পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিভিন্ন স্থানে অবরুদ্ধ পাকিস্তানি বাহিনী
আজ ৮ ডিসেম্বর। যুদ্ধ পরিস্থিতি পুরোটাই দখলদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রতিকূলে চলে যায়। সকল দিক থেকে মিত্র ও মুক্তিবাহিনী এগিয়ে আসতে থাকে। তাদের লক্ষ্য রাজধানী ঢাকা। বিভিন্ন স্থানে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা। কোন কোন দল চেষ্টা করছিল ঢাকার দিকে ফেরার। কোথাও তারা পরাজিত বা নিরুপায় হয়ে আত্মসমর্পণ করে। মোটকথা, যুদ্ধে জয়লাভের সব আশা ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে যায়। এ অবস্থায় আজকের দিনে আকাশবাণী থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পাকিস্তানি বাহিনীর উদ্দেশে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান প্রচার শুরু হয়। ঢাকায় ভারতীয় জঙ্গি বিমানের হামলা তীব্রতর করার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে বিমান থেকে আত্মসমর্পণের আহ্বান সম্বলিত লিফেলেট ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে ঢাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ওদিকে পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রী নুরুল আমিন এদিন বার্তা সংস্থার সাথে তার প্রথম সাক্ষাতকারে বলেন, পাকিস্তান ধৈর্য ও পরিকল্পনা নিয়ে শত্রæর উপর চরম আঘাত হানবে। বেসামরিক প্রতিরক্ষা জোরদার করার লক্ষ্যে এদিন ঢাকায় একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়। প্রতিরক্ষা তহবিলে উদারহস্তে দান করার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের আবেদন রেডিও-টিভিতে প্রচার করা হতে থাকে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, পাক-ভারত যুদ্ধে নিজেদের জড়িত না করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এদিন ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট নিক্সন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিসিঞ্জারের মধ্যকার আলোচনায় মার্কিন সপ্তম নৌবহরকে বঙ্গোপসাগরে প্রেরণ নিয়ে প্রথম আলোচনা হয়। পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে জুলফিকার আলী ভুট্টো জাতিসংঘে পাকিস্তানের পক্ষে কথা বলার জন্য নিউইয়র্ক রওনা হন এদিন। মার্কিন সিনেটর কেনেডি সব পরিস্থিতির জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেন। ১৯৭১ সালের এদিনে কুমিল্লা, বরিশাল, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, গৌরিপুর, পিরোজপুর, ভালুকা, পটুয়াখালী, গাইবান্ধা, মীরসরাই, বাবুগঞ্জ, মির্জাগঞ্জ প্রভৃতি এলাকা শত্রæমুক্ত হয়।
লোহাগড়া হানাদার মুক্ত দিবস আজ
নড়াইল জেলা সংবাদদাতা জানান, আজ ৮ ডিসেম্বর নড়াইলের লোহাগড়া থানা পাকহানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে লোহাগড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে লোহাগড়া থানাকে হানাদার মুক্ত করে উড়িয়েছিল লাল সবুজের পতাকা।
আজ ভালুকা মুক্ত দিবস
ভালুকা (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, আজ ভালুকা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সনের এই দিনে ভালুকা থেকে পাক ও হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে আফসার বাহিনী ভালুকা সদরসহ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা শত্রæমুক্ত করে।
ময়মনসিংহ সদর দক্ষিণ তৎকালিন ঢাকা সদর উত্তর (বর্তমান গাজীপুর জেলার শ্রীপুর) মুক্তিযুদ্ধে আফসার উদ্দিন আহাম্মেদ উপজেলার পারুলদিয়া গ্রামের আ: হামিদের নিকট থেকে একটি রাইফের সংগ্রহ করে ১৭ এপ্রিল এ অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেন। সামরিক বাহিনীর আদলে গঠন করা হয় আফসার বাহিনী। সাড়ে চার হাজার সদস্যের এ বিশাল বাহিনী ২শ’ ৩৫ দিনের যুদ্ধ শেষে ৮ ডিসেম্বর ভালুকা পাকহানাদার বাহিনী মুক্ত করেন।
রামগড় হানাদার মুক্ত দিবস
রামগড় (খাগড়াছড়ি) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ৮ ডিসেম্বর রামগড় হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের এদেশীয় দোসরদের সহায়তায় রামগড় উপজেলার ক্যাম্প অগ্নিসংযোগ, লুটপাট বহু নারীকে ধর্ষণসহ হাজার হাজার নিরীহ জনসাধারণকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
রামগড়ের স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে গেরিলা কৌশলে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য গোটা বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১ নম্বর সেক্টরের আওতাধীন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অবস্থিত পার্বত্য অঞ্চলে রামগড় ছিল অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।