পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় পবিত্র আল-কুরআনের সুরা নিসার ১৩৫ নম্বর আয়াতের বাংলা তরজমার পাঠের মধ্য দিয়ে বক্তব্য শেষ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে দেয়া বক্তব্যে শেষে খালেদা জিয়া বলেন, আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি পবিত্র কুরআনের সুরা নিসার ১৩৫ নং আয়াতের বাংলা তরজমা উল্লেখ করে। বাংলা তরজমায় তিনি বলেন, : “হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান কর, তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাঙ্ক্ষী তোমাদের চাইতে বেশী। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ-কর্ম সম্পর্কেই অবগত।” ( সূরা ৪ : আয়াত ১৩৫)। মঙ্গলবার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে শেষ দিনের বক্তব্যে খালেদা জিয়া পবিত্র কুরআনের এই আয়াত পাঠ করে আদালতে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ দেন।
বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে খালেদা জিয়া বলেন, আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ এবং এ মামলায় বেকসুর খালাস পাওয়ার যোগ্য। আমি এই মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছি এবং আপনার আদালতে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। খালেদা জিয়া বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশীদ নিরপেক্ষতার বিধান লঙ্ঘন করে কোনো রূপ দালিলিক প্রমাণ ছাড়া ১৫ দিনের মাথায় আমার বিরুদ্ধে একটি হয়রানিমূলক ও মিথ্যা রিপোর্ট দাখিল করেন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি নিরপেক্ষ থাকলে এ রূপ অনুমান নির্ভর সাক্ষ্য দেয়ার সুযোগ থাকত না। তিনি বলেন, এই মামলার অনুসন্ধান বা তদন্তকালে পি.ডব্লিউ ১ হারুন-অর-রশীদ এমন কোনো দালিলিক প্রমাণ এবং সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারেন নাই যার মাধ্যমে তিনি দেখাতে পারেন যে, আমি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠন করেছি। অথচ কোনো রকম প্রমাণাদি ছাড়া সাক্ষী হারুন-অর-রশীদ মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র এবং তার জবানবন্দিতে আমার বিরুদ্ধে এই ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছেন যে, আমি নাকি আমার পুত্রদ্বয় এবং আমাদের আত্মীয় মোমিনুর রহমানকে দিয়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠন করেছি। আমাদের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ, বিশেষ করে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং তার মন্ত্রী পরিষদের কতিপয় সদস্য প্রায়শই আমাকে জড়িয়ে জনসম্মুখে মিথ্যা বক্তব্য প্রচার করেন। পি.ডব্লিউ ১ হারুন-অর-রশীদের জবানবন্দিতে আমার বিরুদ্ধে যেসব মনগড়া ও মিথ্যা বক্তব্যে দিয়েছেন তার সাথে সেই সব অপপ্রচারণার একটি সামঞ্জস্যতা পাওয়া যায়। যা থেকে আপনি সহজেই অনুধাবন করতে পারবেন যে, হারুন-অর-রশীদকে একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে এই মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা, মামলার বাদী এবং তাকেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে আমার বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হয়েছে।
বেগম জিয়া দালিলিক প্রমাণ ছাড়া মনগড়া অভিযোগ ও সাক্ষ্যদানের বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, সাক্ষী হারুন-অর-রশীদ তার জবানবন্দিতে বলেছেন যে, আমি নাকি অনুদানের অর্থ থেকে দুই কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অনুকূলে প্রদান করি। সাক্ষীর এই বক্তব্য কোনো দালিলিক প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত নয়। একজন অনুসন্ধানকারী কিংবা তদন্তকারী কর্মকর্তা কোনো দালিলিক প্রমাণাদি ছাড়া কীভাবে এমন মনগড়া অভিযোগ ও বক্তব্য উপস্থাপন আনয়ন করতে পারেন, তা সত্যিই বিস্ময়কর।
খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে বলেন, পি.ডব্লিউ-৩১ ও পি.ডব্লিউ-৩২ উভয়েই তাদের অনুসন্ধানকালীন রিপোর্টে তাদের সংগৃহীত জবানবন্দির বরাতে উল্লেখ করেছেন যে, কুয়েতের আমীর অনুদানটি প্রদান করেন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠন করার জন্য। তদানীন্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এরূপ তহবিল এনেছেন এই মর্মে উভয় সাক্ষীই সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। এই তথ্যটি কোনরূপ বিরুদ্ধ সাক্ষ্য দ্বারা অপ্রমাণিত হয় নাই। আসামী পক্ষের একটি নোটারাইজড সার্টিফিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশস্থ কুয়েত এ্যাম্বাসি হতে প্রদত্ত অকাট্য প্রমাণ বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। সেই প্রত্যয়নপত্রে কুয়েত এ্যাম্বাসি থেকে বলা হয়েছে যে, সংশ্লিষ্ট অনুদান কুয়েতের আমির জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের জন্য অনুদান হিসেবে প্রদান করেন। এইরূপ অনুদান প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল নামে কোনোদিনই প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রেরিত ও গৃহীত হয় নাই। রাষ্ট্রপক্ষের পি.ডব্লিউ-১৯ তার সাক্ষ্যে বলেন, মামলার তদন্তকারী হারুন-অর-রশিদ তাকে ২০০৮ সনের জুন মাসে ফটিকছড়ি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা পদে কর্মরত থাকাবস্থায় একটি নোটিশ প্রদান করেন। তিনি তদন্তকারী কর্মকর্তার নোটিশ প্রাপ্ত হয়ে বলেন, সর্বশেষ ১৯৯২ সনের জুন মাস হতে ১৯৯৩ সনের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দফতরে হিসাবে রক্ষক পদে তিনি চাকরি করেন। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চাকরি ছেড়ে দিয়ে প্রথমে একটি বেসরকারি কলেজে এবং পরবর্তীতে সরকারি কলেজে যোগদান করেন। এরপর ১৯৯৪ সনে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন। এই সাক্ষীর স্বীকৃত মতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে কর্মরত প্রধানমন্ত্রীর সচিবের একান্ত সচিব পি.ডব্লিউ-১৪ সৈয়দ জগলুল পাশা তাকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ডেকে নেন এবং তিনি নির্দেশিত হয়ে আপডেট এন্ট্রি লেখেন। এই আপডেট এন্ট্রি লেখার সময় এই সাক্ষী বিসিএস ক্যাডারে সরকারি কলেজে চাকুরিরত ছিলেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়ার ৯/১০ মাস পরে আমাকে ডেকে নিয়ে আসে।” তিনি আরও বলেন, “বস্তু প্রদর্শনী-ওওও (রোমান থ্রি) সিরিজ ও ওওওঅ-( রোমান থ্রিএ)-তে কোনো নোটশীট ছিল না এবং তিনি কোনোদিন নোটশীট দেখেননি।” পি.ডব্লিউ-২০ তার সাক্ষ্যে স্বীকার করেন যে, পি.ডব্লিউ-৩২ তার কাছ থেকে মামলার সংশ্লিষ্ট এতিম তহবিলের মূলনথি চাইলে তিনি তা সরবরাহ করতে পারেননি। পি.ডব্লিউ-৩২ প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠিয়েছিলেন এবং এই সাক্ষী দুটি পত্র দিয়ে জানিয়েছিলেন যে, মূল নথিটি পাওয়া যাচ্ছে না। পি.ডব্লিউ-৩১ তার জেরায় বলেন, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড রমনা কর্পোরেট শাখা হতে প্রেরিত পত্র প্রদর্শনী-৪৮-এ বলা হয়েছে, উক্ত শাখায় পরিচালিত প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল চলতি হিসাব নম্বর ৫৪১৬-এর জন্য চাওয়া নি¤œলিখিত দীর্ঘ সময়ের পুরাতন রেকর্ডপত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বিধায় সরবরাহ করা যাচ্ছে না। পি.ডব্লিউ-২১ তার সাক্ষ্যে বলেন, আমি দায়িত্ব পালনকালে এতিম তহবিল সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো মূলনথি কোনো সময়ই দেখিনি। ত্রাণ তহবিল, স্বেচ্ছাধীন তহবিল, গোপনীয় তহবিল সংক্রান্ত বিষয় একান্ত সচিব সাহেব দেখতেন। প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিলের কোনো মূল ফাইল আমি কোনো দিন দেখিনি। রাষ্ট্রপক্ষের বিভিন্ন সাক্ষী যেমন পি.ডব্লিউ-৯, পি.ডব্লিউ-১০, পি.ডব্লিউ-১১, পি.ডব্লিউ-১২, পি.ডব্লিউ-১৩, পি.ডব্লিউ-১৪, পি.ডব্লিউ-১৯, পি.ডব্লিউ-২০, পি.ডব্লিউ-২১ ও পি.ডব্লিউ-২৬ যে সাক্ষ্য বিজ্ঞ আদালতে প্রদান করেছেন তার বরাত দিয়ে এবং সকল প্রকার উপস্থাপিত দালিলিক সাক্ষ্যের আলোকে এটা দৃশ্যমান হবে যে, আমি প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল সংক্রান্ত বিষয়ে কোনোদিনই কোনোভাবেই সম্পৃক্ত ছিলাম না। প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল নামে কোনোদিন কোনো তহবিল ছিল না এবং এটা অস্তিত্ববিহীন। এর কোনো একাউন্টের প্রমাণপত্র, কোনো মূল নথিপত্র, কোনো নোটশীট উপস্থাপিত হয়নি। কতকগুলি সই-স্বাক্ষরবিহীন ঘষামাজা ফাইল নম্বর উল্লেখ করে কিছু রেকর্ড প্রস্তুত করে দুদক কর্মকর্তা এই মামলায় আমাকে হয়রানিমূলক ভাবে জড়িত করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন।
তিনি বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট একটি প্রাইভেট ট্রাস্ট। এই প্রাইভেট ট্রাস্টটির কোনরূপ আর্থিক অনিয়ম হয়েছে বলে ট্রাস্ট সংশ্লিষ্ট কারো কোনো অভিযোগ নাই। সরকারের কোন ফান্ড দ্বারা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠন হয় নাই। প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল নামে কোনোদিনই কোনো বাস্তবভিত্তিক কোনো তহবিল ছিলো- এ জাতীয় ডকুমেন্ট প্রধানমন্ত্রীর দফতর হতে আসে নাই এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতর হতে কোনো অভিযোগও কেউ করেন নাই। নিয়মিত ও আইন বর্ণিত পন্থায় কোনো অডিট আপত্তিও বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করা হয় নাই। আমাকে, জিয়া পরিবারকে এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে সম্পূর্ণরূপে হয়রানি করার প্রয়াস হিসেবে এবং রাজনীতি থেকে দূরে রাখার অপপ্রয়াস হিসেবে অনুমান নির্ভর ও কল্পিত অভিযোগে এই মামলায় মিথ্যা বর্ণনায় আমাকে জড়িত করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আমি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো সেটেলর বা ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য নই। এই ট্রাস্ট গঠন, এর তহবিল সংগ্রহ, ট্রাস্ট পরিচালনা এবং কোনো ধরনের কোনো লেনদেনের সঙ্গেও আমার ব্যক্তিগতভাবে বা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কখনো কোনো রকম সম্পর্ক ছিলো ও নেই কোন পর্যায়ে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে বগুড়ায় জমি ক্রয় বা আশুলিয়ায় জমি ক্রয়-বিক্রয়ের সাথেও আমার কোনো সম্পর্ক নাই। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের এস.টি ডি. হিসাব নং-৭ খোলা এবং ঐ হিসাবের লেনদেন পরিচালনা করা ইত্যাদির সাথেও আমার কোনো সম্পর্ক নাই।
তিনি বলেন, সাক্ষী হারুন-অর-রশীদ তার জবানবন্দিতে বলেন যে, “অথচ দীর্ঘ সময় কথিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো হিসাব নিকাশ না করে বা দেশের কোনো প্রতিষ্ঠিত অডিট ফার্মকে দিয়ে দীর্ঘ ১৪ বছরে কোনো অডিট না করিয়ে উক্ত কথিত ট্রাস্টের নামে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় আত্মসাতের ব্যবস্থা করেন।” এই মামলায় কোনো সাক্ষীই এমন কোনো তথ্য প্রমাণ দেন নাই যে, আমি এই ট্রাস্টের সাথে জড়িত ছিলাম। অথচ, সাক্ষী হারুন-অর-রশীদ একজন অনুসন্ধানকারী ও তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে কোনো দালিলিক প্রমাণ ছাড়া আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে এইরূপ মনগড়া সাক্ষ্য দিয়েছেন। ফলে আমার বিরুদ্ধে তার প্রদত্ত অসত্য সাক্ষ্য আইনগতভাবে বিবেচনা করার কোনো সুযোগ নাই বলে আমি দাবি করছি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সাক্ষী জবানবন্দিতে বলেছেন, আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নাকি একটি অস্তিত্ববিহীন ট্রাস্ট গঠন করে অন্যান্যের সহযোগিতায় অসৎ উদ্দেশ্যে পে-অর্ডারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের একাউন্ট অপারেশনের মাধ্যমে উক্ত হিসাব থেকে সম্পূর্ণ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাতের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করি। সাক্ষীর এই বক্তব্য অসত্য, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি আরো বলেছেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া অন্যায়ভাবে লাভবান হয়েছেন বা অন্যকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে তার নিজস্ব পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল নামীয় তহবিল গঠন করেন।” তিনি আরো বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া অন্যান্যদের সহযোগিতায় ও যোগসাজশে অবৈধভাবে নিজে লাভবান হওয়ার ও অন্যকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী পদে থেকে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করে আত্মসাৎ করেন বা আত্মসাতের কাজে সহযোগিতা করেন।” সাক্ষীর এই বক্তব্যসমূহ সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তার এইসব বক্তব্য ও গুরুতর অভিযোগ প্রমাণের জন্য তিনি দালিলিক কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ ও আদালতে দাখিল করতে পারেননি। সাক্ষ্য আইনের বিধানমতে এরূপ সাক্ষ্য সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে অপরের আঙ্গুলি হেলনে আমার বিরুদ্ধে কাল্পনিক মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করলে বা নিজে নিরপেক্ষ থাকলে এইরূপ অনুমান নির্ভর সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ ছিল না। কারণ, আমি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠন করিনি। কাজেই আমার সৎ কিংবা অসৎ কোনো উদ্দেশ্য থাকার সুযোগ নেই। আমি এই ট্রাস্টের তহবিল সংগ্রহ, বণ্টন এবং কোনো রকম ব্যাংকিং লেনদেনের সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত ছিলাম না। কাজেই এর মাধ্যমে নিজে লাভবান হওয়ার বা অন্য কাউকে লাভবান করারও কোনো প্রশ্ন উঠতে পারেনা।
দুদক কর্মকর্তা নিরপেক্ষতা লঙ্ঘন করে কোনো দালিলিক প্রমাণ ছাড়া ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন বলে দাবি করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। চাকরিতে পদোন্নতি ও ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক মহলের ইচ্ছা ও নির্দেশ অনুযায়ী এসব করেছেন তিনি। আমি এই মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছি। বিচারকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাসহ অন্যান্য বিচার ব্যবস্থার ফলাফল সাক্ষ্যনির্ভর। কেবল দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন অনুসন্ধানকারী এবং পরবর্তীতে তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা অভিযোগপত্রের উপর নির্ভর করে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করার কোনো নিয়ম নেই। তিনি বলেন, আমাদের পারিবারিক বাসস্থান ৬ মঈনুল রোড, এখানে আমার পরিবারের সবাই থাকতেন। এটা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন নয়। আমি আমার পদে থাকার সময় কারও মাধ্যমে আমার পদের প্রভাব খাটাইনি। আমি কাউকে কোনো অন্যায় আদেশ প্রদান করিনি। আমি আমার পদে থাকার সময় কারও কোনো অর্থের দ্বারা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হইনি। কাউকে অনৈতিকভাবে লাভবান করিনি। আমি আমার পদে আসীন থেকে নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। কোনো আইন ভঙ্গ করিনি ও কোনো অপরাধ করিনি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।