পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : সীমাহীন ভোগান্তিতে রাজধানীর বাসিন্দারা অতিষ্ঠ। সমস্যার পাহাড় জমে রীতিমতো নাগরিক দুর্যোগের সৃষ্টি হয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, পরিবেশের বিপর্যয়, খাদ্য ও পণ্যসামগ্রীর ভেজালে ঢাকাবাসীর জীবন শঙ্কিত করে ফেলেছে। তার উপর চলতে পথে যানজট, গ্যাস স্বল্পতায় টিমটিম চুলা, পানির জন্য হাহাকার, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধময় রাস্তাঘাট, মেরামতের নামে নগরজুড়ে রাস্তার খোঁড়াখুঁড়ি, উন্নয়নের ধকল, পানিবদ্ধতা, একদিকে যানবাহন সংকট অন্যদিকে লাখ লাখ রিকশার রাজত্ব, ভাড়া নিয়ে হট্টগোলসহ ঘর থেকে বেরুলেই আরো শতেক জঞ্জাল-যন্ত্রণার মুখোমুখি হতে হয় নগরবাসীকে। সবমিলে দুর্বিসহ ঢাকার জীবন। ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট এর তালিকায় ২০১৪ সালে বিশ্বে বসবাসের সবচেয়ে অযোগ্য শহর হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। এর আগের বছরও এই মন্দ তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। নগর পরিকল্পনাবিদ প্রফেসর মো: নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর ঢাকা শহরে ৪/৫ লাখ করে নতুন মানুষ যুক্ত হচ্ছে। ভৌত অবকাঠামোগত, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, শিক্ষা, আবাসন, পরিবহনসহ সব সেক্টরেই সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। এতো সমস্যা মোকাবেলা করা অনেক কঠিন। তারপরও সরকার চেষ্টা করছে। বেশ কিছু স্বল্প মেয়াদী, দীর্ঘমেয়াদীসহ মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। সেগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে হয়তো কিছুটা সুফল আসবে।
শঙ্কিত জীবন
পুরান ঢাকার ১০টি থানা এলাকাজুড়ে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে ২৫ হাজার কল-কারখানা ও গুদাম। অতি সরু অলিগলি পেরিয়ে ৭০ ভাগ বাড়িঘর পর্যন্ত পৌঁছে না এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। বাসাবাড়ির বারান্দা বা ঠিক গেটের সামনেই বিপজ্জনকভাবে ঝুলে আছে বৈদ্যুতিক তার, জনবহুল রাস্তার মাঝেই খোলা আছে জোড়াতালির বিদ্যুৎ সংযোগ, ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল। এমন হাজারো বিপদ যেন পদে পদে। হাজারীবাগের ট্যানারির বিষাক্ত পরিবেশের সাথে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ দুই সহস্রাধিক বাড়ি। এগুলো নিয়ে পুরান ঢাকাবাসীর সীমাহীন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এই বুঝি তা মাথায় ভেঙ্গে পড়ে। প্রায় দু’পাশ ঘিরে থাকা বুড়িগঙ্গা নদী এখন বিষাক্ত কেমিক্যালের আধার। হাজারীবাগ ও লালবাগের ট্যানারির কঠিন ও তরল বর্জ্যরে দূষণে ওই এলাকাসহ আশপাশের সমগ্র অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পরিবেশের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ৩০ লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত। নানা রোগে আক্রান্ত তারা। বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাসের প্রভাবে ক্ষয়ে যাচ্ছে নিত্যব্যবহার্য আসবাবপত্র। বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়েছে ঘরের টিন ও দালান কোঠায়। কাঁসা, পিতল, এ্যালুমিনিয়াম এমনকি অলঙ্কারও ক্ষয়ে যাচ্ছে দিন দিন। হাজারীবাগ এলাকার টিনের ঘরের বেড়া, চালাগুলো অসংখ্য ছিদ্র ও বিবর্ণ হয়ে আছে। স্থানীয় লোকজন জানান, রাসায়নিক বিষক্রিয়ার ভয়াবহতায় লোহা ও টিনে মরিচা ধরে ক্ষয়ে যাচ্ছে। এর সাথে অপরিকল্পিত ও ঝুঁকিপূর্ণ দুই সহস্রাধিক ভবন মানুষকে তটস্ত রেখেছে। ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও ওই সব বাড়ি ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যাতায়াতে ভোগান্তি
ঢাকার প্রধান সমস্যা এখন যাতায়াত সমস্যা। ভয়াবহ যানজট এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী। ভাঙ্গাচোরা রাস্তাঘাট, মেরামতের নামে নগরজুড়ে রাস্তার খোঁড়াখুঁড়ি, উন্নয়নের নামেস বিভিন্ন নির্মাণ কাজের ধকল, যাত্রী তুলনায় যানবাহনের তীব্র সংকট, ভাড়া নিয়ে নিত্য হট্টগোলসহ নানা কারণেই যাত্রী-পথচারীরা প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। দুঃসহ যানজটে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে থাকছে। স্থবির হয়ে পড়ছে জীবনযাত্রা। মাঝে মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ছে অলিগলি মহল্লাতেও। নগরীর একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে যাতায়াতে পুরোটা দিন লেগে যায়। বাস-মিনিবাস, প্রাইভেটকার, রিকশা ব্যবহার করেও কতক্ষণে গন্তব্যে পৌঁছবেন তা কেউ হলফ করে বলতে পারেন না। রীতিমত অনিশ্চিত যাত্রা। বাস্তবে রাস্তার তুলনায় গাড়ি বেশি এবং গাড়ির তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। আছে লাখ লাখ রিকশার রাজত্ব। নগরীতে চলাচলের ক্ষেত্রে ডাইরেক্ট, বিরতিহীন, গেটলক, টিকিট কাউন্টার সিস্টেম, সিটিং নামে বিভিন্ন পরিবহন যাত্রীদের সঙ্গে নানারকম প্রতারণা করে চলছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, যেখানে সেখানে গাড়ি থামানো যাত্রী উঠানো, যাত্রীদের সাথে পরিবহন শ্রমিকদের দুর্ব্যবহারের কারণে বাকবিতন্ডা লেগেই আছে।
দখলের রাজত্বে নগরজুড়ে হাট-বাজার
প্রভাবশালীদের দখলদারিত্বে গোটা রাজধানীজুড়েই তৈরী হয়েছে হাট-বাজার। পুরান ঢাকার নর্থ-সাউথ রোডের অর্ধেকটা অনেক আগেই দখল করে নিয়েছে সংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। সিদ্দিকবাজার থেকে ইংলিশ রোডের মোড় পর্যন্ত সড়কে রড-সিমেন্ট, আসবাবপত্রের দোকানের মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা। সেখানে মাত্র ৩/৪ হাত সড়ক ফাঁকা রেখে মালামাল লোড-আনলোডের জন্য পাশেই পার্কিং করা থাকে সারি সারি মিনিট্রাক, ঠেলা গাড়ি। রাস্তা দখল করে রাখার জন্য কোনো যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে না। কমলাপুর স্টেডিয়াম থেকে মুগদা-বৌদ্ধমন্দির গেট পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যস্ততম বিশ্বরোডে দুই সারিতে গাড়ি রাখা হয়। বিভিন্ন কাউন্টার সার্ভিস বাস, কোচ, ট্রাক, লং ট্রেইলারসহ পণ্যবাহী গাড়িগুলো সারিবদ্ধভাবে পার্কিং করে রাখায় ওই চার কিলোমিটার এলাকা দিনভর ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে। নিউ মার্কেট ও নীলক্ষেত এলাকার ফুটপাত আর ফুটওভারব্রিজ জুড়ে রয়েছে হকারদের আধিপত্য। দোকান বসিয়ে পুরো ব্রিজকেই বাজার বানিয়ে ফেলা হয়েছে। গাউসিয়া মার্কেটের সামনে রাস্তা সারাক্ষণই ময়লা-আবর্জনার স্তূপ পড়ে থাকে। বঙ্গবাজারের সামনে থেকে শুরু করে গুলিস্তান-কাপ্তানবাজার পর্যন্ত রাস্তাটি ডাস্টবিন, বাজার, নাকি টার্মিনাল তা বোঝা মুশকিল।
গ্যাস সংকটে নাকাল জীবন
এক সময় কয়েকটি এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও গ্যাস সংকট এখন পুরো রাজধানীজুড়েই। কোনো এলাকায় দুপুরের পর গ্যাস আসে। আবার কোনো কোনো এলাকায় আসে রাতে। যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, মুগদা, বাসাবো, সবুজবাগ এলাকায় বাসিন্দাদের রান্না করতে হয় গভীর রাতে। রাত ছাড়া গ্যাসের দেখা মেলে না। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় আছে বহুতল ভবনের বাসিন্দারা। যারা যত উঁচুতে থাকেন গ্যাস সমস্যা ভুগছেন তারা প্রত্যেকেই। পুরনো ঢাকার রহমতগঞ্জ লেন, নারিন্দা, মুশুরিখোলা, জেলখানা রোড, তাঁতীবাজার, শাখারিবাজার, কাজী আলাউদ্দিন রোডে সারাদিনই গ্যাস সরবরাহ থাকে, কিন্তু চুলা জ্বলে টিমটিম করে।
পানির জন্য হাহাকার
ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়া, জলাশয় দখল, ওয়াসা কর্তৃপক্ষ নতুন পাম্প বসানোর জায়গা না পাওয়ায়, বেশিরভাগ স্থানে পানির লাইনগুলো পুরোনো হওয়ায়, পাইপ লাইনে ফাটল, এক পানির লাইনের সঙ্গে স্যুয়ারেজ লাইনের সংযোগ এক হওয়ায় ঢাকার মানুষ প্রতিদিনই পানি সংকটে ভুগছে। কোনো কোনো এলাকায় ব্যবহার করতে হচ্ছে দুর্গন্ধ পানি। বর্ষাকালের কিছুদিন পানি সংকট কম থাকলেও সারাবছরই রাজধানীবাসীকে পানি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এর সাথে কোনো কোনো এলাকায় ড্রেনের পানি ওয়াসার লাইনে ঢুকিয়ে দেয়ায় দুর্গন্ধযুক্ত পানি বের হচ্ছে। এ পানি ফুটালেও দুর্গন্ধ দূর হয় না।
বর্ষা এলেই খোঁড়াখুঁড়ি
সারা বছরই বিভিন্ন রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি চলে এই নগরীতে। তারপরও বৃষ্টি শুরু হলেই যেনো এই খোঁড়াখুঁড়ি বহুগুণে বেড়ে যায়। এতে নাগরিক দুর্ভোগ বাড়ে আরও কয়েকগুণ। পানির পাইপ, স্যুয়ারেজের লাইন, গ্যাস লাইন বসানো যেটার জন্যই রাস্তা খোঁড়া হোক না কেন, কাজ শেষে সেই রাস্তা আর ঠিক করার কোনো দায় থাকে না কারও। দায়সারাভাবে কোনো রকম মাটি ফেলেই কাজ শেষ করে সবাই।
পদে পদে জঞ্জাল বিপত্তি
রাজধানীর সড়ক, ফুটপাথ, অলিগলিসহ পথচারীদের চলাচলের রাস্তাগুলো নানা জঞ্জাল স্তূপ আর নির্মাণ সামগ্রীতে আটকা পড়ে আছে। কোন কোন রাস্তার বেশিরভাগ অংশই দখল করে মাসের পর মাস পণ্য সামগ্রীর স্তূপ বানিয়ে রাখা হয়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হচ্ছে নগরবাসীকে। রাস্তাজুড়ে এলোপাতারীভাবে ফেলে রাখা রড, বালু, তার, ইট, পাথর, লোহালক্করে প্রায়ই আঘাত পাচ্ছে লোকজন, রিকশা-গাড়ির দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। বারবার আবেদন-নিবেদন করেও জনবহুল রাস্তাগুলো থেকে অবৈধভাবে রাখা নির্মাণ সামগ্রীর জঞ্জালসমূহ অপসারণ করা যাচ্ছে না। রাস্তা দখল ও যত্রতত্র পণ্য সামগ্রী ফেলে রেখে জনচলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি রোধকল্পে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ ভূমিকা পালন করার কথা। কিন্তু নির্দিষ্ট দায়িত্বটি পালনের ক্ষেত্রে উভয় সংস্থার গাফিলতির অভিযোগ ভুক্তভোগিদের। যদিও দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নগরীতে পরিচ্ছন্ন রাখার অঙ্গীকার করেছেন। নগরবাসী আরেক দুর্ভোগের নাম শব্দদূষণ। আবাসিক এলাকার মধ্যেই মিকচার মেশিনে অনর্গল ইট, পাথর, সুরকি ভাঙ্গানো এবং সিমেন্ট, বালু সংমিশ্রনের একটানা ঘর ঘর শব্দে কানে কথা শোনা যায় না। রাতে নির্মাণ কাজের তৎপরতায় ঘুম হারাম হয়ে যায়।
ময়লা-আবর্জনায় দুর্গন্ধময় পরিবেশ
নগরীর প্রধান প্রধান রাস্তার উপরে যেন সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে রীতিমত ময়লা-আবর্জনার হাটবাজার বসানো হয়েছে। একেকটি স্থানে ৭/৮টি করে কন্টেইনার টার্মিনাল বসিয়ে অলিগরি, বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা তুলে এনে সেসব কন্টেইনার ডাস্টবিনে রাখা হচ্ছে। এ যেনো ঘরের ময়লা রাস্তায় প্রদর্শনের মতো। কুড়িল, মালিবাগ, প্রগতি সরণি, বারিধারা ও মধ্যবাড্ডা এলাকায় এ ধরনের ময়লার বাজার আছে ঠিক রাস্তার মধ্যখানেই। যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নীচে ধুলা-বালু ও ময়লা-আবর্জনাযুক্ত নোংরা পরিবেশ। রাস্তাগুলোও চলাচলের অযোগ্য। এ যেনো আলোর নীচে অন্ধকার।
অলিতে গলিতে মাদকের হাট
নগরীর প্রতিটি এলাকার অলিতে গলিতে এখন মাদকের হাট বসে। দিনে রাতে সমানে চলে উঠতি বয়সী সন্ত্রাসীদের আড্ডা। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত তাদের ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে। অথচ এদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই বিপদ। প্রতিটি এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদেরকে প্রশয় দেয় প্রভাবশালী রাজনীতিকরা। এ কারণে মানুষ মুখ বুঝে সব কিছু সহ্য করতে বাধ্য হচ্ছে। পুলিশ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ।
খাদ্য ও পণ্যসামগ্রীতে ভেজাল
নগরীর কোন খাদ্যজাতদ্রব্যটি ভেজালমুক্ত তা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারবে না। চাল, ডাল, তেল, সাবান, আটা থেকে শুরু করে জীবন রক্ষাকারী ওষুধেও ভেজাল। এ ছাড়া ব্যবহার্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও নকল হচ্ছে। টাকা দিয়ে কিনতে গিয়ে আসল নকলের বিভ্রান্তিতে ভুগছে মানুষ। ফরমালিনযুক্ত মাছ আর কার্বইডযুক্ত ফল খেতে খেতে নগরবাসী যেনো অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এখন শীতের মৌসুমে গুড়েও ভেজাল দেয়া হচ্ছে। পুরান ঢাকার শত শত ভেজাল কারখানায় তৈরী হচ্ছে লাইট, ফ্যান, মশার কোয়েল, ঘি, পানের জর্দ্দা, সেমাই, নুডুলসসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী। আর ভেজাল মিনারেল ওয়াটার কারখানা তো নগরীজুড়েই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তিন বছর আগেও ভেজালবিরোধী অভিযান জোড়ালোভাবে পরিচালিত হলেও এখন মাঝে মধ্যে পরিচালিত হয়। এতে করে ভেজালকারবারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ মাস্তানদের তৎপরতা
সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাস্তানদের উৎপাত রাজধানীবাসীর অন্যতম প্রধান সমস্যা। এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে এই তিন শ্রেণীর উৎপাত নেই। নতুন বাড়ি করা থেকে শুরু করে মেয়ের বিয়ে দিতে গেলেও চাঁদা দেত হয়। সাথে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানতো আছেই। শীতের মৌসুমে এখন চলছে পিকনিকের চাঁদা। এলাকা ও পাড়া-মহল্লায় প্রভাবশালী, সন্ত্রাসী, দখলদার, চাঁদাবাজরা পিকনিকের নাম করে চাঁদা দাবি করছে। এই টাকার অঙ্ক এলাকাভেদে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে চাঁদা দাবির ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। তার উপর তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীরে টেলিফোনে চাঁদাদাবির ঘটনা তো আছেই। এ ছাড়াও ছিনতাইকারী, পকেটমার, মলমপার্টি, অজ্ঞানপার্টির তৎপরতা নগরবাসীকে সব সময়ই আতঙ্কিত করে রাখে। সাম্প্রতিককালে বেড়ে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনাও নগরবাসীকে তটস্ত রেখেছে। ঘর থেকে বেরিয়ে একজন মানুষ জীবন নিয়ে ঘরে ফিরতে পারবে কি না তার কোনো গ্যারান্টিও নেই এই নগরে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।