পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) নিয়োগ-বিধিমালা, ১৯৮৬ রহিত করে নতুন নিয়োগবিধি, ২০১৬ চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নতুন নিয়োগ বিধিমালার সারাদেশে ৭ হাজারের মতো অফিস সহকারী আজও তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে উন্নীত হতে পারেননি। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী পদোন্নতি তালিকাতেই তাদের বাতিল করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এ নিয়োগ-বিধিতে ব্যাপক অসামঞ্জস্য রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস)। আগামী ৯ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিতভাবে এই দাবি জানায় সংগঠনটি।
বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস) সদস্য সচিব মো: আতাউর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, আমি ১৯৮৪ সালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী পদে যোগদান করেছি। নানা জটিলতায় পদোন্নতি না পেয়ে আজও একই পদে আছি। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৫ সালে অফিস সহকারী পদে যোগদান করে পদোন্নতি পেয়ে বর্তমান তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সহকারী সচিব হিসেবে চাকরি করছেন মো: নজরুল ইসলাম। আর আমি আগের জায়গায় আছি। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী পদোন্নতি তালিকাতেই তাদের রাখা হয়নি। উল্টো প্রস্তাবিত নিয়োগ-বিধি ২০১৬ কে বিষ-ফোঁড়ার মতো চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমরা তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিতভাবে স্বারক্ষলিপি প্রদান করবো।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রচলিত নিয়মে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে কর্মরত কর্মচারীদের পদমর্যাদাসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র জেলা প্রশাসনের কার্যালয় ও এর আওতাধীন অফিস গুলোতে কর্মরত কর্মচারীদের নিয়োগবিধি সংশোধনের ক্ষেত্রে পদোন্নতিসহ বিবিন্ন সুযোগ-সুবিধা সংকুচিত ও ক্ষেত্রমতে বঞ্চিত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) নিয়োগ-বিধিমালা, ২০১৬ তে প্রধান সহকারী, ট্রেজারী হিসাব রক্ষক ও উচ্চমান সহকারী পদ বাদ দিয়ে শুধুমাত্র অফিস সুপার ও সিএ কাম উচ্চমান সহকারী হতে পদোন্নতির মাধ্যমে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির প্রস্তাব করা হয়েছে। নিয়োগ বিধি, ১৯৮৬ তে এক বা একাধিক ফিডার পদে কমপক্ষে ৫ বছরের চাকরির যোগ্যতা ছিল, কিন্তু প্রস্তাবিত নিয়োগ বিধি-২০১৬ তে ফিডার পদে কমপক্ষে ৫ বছরের চাকরিসহ কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি অথবা ফিডার পদে ৮ বছরের চাকরিসহ স্বীকৃত বোর্ড হতে উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। প্রস্তাবিত বিধিতে উচ্চমান সহকারী পদ বাদ দিয়ে প্রধান সহকারী, ট্রেজারী হিসাব রক্ষক, সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদ হতে পদোন্নতির মাধ্যমে অফিস সুপার পদে পদোন্নতির প্রস্তাব করা হয়েছে। তাছাড়া অফিস সুপার পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদটি নতুনভাবে সংযোজন করা হয়েছে। উচ্চমান সহকারী পদ বাদ দিয়ে প্রধান সহকারী, ট্রেজারী হিসাব রক্ষক, সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদ হতে পদোন্নতির মাধ্যমে সিএ কাম উচ্চমান সহকারী পদে পদোন্নতির প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে অফিস সহকারী বা সমমানের পদ হতে উচ্চমান সহকারী, প্রধান সহকারী, সিএ কাম উচ্চমান সহকারী অফিস সুপার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি রুদ্ধ করা হয়েছে এবং ওই পদধারীরা পদোন্নতি হতে বঞ্চিত হবেন।
প্রস্তাবিত নিয়োগবিধিতে চতুর্থ শ্রেণীর পদ সংকুচিত করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে প্রস্তাবিত নিয়োগবিধিতে বলা হয়েছে- পদোন্নতি/অবসর/মৃত্যু বা অন্য কোন কারণে চতুর্থ শ্রেণীর পদ শূন্য হলে আউটসোর্সিং নীতিমালা-২০০৮ অনুযায়ী শূন্যপদ পূরণ করতে হচ্ছে। অর্থাৎ আগে চতুর্থ শ্রেণীর পদ নিয়মিত হিসেবে ছিল। কিন্তু নতুন বিধিতে ওই পদ বিলুপ্ত করা হবে। জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের সকল নির্বাচন কর্মকান্ডে সম্পৃক্তসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মোবাইল কোর্ট, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, আশ্রয়ণ ও আদর্শগ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়ন, সরকারের রাজস্ব আদায়সহ ই-নথির মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা বাস্তবায়নের চালিকাশক্তি হিসেবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও এর আওতাধীন অফিসসমূহে কর্মরত কর্মচারীদের নিয়োগ-বিধি সংশোধনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বৈষম্যের সৃষ্টি করা হচ্ছে। ফলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও এর আওতাধীন অফিস গুলোতে কর্মরত কর্মচারীদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অফিস সহকারী পদ হতে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়ে উচ্চমান সহকারী হয়. প্রত্যেক কালেক্টরেটের আওতায় কমপক্ষে ১০০ জন করে সাকুল্যে সম্ভাব্য ৬ হাজার ৪০০ জন অফিস সহকারী আছে। উচ্চমান সহকারী প্রত্যেক কালেক্টরেটে ১০/১৫টি করে সম্ভাব্য ৭৬৮টি পদ আছে। প্রধান সহকারী/ট্রেজারী হিসাব রক্ষক পদ প্রত্যেক কালেক্টরেটে একটি করে ১২৮টি পদ রয়েছে। অন্যদিকে সারা দেশে ৪৭০টি অফিস সুপার পদ আছে। যে কারণে কম সংখ্যক প্রধান সহকারী /ট্রেজারী হিসাব রক্ষক পদ হতে বেশি সংখ্যক অফিস সুপার পদে পদোন্নতি প্রদান সম্ভব নয়। অন্যদিকে সাঁট মুদ্রাক্ষরিক প্রত্যেক কালেক্টরেটের আওতায় উপজেলা ওয়ারী একটি করে এবং কালেক্টরেটে ১/২টি করে সম্ভাব্য ৫৯৮টি পদ আছে, যে কারণে সাঁটমুদ্রাক্ষরিকগণ অফিস সুপার পদে দ্রুত অল্প সময়েই পদোন্নতি পেয়ে অফিস সুপার/প্রশাসনিক কর্মকর্তা হবে; অন্যদিকে উচ্চমান সহকারী/অফিস সহকারী কয়েক হাজার কর্মচারী পদোন্নতি হতে বঞ্চিত হবে, অর্থাৎ উক্ত পদ দুইটি বøক পদ হয়ে যাবে। প্রস্তাবিত প্রশাসনিক কর্মকর্তার ফিডার পদে পাঁচ বছর চাকরি করতে হলে অফিস সহকারী পদধারীদেরকে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়ে অধিকাংশ কর্মচারী অবসরে গমন করবে ফলে অফিস সহকারীগণের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি প্রাপ্তির সুযোগ সীমিত হয়ে যাবে। অফিস সহকারী পদে নিয়োগ যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, অথচ পদোন্নতির ক্ষেত্রে স্নাতক করা হয়েছে; যা যথার্থ নয়। তাছাড়া বর্তমান নিয়োগ বিধিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তার ফিডার পদ গুলো অর্থাৎ অফিস সুপার, সিএ কাম উচ্চমান সহকারী, প্রধান সহকারী, ট্রেজারী হিসাব রক্ষক ও উচ্চমান সহকারীর এক বা একাধিক পদে পাঁচ বছর চাকরিকাল হতে হবে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে প্রধান সহকারী, ট্রেজারী সহকারী ও উচ্চমান সহকারীগণ প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি প্রাপ্তিতে দীর্ঘ সময় বিলম্বিত হওয়ায় পদোন্নতি হতে বঞ্চিত হবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দফতরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদে (উচ্চমান ও নিুমান সহকারী, সাঁটলিপিকার-কাম কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহকারী, ডেসপাস রাইডার, দফতরি ও এমএলএসএস ইত্যাদি) জনবল নিয়োগে অভিন্ন বিধিমালা করতে গত জানুয়ারী মাসে উদ্যোগ শুরু করে সরকার। এতে বিভিন্ন সংস্থায় একই সময়ে একই পদে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের চাকরি স্থায়ীকরণ, নিয়মিতকরণ ও পদোন্নতিতে নানা অসামঞ্জস্য ও জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ জটিলতা দূর করতে ‘মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও সংযুক্ত অধিদফতর, পরিদফতর, দফতর এবং সংবিধিবদ্ধ সংস্থা ও কর্পোরেশনের কমন পদের নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৬’ চ‚ড়ান্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত বিধিমালাটি জানুয়ারী মাসেই প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উপস্থাপন করা হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, রাজউকে ইউডি পদে ৮ বছর চাকরি করলে অফিস সুপার হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া যায়। অথচ একই পদে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরে ১২ বছর চাকরি করার পর ওই পদে পদোন্নতি মেলে। এ ধরনের বহু নজির রয়েছে সরকারি দফতরে। আর এসব নিয়ে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি সরকারের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঝামেলা এড়াতে কমন পদের জন্য অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়নের এ উদ্যোগ নেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, বর্তমানে চতুর্থ শ্রেণীর অনেক পদে মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের শীর্ষ ব্যক্তিরা নিজেদের পছন্দমতো প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এসব ক্ষেত্রে অনেক সময় লিখিত পরীক্ষা, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে মৌখিক পরীক্ষাও নেয়া হয় না। প্রস্তাবিত খসড়ায় বলা হয়েছে, এসব পদে নিয়োগ দিতে হলে অবশ্যই নিয়োগ কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে সুপারিশ প্রণয়ন করবে। পাশাপাশি কোন পদে কত নম্বরের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হবে তাও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন দফতরের ১৩টি কমন পদের মধ্যে রয়েছে উচ্চ ও নিম্নমান সহকারী, প্লেইন পেপার কপিয়ার, ডুপ্লিকেটিং মেশিন অপারেটর, সাঁটলিপিকার, সাঁটমুদ্রাক্ষরিক, অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক, মুদ্রাক্ষরিক কাম অফিস সহকারী, ডেসপাস রাইডার, দফতরি, নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও এমএলএসএস। সচিবালয়ে উল্লিখিত পদের জন্য বিশেষ নিয়োগ বিধিমালা ২০১০ অনুসরণ করা হয়। এছাড়া সচিবালয়ের ক্যাডারবহির্ভূত গেজেটেড কর্মকর্তা ও নন-গেজেটেড কর্মচারী নিয়োগে বিধিমালা ২০১৪ অনুসরণ করা হয়। এক সংস্থার সঙ্গে অন্য সংস্থার নিয়োগবিধির কোনো মিল নেই। বরং প্রায় ক্ষেত্রেই তা বিপরীতধর্মী। ফলে বিভিন্ন সংস্থায় একই সময়ে একই পদে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তির চাকরি স্থায়ীকরণ, নিয়মিতকরণ এবং পদোন্নতিতে কেউ এগিয়ে কেউ বা পিছিয়ে পড়ছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।