Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নদী-ভূমি দখলের মতো ব্যাংকিং খাতেও দখলদারিত্ব চলছে

বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে বক্তারা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নদী দখল আর ভূমি দখলের মতো ব্যাংকিং খাতেও দখলদারিত্ব চলছে। যার কোনো বিচার হচ্ছে না। এ ধরণের ঘটনা সমাজের সর্বত্র বিরাজমান। এর প্রভাব পড়ছে সমাজ ব্যবস্থায়। দিনে দিনে সমাজে অসমতা তৈরি হচ্ছে, বৈষম্য বাড়ছে। এছাড়া টেকসই উন্নয়নের জন্য শক্ত রাজনৈতিক প্রতিশ্রæতির ঘাটতি রয়েছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে দু’দিনব্যাপী বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলন-২০১৭ এর সমাপনী দিনের প্রথম সেশনে প্যানেল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। সেশনে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী।
কাজী খলীকুজ্জামান বলেন, নদী আর ভূমি দখলের মতোই একের পর এক ব্যাংক দখল চলছে। যার কোনো বিচার নাই। এর ফলে তৈরি হচ্ছে অসমতা। বাড়ছে বৈষম্য। তিনি বলেন, আমরা টেকসই উন্নয়নের কথা বলে থাকি। তবে এজন্য শক্ত রাজনৈতিক প্রতিশ্রæতির ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া সবাইকে আর্থিক অর্šÍভূক্তির মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, আর্থিক অবকাঠামোতে দৃশ্যমান গতি আনতে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিক স্থিতিশীলতা ও টেকসই উন্নয়নের দিকে দেশকে এগিয়ে নেওয়া এর মূল উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই আন্তঃব্যাংক লেনদেনে মোবাইল ব্যাংকিং যুক্ত হয়েছে। এর ফলে প্রান্তিক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও ব্যাংকিং সেবার আওতায় আসছে। মোবাইল ব্যাংকিংকে বাংলদেশ ব্যাংক আরও গ্রাহক বান্ধব করতে চায়। এতে অর্ন্তভূক্তিমূলক অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসবে। এজন্য স্কুল ব্যাংকিং ছাড়াও আর্থিক খাতের বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে ডিজিটালাইজড বা শতভাগ স্বয়ংক্রিয় করাই এখন প্রধান উদ্দেশ্য।
দ্বিতীয় দিনের এই সেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বিআইবিএম এর চেয়ার প্রফেসর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, অবৈধ লেনদেন গুলোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গোয়েন্দা ইউনিট কাজ শুরু করেছে। এ ধরণের অবৈধ লেনদেন অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। কারণ অর্ন্তভূক্তিমূলক ব্যাংকিংয়ের বড় বাঁধা হচ্ছে এসব অবৈধ লেনদেন। মোবাইল ও এজেন্ট ব্যাংকিং অর্ন্তভূক্তিমূলক ব্যাংকিংয়ে গুরুত্বর্প্ণূ ভূমিকা রাখলেও এখন তা গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অবৈধ আর্থিক লেনদেন অর্ন্তভূক্তিমূলক ব্যাংকিয়ের বড় বাঁধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত বছর মোবাইল কোম্পানিগুলো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। কিন্তু বিটিআরসি কতৃপক্ষের আর্থিক লেনদেনের অনুমোদন না থাকায় এ আবেদনে সাড়া দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক ফোন কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা নয়। যার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মোবাইল কোম্পানিগুলোর আবেদন প্রত্যাখ্যান ছাড়া কোন বিকল্প ছিল না। অর্ন্তভূক্তিমূলক অর্থনীতির জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করা বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম দায়িত্ব।
এবারের বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে চারটি প্লানারি সেশনে ২০টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়েছে। দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞ, ব্যাংকার, গবেষক এবং শিক্ষার্থীরা এসব সেশনের আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। দুই দিনের সম্মেলনে সহ¯্রাধিক অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। এবারের বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে সহযোগিতা করছে ইউনাইটেড নেশন ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইউএনসিডিএফ)। এছাড়াও সহযোগিতা করেছে কিউ-ক্যাশ, এনরুট এবং আমরা নেটওয়ার্কস। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে-বণিক বার্তা, ঢাকা ট্রিবিউন এবং চ্যানেল ২৪। ২০১২ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে বড় এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে বিআইবিএম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী-ভূমি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ