পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর, নারায়ে রিসালাত ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ)’ প্রভৃতি স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত ছিল গত শনিবার নগরীর রাজপথ-জনপথ। বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নবীপ্রেমিক ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা সামিল হন জশনে জুলুসে।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উদযাপন উপলক্ষে আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় এ সর্ববৃহৎ জশনে জুলুসে নেতৃত্ব দেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ। তার সাথে ছিলেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাশেম শাহ ও আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ শাহ। জুলুসটি নগরীর ষোলশহরস্থ আালমগীর খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়বিয়া হতে সকাল ৮টায় শুরু হয়ে নগরীর বিবিরহাট, মুরাদপুর, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, চন্দনপুরা, দিদার মার্কেট, সিরাজুদৌলাহ রোড, আন্দরকিল্লা, মোমিন রোড, জামাল খান, প্রেসক্লাব, গণি বেকারি, চট্টগ্রাম কলেজ, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, মুরাদপুর হয়ে ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা ময়দানে গিয়ে মিলাদুন্নবী (সাঃ) মাহফিলে মিলিত হয়। চল্লিশ লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ জুলুস অনুষ্ঠিত হয়।
জুলুস শেষে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা ময়দানে আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাশেম শাহ। প্রধান বক্তা ছিলেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ শাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।
সমাবেশে প্রধান অতিথি আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর পক্ষ থেকে করুণা ও রহমতের বারতা নিয়ে এ পৃথিবীতে আগমন করেন। তিনি পৃথিবীতে এসে বিভ্রান্ত মানব জাতিকে সত্যের দিশা দিয়েছেন, আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। মহানবীর আগমন আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য অফুরন্ত নেয়ামত। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে আল্লামা তৈয়ব শাহ (রহঃ) এ জুলুসের প্রবর্তন করেছিলেন। আজ চট্টগ্রামের এ জশনে জুলুস একদিকে যেমন বিশ্বের সর্ববৃহৎ জুলুসে পরিণত হয়েছে অপরদিকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৪৫টি দেশে এ জুলুস রাষ্ট্রীয় বা বেসরকারিভাবে উদযাপিত হচ্ছে।
আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ শাহ বলেন, নবী প্রেমে উজ্জীবীত হয়ে চট্টগ্রামবাসীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যেভাবে জুলুসকে সফল করেছেন তাতে আমরা অভিভূত। তিনি বলেন, মহানবীর (সাঃ) অতুলনীয় আদর্শকে ধারণ করে ইসলামি বিধানের আলোকে জীবন গঠনে আমাদের পথপ্রদর্শন করেছেন আল্লমা সৈয়দ আহমদ শাহ (রহঃ) ও আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ (রহঃ)।
বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ, আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাশেম শাহ ও আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ শাহকে মুবারকবাদ জানিয়ে বলেন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে তাদের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে যে স্মরণকালের বৃহত্তর জুলুস অনুষ্ঠিত হয়েছে তা আমাদের গৌরবান্বিত করেছে। এ জুলুম আজ চট্টগ্রামের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান বলেন, বাংলার মানুষ দেশপ্রেম এবং নবীজির মুহাব্বতের সর্বোচ্চ পরাকাষ্ট প্রদর্শনে কোন ভুল করেন না। এদেশের মানুষ বিশ্ব মানবতার কান্ডারী মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)’র প্রতি যে ভালোবাসা ও প্রেম প্রদর্শন করার লক্ষ্যে জুলুসে অংশগ্রহণ করেছে তা এককথায় অতুলনীয়।
মাহফিলে আনজুমানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জুলুসের নেতৃত্বদানকারী ও অতিথিসহ লাখো ধর্মপ্রাণ সুন্নি মুসলমানদের অভিনন্দন জানান। তিনি আনজুমানের এ জুলুস সফলে সহযোগিতার জন্য ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, মেয়র আ জ ম মাছির উদ্দিন, প্রশাসনসহ আনজুমান ও গাউসিয়া কমিটির নেতৃবৃন্দদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মাহফিল শেষে আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘ হায়াত, ঢাকা উত্তরের মেয়র মরহুম আনিসুল হকের রুহের মাগফেরাত কামনা, অসুস্থ চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর রোগমুক্তিসহ দেশ, জাতি ও মুসলিম মিল্লাতের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধ কামনা করে মোনাজাত করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।