পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : জমির স্বল্পতা ও ভবিষ্যৎ জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখে পরিবেশবান্ধব বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য স্থপতিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের (আইএবি) নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থাপত্য হলো একটি সভ্যতার মাপকাঠি। প্রাচীন সভ্যতাকে চেনা বা জানার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে স্থাপত্য শিল্প। আজ আমরা যা কিছু নির্মাণ করছি, কয়েক শ’ বছর পর যদি এগুলো টিকে থাকে, তাহলে এগুলো আমাদের সময়কে ধারণ করবে।
তিনি বলেন, দেশের স্থপতিদের এমন স্থাপত্য নির্মাণ করতে হবে, যা টেকসই ও মজবুতের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব হবে। আমরা যা কিছু নির্মাণ করি না কেন, সেগুলোকে যেমন একদিকে হতে হবে ‘স্থায়িত্বশীল, পরিবেশবান্ধব’ অন্যদিকে তেমনি দৃষ্টিনন্দন। নান্দনিক বলেই মানুষ এখনো পুরোনো রাজবাড়ি, মসজিদ, মন্দির দেখতে ছুটে যায়। স্থাপত্য নির্মাণের আগে দেশি কনসালট্যান্টদের পরামর্শক নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাইরের দেশের কনসালট্যান্টদের চেয়ে আমাদের দেশের কনসালট্যান্টরা দেশের আবহাওয়া সম্পর্কে ভালো জানেন বা ভালো বোঝেন। তাই তাঁদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়াটা ভালো। ব্রিটিশ যুগে তৈরি লাল দালানগুলো বাংলাদেশের ঐতিহ্য বা সংস্কৃতিকে ধারণ করে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজন না থাকলে এসব ভেঙে ফেলা হবে। তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশ গোলামি করেছি দুই শ’ বছর। আর ব্রিটিশদের সব স্থাপনা আমাদের রক্ষা করতে হবে, এটা আমি মনে করি না। হয়তো প্রতীকী হিসেবে দু-চারটা রাখতে পারি। বাকিগুলো ভেঙে নতুন চিন্তা, নতুন চেতনায় ভালো ভালো ভবন নির্মাণ করতে হবে।’ কৃষি জমি রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতিকে আমরা গ্রাম থেকে উন্নত করতে চাই। শহরে ফ্ল্যাট হবে, বিল্ডিং হবে আর গ্রাম পড়ে থাকবে, গ্রামের মানুষ কুঁড়েঘরে থাকবে এটা যেন না হয়।
আমরা যখন সরকার গঠন করি তখন থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, একটা মানুষও কুঁড়ে ঘরে থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মকা- নিয়ে একটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণœ রেখে এবং ফসলি জমি রক্ষা করে অবকাঠামো নির্মাণ হবে; পাশাপাশি দেখতেও সুন্দর হবে। আবাসন বা শিল্পকারখানা নির্মাণে যেন জলাধার ভরাট না হয়, সেদিকে সচেতন হওয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রস্তাবিত একশ’টি ইকোনমিক জোন নির্মাণের পাশাপাশি এগুলোর সঙ্গে স্থাপন করা হবে বর্জ্য শোধনাগারও।
একটা দেশের আবহাওয়া, জলবায়ু, পরিবেশ সবকিছু মাথায় রেখেই একটা স্থাপনা হওয়া উচিত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যখন প্ল্যান করা হয় বা ডিজাইন করা হয়, আমাদের আর্কিটেক্টরাই তো ডিজাইন করেন, তাঁরা যদি একটু লক্ষ্য রাখেন খাল, নদী ভরাট না করে কীভাবে ডিজাইন করা যায়, তাহলে সত্যি আমাদের দেশটা রক্ষা পেতে পারে।
আমাদের দেশে বাড়ি ঘরে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা খুবই দুর্বল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ভবন নির্মাণের সময় পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের দিকে লক্ষ্য রাখতে স্থপতিদের প্রতি আহ্বান জানান। এতে এয়ার কন্ডিশনের ব্যবহার কমিয়ে আনা যাবে বলে তিনি মনে করেন। আজকের দিনে ভবন নির্মাণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল মন্তব্য করে স্থপতিদের ইটের পরিবর্তে অন্য কিছু ব্যবহার করা যায় কি না এবং নির্মাণ ব্যয় আরও কমানো যায় কি না, সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান।
ঢাকায় উন্নয়ন, বিশেষ করে পাকিস্তান আমল থেকে পরিবেশের কথা মাথায় না রেখে যে ‘অপরিকল্পিত’ উন্নয়ন হয়েছে তার সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা । তিনি বলেন, ঢাকা শহরে আগে অনেক খাল, নদী ও পুকুর ছিল। একেক সময় একেকটা ডিক্টেটর এসেছে; তাদের কেন যেন গাছ, নদী, পানির ওপর কেমন যেন একটা বৈরিতা থাকে। এটা আমি সব সময় দেখেছি। মতিঝিলের ঝিল ভরাট, পান্থপথের খাল বন্ধ করে বক্স কালভার্ট নির্মাণ এবং গুলশান ও ধানমন্ডি লেকে ‘ভরাট ও দখল’-এর কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তার সরকার আমলে জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের বিরোধিতার প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, মিন্টো রোডে একটি পুকুর ভরাট করে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ভবন করার প্রস্তাব এলে তা নাকচ করে দিয়েছিলেন তিনি। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি আবু সাঈদ এম আহমদ ও মহাসচিব কাজি এম আরিফ বক্তব্য দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।