Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বকেয়া পাওনা ঝুলছে

হাজীদের একশ’ কোটি টাকা

শামসুল ইসলাম : | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

হাবের দূর্বল নেতৃত্বে কর্ণপাত করছে না ধর্ম মন্ত্রণালয়
হাজীদের জমাকৃত প্রায় একশ’কোটি টাকার বকেয়া পাওনা বিগত চার বছর ধরে ধর্মমন্ত্রণালয়ে ঝুলছে। হাবের দূর্বল নেতৃত্বের কারণে এসব বকেয়া অর্থ হাজীদের ও হজ এজেন্সিগুলোর ভাগ্যে জুটছে না। একাধিক বেসরকারী হজ এজেন্সি’র স্বত্বাধিকারী এ অভিযোগ তুলছেন। ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হজ ও ওমরাহ মেলায় ধর্ম মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও তৎকালিন ধর্ম সচিব দু’মাসের মধ্যে এসব বকেয়া পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্ত হাবের পক্ষ থেকে এসব বকেয়া পাওনা ধর্ম মন্ত্রনালয় থেকে আদায়ের লক্ষ্যে বলিষ্ঠ কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ও এসব বকেয়া পাওয়া পরিশোধে গা’ছাড়া ভাব দেখাচ্ছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সিগুলোর মাঝে অসন্তোষ বাড়ছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আনিছুর রহমানের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়নি। কি কারণ ও কার স্বার্থে হাজীদের জমাকৃত একশ’কোটি টাকা স্ব স্ব হজ এজেন্সি’র মাঝে পরিশোধ করা হচ্ছে না তা’ কেউ কিছু বলতে পারছে না। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, হাজী ও হজ এজেন্সি’র জমাকৃত বকেয়া পাওনা পরিশোধে কোনো বাধা নেই। তার পরেও কেন এসব বকেয়া ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে না তা’ বোধগম্য নয়। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে হজ এজেন্সিগুলোর বকেয়া পাওনার মধ্যে রয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চার বছরের ৫০ রিয়াল করে ব্যাংক গ্যারান্টি, মক্কা-মদিনার বাস ভাড়া বাবদ জমাকৃত ৬০ রিয়াল এবং অব্যবহ্রত মুয়াল্লেম ফি’ জন প্রতি ২৫ হাজার টাকা করে ফেরাত দেয়ার কথা। আবাবিল হজ গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ মো: আবু ইউসুফ বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ দিন আটকে থাকা হাজীদের জমাকৃত অব্যবহ্রত মুয়াল্লেম ফি, ব্যাংক গ্যারান্টি’র ৫০ রিয়াল এবং বাস ভাড়া বাবদ ৬০ রিয়াল আদায়ে কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ছে না। তিনি বলেন, হাবের দূর্বল নেতৃত্বের কারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে জমাকৃত প্রায় একশ’ কোটি টাকা ২০১৪ সাল থেকে আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে হজ ও ওমরাহ মেলার অনুষ্ঠানে ধর্ম মন্ত্রী ও তৎকালিন ধর্ম সচিব এসব বকেয়া পাওনা দু’মাসের মধ্যে পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্ত কার স্বার্থে এসব জমাকৃত বকেয়া টাকা ফেরত দেয়া হচ্ছে না ত’া বোধগম্য নয়। তিনি উল্লেখিত বকেয়া পাওনা অনতিবিলম্বে পরিশোধের জন্য ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
হাবের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ও চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ গোলাম সরওয়ার ধর্ম মন্ত্রণালয়ে আটকেপড়া হজ এজেন্সিগুলোর বকেয়া পাওনা ফেরত না পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে এসব পাওনা এজেন্সিগুলোকে ফেরত দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সচিব আনিছুর রহমানের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। রাতে এ ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন-সচিব মো: হাফিজ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
হাবের মহাসচিব মো: শাহাদাত হোসাইন তসলিম রাতে ইনকিলাবকে বলেন, হাবের পূর্বের দূর্বল নেতৃত্বের কারণে চার বছরের জমাকৃত বিপুল পরিমান অর্থ ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এজেন্সি’র মালিকরা হাতে পায়নি। হাবের বর্তমান মহাসচিব তসলিম বলেন, হাবের বর্তমান কমিটি’র জোরালো প্রচেষ্টার কারণেই ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৭ সালের হজের মুয়াল্লেম ফি’র টাকার চেক লেখা হচ্ছে। শিগগিরই এসব বকেয়া পাওনা হজ এজেন্সিগুলো পেয়ে যাবে বলেও হাব মহাসচিব তসলিম আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সকল হজ এজেন্সি’র কাছে হাবের পক্ষ থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চাওয়া হবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে কে কত টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে। তার পরেই বকেয়া আদায়ের পথ সুগম হবে। হাব মহাসচিব বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় আমুল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ধর্ম মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিচ্ছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাজী

২৫ আগস্ট, ২০২২
১৮ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ