পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অপার সম্ভাবনাময় মেঘনার উপকূলবর্তী নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি, শিল্প, মৎস ও পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে কৃষি, মৎস ও পর্যটনে সমৃদ্ধ অঞ্চলটি বিশেষভাবে পরিচিত। সুষ্ঠু পরিবেশ, সড়ক ও নৌপথের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বিদ্যমান থাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে এখানে বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
এসব প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১৫/২০ হাজার বেকারের কর্ম সংস্থানের সূযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার দাবি দীর্ঘদিনের। বিগত ২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নোয়াখালী সফরকালে মাইজদী হাউজিং মাঠে আয়োজিত জনসভায় নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। নোয়াখালীতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় প্রধানমমন্ত্রী কর্তৃক আশ্বাস প্রদানের প্রায় পাঁচ বছর অতিবাহিত হবার পথে। কিন্তু বহুল প্রত্যাশিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে তেমন কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছেনা।
এ প্রসঙ্গে নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জানায়, ভূমিহীনদের জন্য বন্দোবস্ত প্রদানের লক্ষে ২০০৮ সালে নিজেরা করিসহ ৮টি এনজিও হাইকোর্টে একটি রীট পিটিশন দাখিল করে। যার রীট নং-৫১৯৪। এতে ৩ টি উপজেলার ৮/১০ টি মৌজার বিশাল এলাকা রয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র সূবর্নচর উপজেলার ১২ হাজার একর ভূমি রয়েছে। আদালত কর্তৃক স্থিতাবস্থা বলবৎ রয়েছে। এছাড়া সূবর্নচর উপজেলায় অবস্থিত কয়েকজন মৎস খামার মালিক হাইকোর্টে ৬টি রীট পিটিশন দাখিল করে। ফলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগটি শুরুতেই হোঁছট খেয়েছে। উল্লেখ্য, নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলে প্রতি বছর বিশাল চরাঞ্চল জাগছে। এরমধ্যে মেঘনা বেষ্টিত হাতিয়া, সূবর্নচর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা অন্যতম। জেগে ওঠা চরাঞ্চলে বর্তমানে তিন লক্ষাধিক অধিবাসীর বসবাস। নোয়াখালী ছাড়াও অন্যান্য জেলার অন্তত ৫০ হাজার পরিবার এখানে বসবাস করছে। এদের অধিকাংশই জেলা প্রশাসন এবং সিডিএসপি’র মাধ্যমে ভূমির বন্দোবস্ত লাভ করে । এছাড়া শত শত আবেদন প্রক্রিয়াধীন আছে। অপরদিকে চরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এনজিও কর্তৃক ভূমিহীন পরিবারকে পূর্ণবাসনের নামে সুদ ও দাদন ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া ছাড়াও নিজেদের দলভারী করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিগত একাধিক জাতীয় নির্বাচনে কতিপয় এনজিও’র বিতর্কিত ভূমিকার অভিযোগ উঠে। অপরদিকে সূবর্নচর উপজেলায় বর্তমানে অর্ধশতাধিক বৃহৎ ও মাঝারি আকারের মৎস খামার রয়েছে। এগুলোর অধিকাংশ তেমন কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। নতুন চর জেগে ওঠার সাথে সাথে প্রভাবশালীরা বিশাল এলাকা দখল করে মৎস খামার গড়ে তোলে। এতে সরকার বিপূল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, নতুন চরাঞ্চল জেগে উঠলে তার দায়দায়িত্ব সরকারের নাকি এনজিও’র কিংবা প্রভাবশালী মহলের? ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত প্রদানসহ যাবতীয় বিষয় জেলা প্রশাসন দেখভাল করে থাকে। এছাড়া রাষ্ট্রীয় স্বার্থে কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য ভূমি নির্ধারন করে থাকে জেলা প্রশাসন। সুতরাং এসব কাজে এনজিওদের চাইতে প্রশাসনের মাথাব্যাথা বেশী। নোয়াখালীর চরাঞ্চলে এযাবত হাজার হাজার ভূমিহীন পরিবারকে স্থায়ী পূর্ণবাসন এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারী প্রতিষ্ঠান স্থাপনে সহযোগীতা প্রদান করে আসছে জেলা প্রশাসন। র্এ ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ গ্রহণ করলেও আদালতে মামলার কারণে উদ্যোগটি ফাইলবন্দী হয়ে আছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পেশাজীবীর সাথে আলাপকালে তারা এ প্রতিবেদককে জানায়, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জেলার দক্ষিণাঞ্চলে সরকারের বিপূল পরিমান খাসভূমি রয়েছে। স্থানীয় এনজিও ও প্রভাবশালী মহল চাচ্ছেনা এখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হোক। অথচ এখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হলে লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি এলাকার চেহারা পাল্টে যাবে। জানা গেছে, সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, মামলাভূক্ত ভূমির স্থলে জেলা প্রশাসন এখন চরবাটা ও চরক্লার্ক ইউনিয়নের অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জমি খুঁজছে। আর এতে করে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ শেষতক তিমিরেই থেকে যাবে । তাই দলমত নির্বিশেষে জেলাবাসী প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়ন চায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।