পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১৩ ডিসেম্বর মার্কিন দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি : ট্রাম্পের ঘোষণার প্রতিবাদে ঐকমত্য আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ সব দল
মুসলমানদের পবিত্রভূমি জেরুজালেমকে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকৃতির প্রতিবাদে মিছিলে মিছিল প্রকম্পিত হয়ে উঠে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ। ফিলিস্তিনীদের অধিকার আদায়ের পক্ষ্যে বাদ জুম্মা তৌহিদী জনতার প্রতিবাদ মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে উঠে রাজধানীর বাইরে রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ,বগুড়াসহ বিভাগী ও জেলা শহর। মিছিলকারীরা ট্রাম্পের ঘোষণার বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। মার্কিন ও ইসরাইল বিরোধী এসব বিক্ষোভ থেকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, মুসলিমানদের পবিত্রভূমি জেরুজালেম ফিলিস্তিনীদেরই থাকবে। ইহুদির দালাল ট্রাম্পের ঘোষণা মানি না মানবো না।
ট্রাম্পের ‘জেরুজালেম’ ঘোষণার প্রতিবাদে ১১ ডিসেম্বর ইসলামী আন্দোলন ও ১৩ ডিসেম্বর ঢাকার মার্কিন দূতাবাস ঘেরাওয়ের কর্মসুচি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। দেশের ইসলামী ধারার রাজনৈতিক দল, বাম ধারার রাজনৈতিক দল, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল ‘ট্রাম্পের জেরুজালেম ঘোষণা’র প্রতিবাদে একাট্ট। মুসলিম-খ্রিষ্টান-ইহুদি তিন ধর্মের মানুষের পবিত্র স্থান জেরুজালেমকে ইহুদি রাষ্ট্র ‘ইসরাইলের রাজনীতি’ ঘোষণার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া, তোলপাড় ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘ, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, ওআইসি, আরব লীগসহ যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, সউদী আরবের বিরোধিতার মুখে ট্রম্পের এই একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে বিশ্বের দেশে দেশে। সারাবিশ্বের প্রতিবাদের মতোই শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদ থেকে মুসুল্লিরা প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। বায়তুল মোকাররমের উত্তরগেট থেকে হেফাজতের ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল থেকে মার্কিন দূতাবাস ঘেড়াওয়ের কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়। পৃথক পৃথক মিছিল পূর্ব সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ট্রাম্পের ঘোষণা বিশ্বের মুসলমানরা মেনে নেয়নি এবং নিবেও না। ট্রাম্পকে তার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে অন্যথায় বিশ্বের মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধভাবে ইসরাঈল ও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। জেরুজালেম হলো মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদি তিন ধর্মের অনুসারীদের কাছেই পবিত্র নগরী। ইসরায়েল বরাবরই জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী বলে দাবি করলেও পূর্ব জেরুজালেমকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী করতে চান ফিলিস্তিনের নেতারা। ১৯৪৮ সালে মধ্যপ্রাচ্যের পেটের ভিতরে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পর প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রই জেরুজালেমকে ইসলাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ায় দ্বি-রাষ্ট্রিক সমাধান প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ ঘোষণার’ শামিল হিসেবে অবিহিত করেছে ফিলিন্তিন। ট্রাম্টের এই ঘোষণর প্রতিবাদ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্পের ঘোষণা ইসলামিক ওয়ার্ল্ডে কারও কাছে গ্রহণযোগ্য না। জাতিসংঘের রেজুলেশনকে এভাবে অগ্রাহ্য করা কিন্তু কেউ বোধ হয় মেনে নেবে না। এটা ফিলিস্তিনের বিষয়ে আমার বক্তব্য। বিএনপির পক্ষ্য থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ট্রাম্পের এই ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তিনি বলেছেন, জেরুজালেম ইসরাইলের রাজধানী বিশ্বের কেউ মেনে নেবে না। সিপিবি, বাসদ, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চাসহ বাম ধরার দলগুলো গত বৃহস্পতিবার থেকে ট্রাম্পের ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছে।
উল্লেখ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত বুধবার হোয়াইট হাউজে এক ভাষণে জানান জেরুজালেমকে তিনি ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করতে পররাষ্ট্র দপ্তরকে নির্দেশ দিচ্ছেন। ট্রাম্পের এই ঘোষণায় প্রতিবাদে ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে অধিবেশন ডেকেছে জাতিসংঘ। আগামী ১৩ ডিসেম্বর মুসলিম দেশগুলোর প্রধান জোট ওআইসির জরুরি বৈঠক ডেকেছেন সংস্থাটির সভাপতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। বাংলাদেশও এই ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
শুক্রবার জুমার নামাজের পরপরই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের আশপাশে বিক্ষোভ মিছিল বের করে অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামপন্থী দলগুলো। বিক্ষোভকারীদের সবার কণ্ঠে ছিল ‘ট্রাম্পের ঘোষণা মানি না মানব না’, জেরুজালেম ফিলিস্তিনের, ইসরায়েল নিপাত যাক’। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকায় আগুন দেয়। একই দাবিতে বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ করেছে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সংগঠনটি আগামী ১১ ডিসেম্বর মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল করবে।
জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার প্রতিবাদে শুক্রবার সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক দেয় হেফাজতে ইসলাম। চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বিশাল বিক্ষোভ করেছে সংগঠনটি। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ করেছেন ইসলামি দলগুলোর কর্মীরা। এতে যোগ দিয়েছেন জুম্মার নামাজ পড়তে আসা সারারণ মুসল্লিরাও।
ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ
জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর রাজধানীতে বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসুচি পালন করেছে। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে ১১ ডিসেম্বর মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিলের কর্মসুচি ঘোষণা করেছে দলটি। সেদিন বাইতুল মোকাররম উত্তর গেইটে সকাল ১০টায় জমায়েত শেষে পীর সাহেব চরমোনাই’র নেতৃত্বে মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে বিশাল গণমিছিল রওয়ানা দিবে।
গতকাল শুক্রবার বাইতুল মোকাররম উত্তর গেইটে বাদ জুমু’আ মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলমানদের পবিত্র স্থান জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি বিশ্বকে নতুন করে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিবে। মুসলমানদের প্রথম কেবলা জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের সিদ্ধান্তে গোটা মুসলিম উম্মাহকে বিক্ষুব্ধ, মর্মাহত ও ব্যথিত করেছে। তার এই সিদ্ধান্ত মুসলমানরা বাস্তবায়ন হতে দিবে না।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, নগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা নেছার উদ্দিন, আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া প্রমুখ।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী মার্কিণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কর্তৃক জেরুজালেমকে ইসরাঈলের রাঝধানী ঘোষণার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবী করেছেন। তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত বাতিল না করা পর্যন্ত হেফাজতসহ বাংলাদেশ ও বিশ্ব মুসলিম আন্দোলন প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবে। তিনি ঐক্যবদ্ধভাবে এ আন্দোলন অব্যাহত রাখার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবীতে আগামী ১৩ ডিসেম্বর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে মার্কিণ দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচী ঘোষনা করেন। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে পল্টন হয়ে সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাওলানা মাহফুজুল হক, ড. আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী, মাওলানা মুজিবুর রহমান পেশওয়ারী, মাওলানা আব্দুল করিম, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা ফয়সল আহমদ প্রমূখ।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মহানগর
জেরুজালেমের মসজিদুল আকসা মুসলমানদের প্রথম কেবলা এবং সমগ্র বিশ্ব মুসলিমের ঈমানের বিষয়।। জেরুজালেমকে ইসরাঈলের রাজধানী ঘোষণা করায় বিশ্বের মুসলমানরা ফুসে উঠেছে। জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করে ট্রাম্প বিশ্বের মুসলমানকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জেরুজালেম ইস্যুতে যে ঘোষণা দিয়েছে তার সঙ্গে মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ। বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ইসরাঈল ও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এগিয়ে সময়ের দাবী। আজ বাদ জুম্মা বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরীর মিছিল পরবর্তী সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা এনামুল হক মূসার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় অফিস ও বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা মুহসিনুল হাসান, সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশিদ ভূইয়া, নির্বাহী সদস্য মাওলানা সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, মাওলানা ফয়সল আহমদ, ঢাকা মহানগরীর সহ-সভাপতি মুফতি নূর মোহাম্মদ আজিজী প্রমূখ।
খেলাফত মজলিস
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, মুসলমানদের পবিত্র নগরী জেরুজালেম হবে স্বাধীন ফিলিস্তিনের রাজধানী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুজালেমকে অবৈধ ইসরাইল রাষ্ট্রের রাজধানী ঘোষনা সম্পূর্ণ অবৈধ। ট্রাম্পের এ ঘোষনার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আল-কুদস তথা জেরুজালেম মুক্ত করার জন্যে বিশ্ব মুসলিমকে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। গতকাল শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী আয়োজিত প্রতিবাদী মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। েেখলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী সভাপতি শেখ গোলাম আসগরের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগরী সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজীজুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা সৈয়দ মজিবুর রহমান, মাওলানা মুহাম্মদ শফিক উদ্দিন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, এডভোকেট মো: মিজানুর রহমান, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, হাফেজ মাওলানা নূরুল হক, ডাঃ রিফাত হোসনে মালিক, মোঃ জহিরুল ইসলাম, খন্দকার সাহাব উদ্দিন আহমদ, এডভোকেট তাওহিদুল ইসলাম তুহিন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষনার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরীর মানববন্ধনের পূর্বে বিজয়নগর পানির ট্রাংকির সমানে থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাবের সমানে সমবেত হয়।
ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণকমিটি
ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও ইসলামী ঐক্যজোটের সহকারী মহাসচিব আলহাজ্ব মাওলানা আলতাফ হোসাইন এক বিবৃতিতে বলেছেন, মুসলিম উম্মাহর অবিচ্ছেদ্য অংশ বাইতুল মোকাদ্দাসের ওপর ইহুদীদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার অধিকার বিশ্বের মুসলমানরা মেনে নেবে না। জেরুজালেম নিয়ে ট্রাম্পের এই ঘোষনা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করবে। এতে ইসরাঈলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও দখলদারিত্ব দীর্ঘস্থায়ী হবে।
বাতিল প্রতিরোধ পরিষদ
বাতিল প্রতিরোধ পরিষদের সভাপতি হাজী জালাল উদ্দিন বকুল বলেন, অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে জেরুজালেমকে নিজেদের একচ্ছত্র রাজধানীর স্বীকৃতির দাবি করে আসছিল। ট্রাম্পের কলমের খোঁচায় সেই দাবীরই প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্য সফর করে শান্তির প্রশ্নে নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজে যে ভূমিকা পালনের কথা বলেছিলেন, তার অপমৃত্যু ঘটেছে। জেরুজালেম নিয়ে বির্তকিত স্বীকৃতির কারণে জাতিবিদ্বেষী এই প্রেডিডেন্ট ইতিহাসের পাতায় চিরদিনই ঘৃণিত হয়ে থাকবেন। তিনি ফিলিস্তিনী মুসলমানদের জেরুজালেম রক্ষায় বিশ্ব মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উদাত্ত আহবান জানান।
খেলাফতে ইসলামী বাংলাদেশ
খেলাফতে ইসলামী বাংলাদেশের আমীর , ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী ও মহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান জেরুজালেমকে ইসরাঈলের রাজধানী হিসেবে ট্রাম্পের ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, মুসলমানদের প্রথম ক্বেবলা আল-আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা জেরুজালেম শহর ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর ভবিষ্যৎ কোনো রাষ্ট্র বা প্রেসিডেন্টের দ্বারা নির্ধারিত হতে পারে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাঈলের রাজধানী ঘোষণা দিয়ে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছেন। তাই আন্তর্জাতিক আদালতে তার বিচার হওয়া উচিত।
হেফাজতে ইসলাম গাজীপুর জেলা শাখা
বাদ জুমা গাজীপুর চন্দনা চৌরাস্তায় হেফাজতে ইসলাম গাজীপুর জেলা শাখার উদ্যোগে সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে ট্রাম্পের হটকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্বের বক্তব্যে মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, মুসলিমবিশ্ব কখনোই ট্রাম্পের এমন হটকারী সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। এতে আরো বক্তব্য রাখেন মাওলানা মোখলেছুর রহমান, হাফেজ নিজাম উদ্দিন , হাফেজ সাইফুল ইসলাম ও মাওলানা শফিকুল ইসলাম।
জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ
জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ আয়োজিত ওলামা সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেছেন, মুসলমানের বুকে একফোঁটা রক্ত থাকতে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হতে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে মুসলমানরা জেরুজালেম পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের ঘোষণা দিবে। তিনি মুসলিম বিশ্বকে ফিলিস্তনের পক্ষে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান। গতকাল পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা বাছির উদ্দিন মাহমুদ ও মাওলানা নাযীর আহমাদ শিবলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ওলামা সম্মেলনে বিশেস অতিথির বক্তব্য রাখেন ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ আজাদী, মাওলানা ইউনুছ ঢালী, মাওলানা তারিক জামিল প্রমুখ। পরে মাওলানা ইউনুস ঢালীকে আহ্বায়ক, মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ আজাদীকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও মাওলানা বাছির উদ্দিন মাহমুদকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটি গঠন করা হয়।
কসরে হাদী খানকাহ শরীফ
কসরে হাদী খানকার শরীফের শায়খ শাহসুফী সৈয়দ আব্দুল হান্নান আল হাদী এক বিবৃতিতে বলেছেন, জেরুজালেম মুক্ত করতে হলে আমেরিকার সাথে সর্বাত্মক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আমেরিকার পণ্য বর্জন, অসহযোগিতা ও কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা ছাড়া মুসলমানদের সামনে আর কোন পথ খোলা নেই। তিনি বলেন, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার অর্থই হলো বিশ্বে সংঘাত সৃষ্টি করা। মুসলমানদেরকেই পবিত্র স্থান জেরুজালেম রক্ষা করতে হবে। আমেরিকাকে বয়কট করতে হবে। আমেরিকাসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো বিশ্বব্যাপী অশান্তি জিইয়ে রেখে ফায়দা নিচ্ছে।
মুসলিম লীগ
বাংলাদেশ মুসলিম লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট বদরুদ্দোজা আহমেদ সুজা, মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আজিজ হাওলাদার ও প্রেসিডিয়ামের সিনিয়র সদস্য আতিকুল ইসলাম এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন মূলত মধ্যপ্রাচ্য সহ গোটা বিশ্বকে অস্থিতিশীল করার ইতিহাসের ঘৃণ্য ও জঘন্যতম পরিকল্পনায় মত্ত। মার্কিনীদের মিত্র দেশ হিসেবে পরিচিত ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির মত প্রভাবশালী দেশগুলোর বিরোধিতা সত্তে¡ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একক ভাবে গৃহীত এ সিদ্ধান্ত মূলত বাদ বাকী বিশ্ব নেতৃত্বকে চরম ভাবে অবজ্ঞা করার শামিল। ট্রাম্প প্রশাসনের এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত বিশ্বযুদ্ধ বাধানোর একটা পাঁয়তারা ছাড়া আর কিছু নয় বলে নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেছেন।
চট্টগ্রাম মহানগরী হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ সমাবেশ
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশ সগরীর আন্দরকিল্লা শাহী মসজিদের উত্তর গেইটে মহানগর সভাপতি মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে হেফাজত নেতারা বলেন, আল কুদসকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতি মুসলিম উম্মার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। এই ঘোষণা বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয়ে চরম আঘাত। এর প্রতিবাদে আগামী ১৩ ডিসেম্বর ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণার বিরুদ্ধে বাদ জুমা নগরীর আরও কয়েকটি এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে ইসলামি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সাধারণ মুসল্লিরাও শরিক হন।
হেফাজতের সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হাটহাজারী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা নাসিরুদ্দিন মুনির, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা মুফতি হারুন ইজহার, দক্ষিণ জেলা সভাপতি মাওলানা সরোয়ার কামাল আজিজী, মহানগর নেতা মাওলানা হাফেজ ফায়সাল, জয়নাল আবেদীন কুতুবী, মাওলানা মনজুরুল কাদের চৌধুরী, মাওলানা জালাল উদ্দিন, মাওলানা আলমগীর, মাওলানা সায়েমুল্লাহ, মাওলানা ইকবাল খলিল, মাওলানা আশরাফ বিন ইয়াকুব, মাওলানা মাওলানা জুনাইদ জওহার, মাওলানা কামরুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা কুতুবুদ্দিন, মাওলানা শহীদুল ইসলাম, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা মোস্তফা ফায়সাল, মাওলানা শিব্বির আহমদ, মাওলানা জুনাইদ বিন ইয়াহইয়া, মাওলানা নাজমুল হাসান, কারী আবু রায়হান, মাওলানা নাজমুস সাকিব প্রমূখ।
প্রধান অতিথি মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব বলেন, চরম বিতর্কিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক আল কুদস বা জেরুজালেমকে ইসরায়লের রাজধানী ঘোষণা দিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড ঘোষণা করেছে। এই স্বীকৃতির ঘোষণা মুসলমানরা মেনে নিবেনা। ট্রাম্প মানবাধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। ইসরাইলের স্বার্থে ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলিম অধিবাসীদের স্বাধীনতার স্বপ্নকে ভূলুণ্ঠিত করেছেন। তিনি বলেন, মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করে ইঙ্গ-মার্কিন জায়নবাদী দখলদার শক্তি কখনোই রেহাই পাবে না ইনশাআল্লাহ। মুসলমানদের অন্তরে এখনো জিহাদের চেতনা জাগ্রত রয়েছে।
মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণা আমেরিকার জনগণের নয়। আমেরিকার রাষ্ট্রীয় নীতিকে উপেক্ষা করে তিনি ব্যক্তিগত কায়েমী উদ্দেশ্যেই এই ঘোষণা দিয়েছেন। এমনকি তিনি জাতিসংঘের ২৪২ ও ৩৩৯ নং রেজুলেশন লংঘন করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পরামর্শের তোয়াক্কা করেননি। মুসলিম বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।
তিনি বলেন, মুসলমি উম্মাহর বিরুদ্ধে সা¤্রাজ্যবাদী আমেরিকা ও বর্ণবাদী ইসরায়ল এক হয়েছে। তাদের সাথে মুসলমি দেশগেুলোর কিছু লম্পট ও চরত্রহিীন নেতাও রয়ছে। আমেরিকা ইহুদীবাদী ইসরাইল এবং তাদের অনুসারীরাই হচ্ছে বর্তমান যুগের ফেরাউনের এজেন্ট। আমেরকোির শাসক গোষ্ঠী এখন মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করছে। যারা যুদ্ধ চায় এবং যুদ্ধই যাদের নীতি, এই ঘোষণার মাধ্যমে তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বায়তুল মোকাদ্দাসকে ইহুদীবাদী ইসরায়লের রাজধানী হিসেবে ঘোষণার বিরুদ্ধে মুসলমানরা জান দিয়ে তা প্রতিহত করতে প্রস্তত রয়েছে।
মাওলানা নাসিরুদ্দিন মুনির বলেন, বিগত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়লের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অথচ এই স্বীকৃতি আমেরিকার জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ই নয়, বরং এটা আমেরিকার নিরাপত্তার জন্য হুমকি ডেকে আনবে।
মুফতি হারুন ইজহার বলেন, তার এই হঠকারী ও পাগলামি সিদ্ধান্ত আমেরিকার সাথে মুসলিম বিশ্বের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান যুদ্ধঘন পরিস্থিতিকে আরো ভয়ানক ও উত্তপ্ত করে তুলবে। আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই, ট্রাম্পের এই ঘোষণা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলাম বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইজরায়লের রাজধানী স্বীকৃতির দেওয়ার সিদ্ধান্তকে আমরা নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার আহবান জানাই। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে এক বিরাট মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এসে শেষ হয়।
নেত্রকোনায় হেফাজতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ
নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা জানান, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ নেত্রকোনা সদর উপজেলার উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা শহরের বারহাট্টা রোডস্থ জামিয়া মিফতাহুল উলুম মাদরাসার সম্মুখ থেকে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের (বড় মসজিদ) সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। মিছিলে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতাকর্মীসহ ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসল্লীরাও স্বতঃষ্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। হেফাজতে ইসলাম নেত্রকোনা সদর উপজেলার সমন্বায়ক গাজী মোহাম্মদ আব্দুর রহিমের পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, হেফাজতে ইসলাম নেত্রকোণা জেলার মজলিশে শূরার সদস্য হাফেজ মাওলানা মুফ্তি আব্দুল বারী, খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা আলহাজ্ব ক্বারী আব্দুর রাকীব, হাফেজ মাওঃ মোস্তফা আহমেদ জিহাদী, হাফেজ মাওঃ হাবিবুল্লাহ খান, মাওঃ জাহিদুল ইসলাম সালেহ্ প্রমুখ।
সিলেটে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
সিলেট অফিস জানায়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতী সৈয়দ মো. ফয়জুল করীম চরমোনাই বলেছেন, জেরুজালেম পৃথিবীর সবচেয়ে স্পর্শকাতর স্থান। এখানে কেউ কোন ভুল সিদ্ধান্ত দিলে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। উম্মাদ ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইহুদি রাষ্ট্রের রাজধানী ঘোষণা করে বিশ্বকে আর একটি বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিলেন। মুসলমানদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ থাকতে পারে কিন্তু বায়তুল মোকাদ্দাস নিয়ে কোন মতবিরোধ নেই। বায়তুল মোকাদ্দাস আমাদের কাছে ঈমানের বিষয়। সুলতান নুরুদ্দীন স্বপ্ন দেখেছিলেন জেরুজালেম মুক্ত আর সালাউদ্দিন আইয়ূবী তা বাস্তবায়ন করেছিলেন। জেরুজালেম এখন আবার ইহুদীদের দখলে। ট্রাম্পের হাত থেকে জেরুজালেমকে মুক্ত করতে বিশ্বের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং মজলুম ফিলিস্তিনীদের স্বাধীনতার স্বীকৃতি বাংলাদেশ শুরু থেকেই দিয়ে আসছে। আমরা আশাবাদী জেরুজালেম ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। জেরুজালেমকে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইসরাইলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতির প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার বাদ জুম’আ সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠ থেকে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেট কোর্ট পয়েন্টে এসে সমাবেশের আয়োজন করে।
ইসলামী আন্দোলন সিলেট মহানগর সভাপতি মুফতি মোঃ ফখর উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ডা. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। প্রধান অতিথি বক্তব্য শেষে তিনি আগামী ১১ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররাম থেকে আমেরিকা দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য সংগঠনের মহাসচিব হাফিজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমদ, কেন্দ্রীয় সদস্য প্রফেসর ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন খান, বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জেলা যুব আন্দোলন সভাপতি আলহাজ্ব নজির আহমদ, ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলার সভাপতি সোহেল আহমদ, শ্রমিক আন্দোলন জেলার সভাপতি ফজলুল হক প্রমুখ
জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি প্রত্যাহার করতে হবে : মুহাম্মদ মুহিবুর রহমান
বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে অশান্ত করে তুলবে। জেরুজালেম হাজার বছর ধরে মুসলমান, ইহুদি, খ্রিষ্টানদের পুন্যভূমি হিসেবে স্বীকৃত। সুতরাং ফিলিস্তিনের ন্যায্য দাবীকে উপেক্ষা করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ হঠকারী ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সঙ্ঘাতের সূচনা করবে। অবিলম্বে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি প্রত্যাহার এবং তেল আবিব হতে আমেরিকার দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। গতকাল (শুক্রবার) বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া সিলেট জেলা ও মহানগরী শাখার উদ্যোগে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রদানের হঠকারী ঘোষণার প্রতিবাদে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল পরবরর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা মুহাম্মদ মুহিবুর রহমান উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। বাদ জুমআ নগরীর সুবহানীঘাটস্থ হাজী নওয়াব আলী জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে এক সমাবেশে মিলিত হয়। সিলেট মহানগর সভাপতি এনাম উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে ও সিলেট পূর্ব জেলা সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল খালিক রুহিল শাহ ও পশ্চিম জেলা জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. জাহেদুর রহমানের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আখতার হোসাইন জাহেদ, হবিগনজ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের প্রভাষক সাবেক ছাত্রনেতা নোমান আহমদ, সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ উসমান গণি, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আহমদ আল জামিল। এসময় উপস্থিত ছিলেন তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সদস্য সুহাইল আহমদ তালুকদার, সাইফুর রহমান চৌধুরী শিপু, মো. ছালিক উদ্দিন, মহানগর সাধারণ সম্পাদক আহমদ শরীফ, পূর্ব জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত আল হাসান, পশ্চিম জেলাসহ সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, মহানগর সহ সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ আহমদ, সহ সাংঠনিক সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন শরীফ, পশ্চিম জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম, পশ্চিম জেলা প্রচার সম্পাদক শাকের আহমদ চৌধুরী, পূর্ব জেলা অর্থ সম্পাদক রুহুল হুদা চৌধুরী রাহেল, সুনামগঞ্জ জেলা অর্থ সম্পাদক আব্দুল মতিন রাজন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আলী আনহার শাহান, মারুফ আহমদ, আলী আহমদ চৌধুরী, পিয়ার হাসান, মোস্তাক আহমদ, সালেহ আহমদ, নাবেদ হোসাইন, আজাদ হোসাইন, ফখরুল ইসলাম, আব্দুল মালিক, সাইফুর রহমান, জিল্লুর রহমান, এবাদুর রহমান কবির, হুমায়ুন রশিদ রকি, মুহিব্বুল ইসলাম, আবু বকর, বাবলু মিয়া, মাছুম খান, শামসুল ইসলাম, সালেহ আহমদ, আলা উদ্দিন পাশা, শেখ রেদওয়ান হোসেন, কুতুব আল ফরহাদ, আব্দুর আজিজ লতিফি, এফকে জুনেদ প্রমুখ।
অভয়নগরে তাওহীদী জনতার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
অভয়নগর (যশোর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, মুসলমানদের প্রথম কেবলা মসজিদুল আকসার শহর জেরুজালেমকে ইহুদীদের রাজধানী ঘোষণার প্রতিবাদে অভয়নগর উপজেলার ধর্মপ্রাণ তাওহীদী জনতার শিল্প শহর নওয়াপাড়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
জানাগেছে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক মুসলমানদের প্রথম কেবলা মসজিদুল আকসার শহর জেরুসালেমকে ইহুদীদের রাজধানী ঘোষনা করার প্রতিবাদে শুক্রবার জুম্মাাবাদ শিল্প শহর নওয়াপাড়ায় তাওহীদী জনতার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলটি যশোর-খুলনা মহাসড়ক প্রদক্ষিন করে। মিছিল শেষে নওয়াপাড়া বাস স্টান্ডে উপজেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা গোলাম মাওলার সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ইমাম পরিষদের সাধারন সম্পাদক মাওলানা তৈয়েবুর রহমান, নওয়াপাড়া সার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল গনি সর্দার, ইমাম পরিষদের নেতা মাওলানা মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ। পরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়।
জেরুজালেমে ইসরাইলহানা সহ্য করবে না বিশ্ব : আল্লামা মাসঊদ
জেরুজালেমে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, জেরুজালেমে ইসরাইলীহানা সহ্য করবে না বিশ্ব। ইসরাইল সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ফিলিস্তিনীদের উপর চেপে বসেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প জেরুজালেমে ইহুদী তান্ডবের পক্ষে যে সমর্থন ব্যক্ত করেছেন তা বুমেরাং হবে। বিশ্বজনমতের বিরুদ্ধে কোনো কিছুই টিকে থাকে না উল্লেখ করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন টিকেনি। আরও কত রাজরাজারা হারিয়ে গেছে। জেরুজালেমে ইসরাইলের হঠকারী সিদ্ধান্ত তাদের জন্যই বিপদ ডেকে আনবে।
ট্রাম্পের ঘোষণার মাধ্যমেই জেরুজালেম ইসরাঈলের রাজধানীর বৈধতা পাবে না দাবি করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, মুসলমানদের প্রথম কেবলা বায়তুল মোকাদ্দাস জেরুজালেমে অবস্থিত। মুসলিম বিশ্বের এই পবিত্র স্থানকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া ইসরাইল। ইসরাইলের হাত থেকে জেরুজালেমকে রক্ষা করতে হবে। রক্ষা করতে হবে পবিত্র স্থান বায়তুল মোকাদ্দাস।
মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্যই জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী ঘোষণা করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান আল্লামা মাসঊদ এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার প্রচার সম্পাদক মাওলানা মাসঊদুল কাদির স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
আল্লামা মাসঊদ বিবৃতিতে বলেন, ইসরাইল মার্কিন মদদে যেভাবে জ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।