পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মোঃ হুসাম উদ্দিন আল হুমায়দী, বার্মিংহাম থেকে : ইউকে লতিফিয়া ফুলতলী কমপ্লেক্সের উদ্যোগে গত মঙ্গলবার বিকেলে মিলাদুন্নবী (স:) উপলক্ষে শানে মুস্তাফা কনফারেন্স ভাবগাম্ভীর্য ও বিশাল আয়োজনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির ব্যবস্থাপনায় এবং আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকে মিডল্যান্ডস ডিভিশনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন লতিফিয়া ফুলতলী কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান প্রিন্সিপাল মাওলানা এম এ কাদির আল হাসান এবং পরিচালনা করেন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির কো-অর্ডিনেটর মাওলানা রফিক আহেমদ ও প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি মাওলানা মোঃ হুসাম উদ্দিন আল হুমায়দী।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আনজুমানে আল ইসলাহর সভাপতি আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাহরাইন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর শায়েখ ড. নাজি ইবনে রাশিদ আল-আরাবী আল আজহারী, দারুল হাদীস লতিফিয়া লন্ডনের মুহাদ্দিছ হযরত মাওলানা নজরুল ইসলাম। শায়েখ ড. নাজি ইবনে রাশিদ আল-আরাবী আল আজহারী’র আরবী ভাষায় প্রদত্ত বক্তব্য ইংরেজীতে অনুবাদ করেন দারুল হাদীস লতিফিয়া লন্ডনের শিক্ষক মাওলানা মারুফ আহমদ।
সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্যান্ডওয়েল কাউন্সিলের মেয়র আহমেদ উল হক এমবিই, বাংলাদেশ মাল্টিপারপাস সেন্টারের চেয়ারম্যান আলহাজ নাছির আহমদ, বার্মিংহাম সিরাজাম মুনিরা জামে মসজিদের খতিব হাফিজ মাওলানা সাব্বির আহমদ, লতিফিয়া ফুলতলী কমপ্লেক্সের ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ কাজী আংগুর মিয়া, হাজী কামরুল হাসান চুনু মিয়া, সেক্রেটারি মোঃ মিসবাউর রহমান, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোঃ খুরশিদ উল হক, মোঃ আব্দুল হাই, ক্যাশিয়ার আমিরুল ইসলাম জামাল, জমজম ট্রাভেলস এর সত্ত¡াধিকারী মোঃ মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা রুকনুদ্দীন আহমদ, আলহাজ আবুল হোসাইন সাত্তার মিয়া, বার্মিংহাম আল ইসলাহ’র প্রেসিডেন্ট মাওলানা আতিকুুর রহমান, মাওলানা নোমান আহমদ, মাওলানা আবুল হাসান, আলহাজ গয়াস মিয়া, আলহাজ গৌছ আহম, সুফী ইদ্রিস আলী।
কনফারেন্সে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, মানুষের জন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হচ্ছে রাসুল (সঃ) এর প্রতি ভালোবাসা। রাসূল (সঃ)-এর প্রতি মহব্বত ছাড়া কারো ঈমান পরিপূর্ণ হয় না। তিনি আরো বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে ভালবাসতে চাইলে তাকে অনুসরণ করতে হবে। আর তাঁকে অনুসরণ করতে হলে তার সুমহান চরিত্র এবং আল্লাহ প্রদত্ত অতুলনীয় মর্যাদা সম্পর্কে জানতে হবে। এ জন্য তিনি সকলকে বেশি বেশি করে এ জাতীয় মাহফিল আয়োজনের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, আমাদের সকলকে দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে আল্লাহর হাবিবের অনন্য আখলাক তুলে ধরতে হবে। এ প্রসঙ্গে লতিফিয়া ফুলতলী কমপ্লেক্সের প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব বিবেচনায় সকলকে এই প্রতিষ্ঠানটিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য সহযোগিতার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শায়েখ ড. নাজি ইবনে রাশিদ আল-আরাবী আল আজহারী বলেন, রাসূল (সঃ) হচ্ছেন গোটা মানবজাতির সরদার। আল্লাহ তাবারাকা ওতায়ালা তাঁকে গোটা বিশ্ব জাহানের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ হিসেবে প্রেরণ করেছেন। তিনি রাসূল (সঃ)-এর একটি হাদীস উল্লেখ করে বলেন, রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি রাসূল (সঃ) তোমাদের নিকট তোমাদের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি এমন কি দুনিয়ার সকল মানুষের চেয়ে অধিকতর প্রিয় না হই। তিনি আরো বলেন, মানবতার মুক্তির দিশারী মুহাম্মদ (সঃ)-কে মহান আল্লাহ তায়ালা জগতবাসীর জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত ও নিয়ামত স্বরূপ প্রেরণ করেছেন। তাঁর আগমনে দুনিয়ার সকল কিছু খুশি ও আনন্দ প্রকাশ করেছিলো। একমাত্র অখুশি হয়েছিলো ইবলিশ শয়তান। আজও বিশ্বের ঈমানদার আশেকে রাসূলগণ তাঁর আগমনের মাস রবিউল আওয়ালে খুশি প্রকাশ করেন এবং মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট শুকরিয়া আদায় করেন- অর্থ্যাৎ, তাঁরা ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) উদযাপন করেন। তিনি আরেকটি হাদীস উল্লেখ করে বলেন, আবু লাহাব কাফির সরদার হয়েও ঈমান গ্রহণ না করে শুধুমাত্র আপন ভাতিজা হিসেবে আল্লাহর নবীর আগমনে খুশি প্রকাশ করায় প্রতি সোমবার তার কবর শান্তি লাভ করছে। তিনি পরিশেষে বলেন, এতে প্রমাণিত হয় মুমিন হিসেবে আল্লাহর হাবীবের আগমনে খুশি প্রকাশ করা একান্ত কর্তব্য। কনফারেন্স এর শেষে বিশ্বের মুসলমানদের শান্তি, সমৃদ্ধি ও মুক্তি কামনায় বিশেষ মুনাজাত করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।