পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী ও বরিশাল ব্যুরো : হঠাৎ দু’দিন বৃষ্টির পর মাঘের শীত যেন জেঁকে বসেছে। তাপমাত্রা খুব একটা না কমলেও সর্বনি¤œ ও সর্বোচ্চ ব্যবধান কমে যাওয়ায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। দিনের বেশির ভাগ সময় সুর্য থাকছে মেঘের আড়ালে। বইছে হিমেল হাওয়া। ফলে বিপযস্ত জনজীবন।
গতকাল ক্ষণিকের জন্য সূর্য এলেও তাতে ছিল না উত্তাপ। সারাদিন হিমেল হাওয়া আর সন্ধ্যার পর কনকনে ঠা-ায় কাঁপিয়ে তুলেছে পদ্মা পাড়ের ছিন্নমূল মানুষগুলোকে।
পথের ধারে খড়-কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করার দৃশ্য নজর এড়ায় না। শীতের তীব্রতা বাড়ায় বেড়েছে শীতজনিত রোগ-বালাই। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সূত্র জানায়, শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। আক্রান্তদের বেশির ভাগই ডাইরিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, হৃদরোগ, অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। প্রতিদিনই এই ব্যবধান কমছে। জানুয়ারি মাসের শেষার্ধে রাজশাহী অঞ্চলে ১ থেকে ২টি মৃদু (৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অথবা মাঝারি (৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
দক্ষিণাঞ্চলে জনজীবনে বিরূপ প্রভাব
এদিকে, গত কয়েকদিনের মেঘলা আকাশ ও হালকা বৃষ্টিপাতের পরে গতকাল সকাল থেকে রোদ ঝলমল আকাশে দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়া যথেষ্ট পরিচ্ছন্ন থাকলেও উত্তর পূবের হীমশীতল বাতাশে শীতের অনুভূতি যথেষ্ট বেড়ে যায়ে। ফলে জনজীবনেও এর বিরূপ প্রভাব পরে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনের সাথে গা হীম করা এ ঠান্ডায় অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া গতকাল দুপুরের পরে কেউই ঘর থেকে বের হননি। তবে গতকাল বরিশালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রার পারদ ১১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে স্থির ছিল। আগের দিনের তুলনায় যা প্রায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। তবে গত রাতে এবং আজ রাতে তাপমাত্রা আরো ১-২ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পাবার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আকস্মিকভাবেই ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাসের সাথে উত্তরের হীমেল হাওয়ায় শীতের অনুভূতি এতোটাই বেড়ে যায় যে, তা অনেকটাই গা হীম করা পরিবেশ সৃষ্টি করে। অথচ পূর্ণ রোদ নিয়ে আকাশে সূর্যের উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয়। গত সপ্তাহ খানেকের মধ্যে গতকালই সূর্যকিরণ কালও কিছুটা দীর্ঘ ছিল দক্ষিণাঞ্চলে। চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত তাপমাত্রা ১০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও নেমেছে বরিশালে। কিন্তু গত ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর মৌসুমে সর্বনি¤œ তাপমাত্রার ওই সময়ে বাতাসের দাপট না থাকায় তখন শীতের অনুভূতি কম ছিল।
আগের দু’দিনের মেঘলা অকাশ আর হালকা বৃষ্টির পরে গত কালের রৌদ্রকরোজ্জল দিনে উত্তরের হীমেল হাওয়ায় মাঘের শীতের পূর্ণ আমেজ নেমে আসে দক্ষিণাঞ্চলে। কিন্তু মাঘের এ শীত শিশু ও বয়ষ্কদের দুর্ভোগ ও শারীরিক ঝুঁকিও যথেষ্ট বৃদ্ধি করছে। চিকিৎসকগণ যতোটা সম্ভব শীতের এ ঠা-াকে এড়িয়ে বা বাঁচিয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষকরে শিশু ও বয়ষ্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকগণ। গত দিন কয়েকের শীতের বাড়তি অনুভূতি ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগকেও যথেষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে।
গত বুধবার হালকা বৃষ্টিপাতের পরে বৃহস্পতিবার ১ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় বরিশালে, যা শীতকালীন শাকসবজীসহ ইরি-বোরো, গম এবং আউশ ধানের জন্য যথেষ্ট উপকারী হলেও এ অঞ্চলের প্রধান খাদ্য ফসল আমন নিয়ে কৃষকরা যথেষ্ট বিপাকেই পড়েছেন। মাঘের এ সময়টিতে কিশানিরা ঘরে ঘরে উঠতি আমন ধান সিদ্ধ করাসহ তা খোলাতে শুকাতে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু পর পর বেশ কয়েকদিনের মেঘলা আবহাওয়ার পরে বুধ-বৃহস্পতিবারের হালকা বৃষ্টিতে সিদ্ধ করা ধান যেমনি ঘর থেকে বের করা যায়নি, তেমনি খোলা ভিজে যাওয়ায় সিদ্ধকরা আমন ধান নিয়ে ঘরে ঘরে চরম বিপাকে দক্ষিণাঞ্চলের কিশানÑকিশানিরা। গতকাল যথেষ্ট রোদ থাকলেও ভিজে যাওয়া খোলায় কোনো ধান শুকানো যায়নি। বৃষ্টি না হলেও খোলা তৈরি হতে আরো অন্তত দিন চারেক সময় লাগবে।
আবহাওয়া দফতরের মতে বঙ্গোপসাগরে স্বাভাবিক লঘুচাপ অবস্থান করছে। গত রাতে ও আজ রাতের তাপমাত্রা আরো ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পাবার কথা জানিয়ে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পাবার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।