দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
প্রশ্ন : ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর উদাত্ত আহ্বান কি?
উত্তর : মহিমান্বিত মাহে রবিউল আউয়াল। এ মাসের ১২ তারিখে মহান আনন্দের সাথে উদযাপন করা হয় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। এই ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য, তামাম সৃষ্টির জন্য, নিখিল বিশ্বের জন্য, খোদার সারে খোদায়ীর জন্য পরম পুলকের পরম আনন্দের তথা সবচেয়ে বড় গৌরবের দিন। তাই এই দিন মুসলিম উম্মাহ দেশে দেশে, স্থানে স্থানে নানা ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। আয়োজন করা হয় ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে আনন্দ র্যালীর-এতে নবী (সা.)-এর উপর সালাত ও সালাম পাঠ করা হয়, নবী (সা.)-এর প্রশংসাসূচক কবিতা পাঠ করা হয়। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে আয়োজিত মোবারক অনুষ্ঠানে মুসলমানরা মুক্তহস্তে দান করেন। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল শেষে নবী (সা.)-এর আদর্শের উপর অটল-অবিচল থাকার এবং তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের দৃঢ় শপথ গ্রহণ করা হয়।
প্রতি বছর রবিউল আউয়াল মাস এলে আমাদের দেশে কোন কোন স্থানে মাসব্যাপী, কোন কোন স্থানে পক্ষকালব্যাপী, কোন কোন স্থানে সপ্তাহব্যাপী, কোন কোন স্থানে দিনব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিলের আয়োজন করা হয়ে থাকে। উক্ত মাহফিল গুলোতে বরেণ্য উলামায়ে কেরামগণ নবীজির আদর্শ সম্পর্কে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বয়ান পেশ করেন। এসব বয়ান আমরা মনোযোগ সহকারে শুনি।
নবী (সা.)-এর এ পৃথিবীতে আগমনের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে-মানুষ কীভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, কীভাবে পানাহার করবে, কীভাবে ঘুমাবে, কীভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করবে, কীভাবে আয়-ব্যয় করবে, কীভাবে পরিবার পরিচালনা করবে, কীভাবে সমাজ পরিচালনা করবে, কীভাবে রাজনীতি করবে, কীভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে-তা মানুষকে দেখানোর জন্য, বুঝিয়ে দেয়ার জন্য। নবীজি তাঁর ৬৩ বছর জীবনে মানুষকে তা পূর্ণাঙ্গভাবে দেখিয়ে দিয়েছেন, বুঝিয়ে দিয়েছেন। মূলতঃ নবীজির প্রতিটি কথা ও কাজ কিয়ামত পর্যন্ত আগত মানুষের জন্য মডেল স্বরূপ। যে কেউ নবীজির কথা ও কাজ তথা আদর্শের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ করবে সে সকল ক্ষেত্রে মুক্তি পাবে, তার সকল সমস্যার সার্থক সমাধান পেয়ে যাবে। আর এসব কথাগুলোই বুঝিয়ে দেয়া হয় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিলে।
আল্লাহপাক মানুষকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁরই ইবাদত করার জন্য। মানুষকে জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে এমনভাবে কাজ করতে হবে যাতে মানুষের প্রতিটি কাজই আল্লাহর ইবাদতরূপে গণ্য হয়। কেননা মানুষকে তার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের জন্যই আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতেই হবে। তাই একজন মানুষ পরিবার পরিচালনা করুক, সমাজ পরিচালনা করুক, রাজনীতি করুক, রাষ্ট্র পরিচালনা করুক-তার সবকিছুকেই ইবাদতে পরিণত করতে হবে। আর আল্লাহ প্রদত্ত রাসূল (সা.) প্রদর্শিত পন্থায় জীবন পরিচালনা করাকেই ইবাদত বলে। অর্থাৎ নবীজির আদর্শ ব্যতীত, নবীজির প্রদর্শিত পন্থা ব্যতীত মানুষের কোন কিছুই আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। নবীজির আদর্শের পূর্ণ অনুসরণ ব্যতীত মানুষ কোন কালে শান্তি ও মুক্তি পাবে না। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন করে মানুষ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নবীজির আদর্শ বাস্তবায়ন করুক-এটাই হচ্ছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর উদাত্ত আহ্বান।
উত্তর দিচ্ছেন : মাওলানা আব্দুল হান্নান তুরুকখলী
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।