিংসা ও সংঘাতের ক্ষেত্র তৈরি করেছিল। সেসব স্থানে জন্ম নেয়া বিষবৃক্ষগুলো আজো রয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট জনগণকে তার মাশুল দিতে হচ্ছে।
একদা মধ্যপ্রাচ্যে ব্রিটেন যে বিষবৃক্ষ রোপণ করেছিল, ভ‚রাজনৈতিক প্রয়োজনে তার মালিকানা হস্তান্তরিত হয় ব্রিটেন-পরবর্তী পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। লক্ষণীয় যে, ব্রিটেনের চাইতেও অনেক বেশি আগ্রহ ও মমতা নিয়ে এবং চরম নির্লজ্জভাবে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের এই আরোপিত ইহুদি রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করে। তার সাথে তখন প্রধান লাঠিয়াল হিসেবে সহায়তা করে ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইউরোপসহ বিশে^র বহু রাষ্ট্র। এ পর্যায়ে ইসরাইলের কৃতিত্ব এই যে, অপরিমেয় মার্কিন অস্ত্র ও অর্থ সাহায্যের সর্বোত্তম ব্যবহার করে সে নিজের অস্তিত্ব সুদৃঢ় ও মধ্যপ্রাচ্যের সর্বাপেক্ষা সামরিক সামর্থবান রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে অধিষ্ঠিত করে। এ দক্ষতা ও সক্ষমতার কারণে দেশটি ১৯৪৮ সাল থেকে আজো টিকে রয়েছে। ইসরাইল প্রমাণ করেছে একটি অবৈধ জন্মপ্রক্রিয়ার ধিক্কারের মধ্যেও শুধু শক্তি ও সাহসের বলে টিকে থাকা যায়, সকল প্রতিক‚লতা পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়া যায় যদি লক্ষ্য ঠিক থাকে।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালে হিটলার যুদ্ধের জন্য যতটা না নিন্দিত হয়েছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি নিন্দিত হয়েছেন ইহুদি হত্যার জন্য। সে নিন্দা ও ঘৃণার ভার আজো বয়ে বেড়াচ্ছে জার্মানি। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধোত্তর সময়ে ১৯৪৮ সাল থেকে ক’দিন আগে পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ ফিলিস্তিনিকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ ও জন্মভ‚মি থেকে বিতাড়িত করে, নির্যাতন-নিপীড়নের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করে, রক্তের স্রোত বইয়ে দিয়ে ইসরাইল বিশ^সমাজে দিব্যি দিন পাড়ি দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্রদের অন্ধ সমর্থনের কারণে কোনো নিন্দা আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলকে বহুকাল স্পর্শ করতে পারেনি। মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তাকে শাস্তি দেয়া তো দূরের কথা, জাতিসংঘ, মুসলিম বিশ^, আন্তর্জাতিক সমাজ সবাইকে সে থোড়াই কেয়ার করে। ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলকে উপেক্ষা করবে কে? ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন? সে প্রশ্নই আসে না। হালের সম্ভাব্য পরাশক্তি ভারতও ইসরাইলের সাথে ‘বিবাহ বন্ধনে’ আবদ্ধ হয়ে আজ নিজেকে ধন্য মনে করে।
এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার যে ২০১৭ সালে ৮৭ লাখ জনসংখ্যায় পৌঁছা ২০ হাজার বর্গ কি.মি. (সাড়ে ৮ হাজার বর্গমাইল) আয়তনের যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সাহায্য নির্ভর একটি দেশকে যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল বিশ^শক্তি এবং প্রায় গোটা বিশ^ই তোয়াজ করে চলে ও হিসাবে রাখে। আজ পর্যন্ত কোনো মুসলিম দেশই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ রকম গুরুত্ব অর্জন করতে পারেনি। কোন জাদুমন্ত্র বলে ঊনিশ শতকের শেষভাগে ইহুদি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখা কারিগররা এ অসাধ্য সাধন করলেন এবং এখনো করছেন তা এক বিস্ময় বটে। সাধারণভাবে বলা হয়, বিশ^ অর্থনীতির কেন্দ্র বিন্দুতে শত শত বছর ধরে আসীন রয়েছে ইহুদিরা। আর অর্থনীতিই বিশে^র চালিকা শক্তি। সুতরাং সে অর্থনীতি যাদের হাতে তারাই বিশ^কে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। এ মত চীন, রাশিয়া, জাপান প্রভৃতি দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে এবং ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানির ক্ষেত্রে যে ব্যাপকভাবে সত্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যুক্তরাষ্ট্রে সে দেশের বা বিশ^ ইহুদি সম্প্রদায়ের অপছন্দ কোনো ব্যক্তির পক্ষে প্রেসিডেন্ট হওয়া কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। আরেক অর্থে, এ ক্ষেত্রে ইসরাইলের ক্ষমতাসীনদের গ্রিন সিগন্যাল প্রয়োজন হবে। অন্য তিনটি দেশের ক্ষেত্রেও অনেকটাই তাই। আরো বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশেও তা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। যদিও অতি সাম্প্রতিককালে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের সুদীর্ঘকালের অব্যাহত মানবতাবিরোধী কার্যকলাপ এবং আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি তার বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন (হালে ভারতে সাফল্য বা ইতিবাচক সংকেত হিসেবে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্র্শন করা হচ্ছে) বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে বাধ্য করেছে। তবে ইসরাইল তাতে উদ্বিগ্ন নয়।
ইসরাইল তার প্রতিষ্ঠা পরবর্তীকালে যে ফিলিস্তিনি ভ‚মি গ্রাস শুরু করেছিল আজো তা থামেনি। প্রতিষ্ঠা লগ্নে পবিত্র নগরী জেরুজালেম ইসরাইলি ঘোষিত ভূখন্ডের মধ্যে ছিল না। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরাইল জেরুজালেম দখল করে। ১৯৮০ সালে ইসরাইলি পার্লামেন্ট জেরুজালেমকে দেশের রাজধানী করার প্রস্তাব অনুমোদন করে। ফিলিস্তিন, আরবদেশগুলোসহ মুসলিম বিশ^ তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। তবে বিশ^মোড়ল যুক্তরাষ্ট্রসহ তার ইউরোপীয় মিত্ররা তা সমর্থন করে। ১৯৯৫ সালে মার্কিন কংগ্রেসে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী অনুমোদন করে প্রস্তাব গৃহীত হয়। তবে তারপর থেকে বিল ক্লিনটন, জর্জ ডবিøউ বুশ ও বারাক ওবামা- এ তিন প্রেসিডেন্টের আমলে এ প্রস্তাব বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। কিন্তু তারা যা করেননি, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে কম মেধা সম্পন্ন ও ইতিহাস অনভিজ্ঞ, সর্বাপেক্ষা বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সে কাজটিই করলেন।
এক আশ্চর্য কাকতালীয় বিষয় যে ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ট্রাম্প গোটা মুসলিম বিশে^র অনুভ‚তিতে আঘাত দিয়ে যে কাজটি করলেন, অনেকটা একইভাবে ২৫ বছর আগে ১৯৯২ সালে ভারত ও উপমহাদেশের প্রায় ৪০ কোটি মুসলমানের বুকে শেলবর্ষণ করে অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল চরম উগ্রপন্থী হিন্দুরা। আজকের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান দলের ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে মিত্রতার মূলে কি এই মুসলিম বিদ্বেষই তবে কাজ করছে, সে প্রশ্ন কারো মনে জাগতেই পারে। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী করার প্রস্তাবে কংগ্রেসের রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সদস্যরা ব্যাপকভাবে সমর্থন দিয়েছেন। মনে রাখতে হবে, এ সেই আমেরিকানরা যারা মিথ্যা অভিযোগে ইরাক আক্রমণ করে প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং লাখ লাখ ইরাকির মৃত্যু ও সমৃদ্ধ দেশ ইরাককে ধ্বংসস্ত‚পে পরিণত করার জন্য দায়ী খুনী জর্জ বুশকে ২০০৪ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছিল।
১৯১৭ থেকে ১৯৪৮ এবং ১৯৪৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনি মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে অব্যাহত নিপীড়ন-নির্যাতন চলেছে, বিপুল সম্পদ ও জনসংখ্যা সত্তে¡ও আরব দেশগুলোসহ মুসলিম বিশ^ তা রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এক্ষেত্রে ইসরাইলের প্রতি বিশ^শক্তিগুলোর সন্তান প্রতিম স্নেহ যেমন কাজ করেছে, তেমনি মুসলিম দেশগুলোর মধ্যকার বিরোধ ও অনৈক্য তাদেরকে দুর্বল করে রাখায় ঐক্যবদ্ধভাবে তারা এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী কোনো ভ‚মিকা পালন করতে পারেনি। এ ব্যর্থতা ফিলিস্তিন, চেচনিয়া, কাশ্মীর, উইঘুর মুসলমানদের জন্য দুর্ভাগ্যের পাল্লা ভারি করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার ফলে বিশ^ মুসলমানদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়বে, অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। ফিলিস্তিনিদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তাই তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে, নিষ্ফল কিছু হামলা হয়ত চালাবে। যেমন ইতোমধ্যেই জেরুজালেমে সংঘর্ষে ২ জন নিহত ও বহু আহত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর গাজায় সংঘর্ষে ৪ জন নিহত ও ৭৪৭ জন আহত হয়েছে। গাজার ফিলিস্তিনি নেতারা ইন্তিফাদার ডাক দিয়েছেন। ইসরাইল বিশে^র অজেয় শক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এভাবেই নিষ্ঠুরভাবে দমন করছে, করবে। সউদী আরব, মিসরের মতো শক্তিশালী দেশগুলো তা চুপচাপ দেখবে। পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ প্রভৃতি দেশ মৌখিক প্রতিবাদ জানিয়ে দায়িত্ব শেষ করবে। আরব লীগ, ওআইসি জরুরি বৈঠক করবে। এমনকি নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকও ডাকা হতে পারে। তাতে ইসরাইল বিরোধী কোনো প্রস্তাব নেয়া হলে যথারীতি ভেটো দেবে যুক্তরাষ্ট্র। এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্ভাগ্যের অবসান আর হবে না।
কেউ কেউ মনে করেন, সারা বিশে^ অনধিক ২ কোটি ইহুদি অর্থ-বিত্তে ও মেধা-প্রতিভার বলে বিশে^র একটি বড় অংশকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছে। সেরা বিশ^শক্তিকে হাতের মুঠোয় পুরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা যদি কখনো তাদের অনুরূপ অবস্থানে পৌঁছতে পারে তাহলেই তারা মুক্তি ও স্বাধীনতার আশা করতে পারে, নচেৎ নয়। তবে তা সম্ভব কিনা তা একমাত্র ভবিতব্যই জানে।



 

Show all comments
  • মিজান লাকসামী ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১০:১৭ এএম says : 0
    ট্রাম্প যদি ইসরাইল আর ইয়াহুদীদের এতই ভালবাসেন তবে ইসরাইলের রাজধানীটা জেরুজালেম ঘোষণা না দিয়ে ওয়াশিংটন বা নিউইয়র্ক দিলে পারতেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প


আরও
আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->