Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

৭২১ ইউপিতে ভোট কাল - সংঘাত-সংঘর্ষে বাড়ছে শঙ্কা

প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আজিবুল হক পার্থ : রাত পোহালেই ৭২১ ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ করা হবে। এর আগে গতকাল বোরবার এসব ইউনিয়নে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে প্রচারণা। গতকালও নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত হয়েছে একজন। আহত হয়েছে আরো শতাধিক। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলের মধ্যে এসব সহিংসতায় ভোট নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। পুলিশি প্রহরায় আজ কেন্দ্রে যাবে নির্বাচনী সরঞ্জাম। সকাল থেকে সরঞ্জাম গ্রহণ করবেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। আজই নির্বাচনী চৌহদ্দি নির্মাণ করে কেন্দ্রেই অবস্থান করবেন তারা। ভোটের মাঠে সহিংসতা চলমান থাকলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে ভোট সুষ্ঠু হবে কোথাও কাউকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।
প্রচারণার শেষ দিনেও সংঘর্ষ
শেষ মুহূর্তের প্রচরাণাতে এসেও বেড়েছে সহিংসতা। গতকাল দেশের বিভিন্ন ইউপিতে সংঘর্ষ হয়েছে। প্রচারণা, গাড়ী বহরে হামলা ছাড়াও প্রার্থীদের বাড়ীতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন পৌরসভায় দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল রোববার প্রথম ধাপের ইউপিগুলোর প্রচারণার শেষদিনে সারা দেশে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ঘটেছে। পাবনার বেড়ায় আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে গহের মন্ডল (৩২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫ জন। ভোলার লালমোহনে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ধলিগৌরনগর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. জাকির হোসেন ভূইয়ার বাম হাতের কব্জি কেটে নিয়েছে আওয়ামী লীগের অপর মেম্বার প্রার্থী গিয়াস ভূইয়ার সমর্থকরা। পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার জলাবাড়ি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আশিষ কুমার বড়ালের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। ভোলার বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুল আমিন নীবর মিয়ার দু’টি নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাটোরের লালপুর উপজেলায় চংধুপইল ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থীর পোস্টার টাঙানোকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা, মারধর ও নির্বাচনী অফিসে হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির প্রার্থী গাজী মাসুদ হাসানকে মারধর করে গুরুতর আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার ব্যবহৃত গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়। বরগুনার বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. লিটন মোল্লার জ্বালানি তেলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি পুড়ে গেছে।
এদিকে নির্বাচনী আইনানুযায়ী কোনো নির্বাচনী এলাকার ভোটগ্রহণ শুরুর পূর্ববর্তী ৩২ ঘণ্টা, ভোট গ্রহণের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা এবং ভোটগ্রহণের দিন রাত ১২টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে উক্ত নির্বাচনী এলাকায় কোনো ব্যক্তি কোনো জনসভা আহ্বান, অনুষ্ঠান বা তাতে যোগদান করতে এবং কোনো মিছিল বা শোভাযাত্রা সংঘটিত করতে বা তাতে যোগদান করতে পারবেন না। একইসঙ্গে কোনো আক্রমণাত্মক কাজ বা বিশৃঙ্খলামূলক আচরণ করতে পারবেন না। এমনকি ভোটার বা নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত বা দায়িত্ব পালনরত কোনো ব্যক্তিকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে পারবেন না। এই বিধি লঙ্ঘন করলে অন্যূন ৬ মাস বা অনধিক ৩ বছরের কারাদ-ে দ-িত হবেন।
কোথাও কোনো ছাড় দেব না -ইসি
এ ধরনের অব্যাহত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মধ্যে রোববার ইসি সচিবালয়ে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেছেন, নির্বাচনে শুধু মুখের কথা নয়, বাস্তবেও কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম বরদাশত করা হবে না। এক্ষেত্রে অপরাধী যে পর্যায়ের হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা অবহেলা করলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, রোববার মাঝ রাত থেকে কোনো পক্ষ বা প্রার্থী প্রচারণা চালাতে পারবেন না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সদা সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কিছু কিছু স্থানে বিছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এটা আমাদের নজরে এসেছে। তাই পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছি, যেন সন্ত্রাসী কার্যক্রম শক্ত হাতে হ্যাল্ডেল করা হয়। এ সময় তিনি রাজনৈতিক নেতাদের নির্বাচনে সহিষ্ণুতার সঙ্গে অংশ নেওয়ারও আহ্বান জানান।
শাহ নেওয়াজ ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, আমরা প্রতি কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়োজিত করেছি। ভোটের দিন স্ট্রাইকিং ফোর্সও থাকবে। কাজেই আপনারা ভোট দিতে যাবেন। কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম সহ্য করা হবে না, সেভাবেই নির্দেশনা দিয়েছে। এরপরও কোনো অসুবিধা হলে আমাদের জানাবেন। শুধু মুখের কথাই নয়, আমরা বাস্তবেও কোনো ভাবেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম বরদাশত করবো না। এটা আমাদের অঙ্গীকার। কোথাও কোনো ছাড় দেবো না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা নির্বাচনে লাঞ্ছিত বা কোনো রকম হামলার শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেবো। এখানে কোনো আপোষের প্রশ্নই আসে না। নির্বাচন কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করতে চাই, তারা যেন মুখ বুঝে কোনো অন্যায় সহ্য না করেন। আমাদের নির্দ্বিধায় জানালে অবশ্য আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবো।
ভোট করা লাগেনি তাদের
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ইউপিতে প্রথম ধাপে ইতোমধ্যে ৫৪ জন চেয়ারম্যান, ১৭৯ জন সাধারণ সদস্য ও ৫৪ জন সংরক্ষিত সদস্য পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও ইতোমধ্যে আদালতের আদেশে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হতে যাওয়া ৬২ জনের মধ্যে থেকে ৬ জন ফিরে পেয়েছেন। ২২ মার্চের ভোটে তিন হাজার ৩৪ জন চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য পদে ২৫ হাজার ৮৪৭ জন ও সংরক্ষিত পদে সাত হাজার ৫৭৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। এরপর আরও পাঁচ ধাপে দেশের বাকি সাড়ে তিন হাজার ইউপিতে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।
ইসি সচিবালয়ের উপ-সচিব রকিবউদ্দীন মন্ডল বলেন, প্রথম ধাপে ৭২২টি ইউপি নির্বাচনের জন্য চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদের জন্য প্রায় সাড়ে চার কোটি ব্যালট পেপার জেলা নির্বাচন অফিসে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী রোববার থেকে মাঠে নামছে। এছাড়া নির্বাচনী অপরাধের সাজা দিতে সাথে থাকছে নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটগণ।
মাঠে নামছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী:
গতকাল রোববার সকাল থেকে প্রথম ধাপে ইউপি নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মাঠে নামছে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা। একইসঙ্গে ৩৪ জেলার ১০১টি উপজেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরাও অপরাধ তদারকিতে মাঠে থাকবেন। ইসি সচিবালয়ের উপ-সচিব সামসুল আলম জানান, ভোটের দুদিন আগে থেকে (২০ মার্চ) মাঠে নামছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ নির্বাচনে প্রায় সাড়ে সাত হাজার ভোটকেন্দ্র রয়েছে। যেখানে সাধারণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ভেদে ১৭ থেকে ২০ জনের ফোর্স মোতায়েন থাকবে। এক্ষেত্রে কেবল ভোটের দিনই প্রায় দেড় লাখ ফোর্স ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া রোববার থেকে ভোটের পরের দিন বুধবার পর্যন্ত মোট চারদিনের জন্য মাঠে থাকবে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, কোস্ট গার্ডের মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। সব মিলিয়ে প্রায় দুই লাখ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।
ইসি’র ফোর্স মোতায়েনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটেলিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতি ইউনিয়নে ১টি করে ৭২১টি মোবাইল ফোর্স ও প্রতি তিন ইউপির জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স রাখা হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রতি উপজেলায় ২টি করে র‌্যাবের মোবাইল টিম ও ১টি স্ট্রাইকিং টিম এবং প্রতি উপজেলায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোবাইল ও ১ প্লাটুন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকছে। আবার উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতি উপজেলার জন্য কোস্টগার্ডের ২ প্লাটুন মোবাইল ফোর্স ও এক প্লাটুন স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকছে। যারা ভোটের দু’দিন আগে থেকে পরে একদিন মোট চারদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজন মনে করলে ফোর্স মোতায়েনের এ সংখ্যা কম-বেশি হতে পারে।
সব ধরনের যান চলাচল নিষিদ্ধ:
গত শনিবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আজ সোমবার রাত থেকে ৩২ ঘন্টা সব ধরনের যান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে ইসি। নির্বাচন কমিশনের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী দিন থেকে ভোটগ্রহণের দিন মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এছাড়াও ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী মধ্যরাত থেকে অর্থাৎ সোমবার মধ্যরাত থেকে ভোটের দিন মধ্যরাত পর্যন্ত অটোরিকশা/ ইজিবাইক, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক ও টেম্পো চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী/তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও অনুমোদিত সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে তা শিথিল থাকবে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে কতিপয় যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এবারও তাই করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী তিনদিন আগে থেকে ভোটের দিন মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা রাখতে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জাতীয় মহাসড়ক (হাইওয়ে), বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
সড়ক বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সচিব বরাবর পাঠানো আরেকটি নির্দেশনায় নৌ-যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, ভোটের দিনের পূর্ববর্তী রাত ১২টা থেকে গ্রহণের দিন মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত সকল ধরনের নৌ-যান ও স্পিটবোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বলা হয়েছে।
ইসির নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে নিয়োজিত দেশি/বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং চিকিৎসা, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কাজে ব্যবহারের জন্য উল্লেখিত যানবাহন চলাচল নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। জাতীয় মহাসড়ক (হাইওয়ে), বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা শিথিল থাকবে। লঞ্চসহ ইঞ্জিনচালিত সব ধরনের নৌযান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে নির্দেশনা দিতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়েছে ইসি।
বহিরাগতদের অবস্থান নিষিদ্ধকরণ
গত সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত ১২টার আগেই বহিরাগতদের (যারা ভোটার বা বাসিন্দা নন) নির্বাচনী এলাকা ত্যাগে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পৌরসভা এলাকার বাসিন্দা বা ভোটার নন, তারা ২৮ ডিসেম্বর রাত ১২টার পূর্বেই নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ করতে হবে। যে দিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেদিন অন্য এলাকার প্রভাবশালীরা থাকলে বা নির্বাচনে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করলে বা করার চেষ্টা করতে পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
বৈধ অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ
নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী দুইদিন হতে ভোটগ্রহণের পরবর্তী চার দিন পর্যন্ত অর্থাৎ নির্বাচনের দিনসহ মোট ৭দিন যাতে অস্ত্রের লাইসেন্সধারীগণ অস্ত্রসহ চলাফেরা না করেন কিংবা অস্ত্রবহন ও প্রদর্শন না করেন, সে জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকগণ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
আগামীকাল বুধবার দেশের ২৩৪ পৌরসভায় একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রায় ৭২ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। মেয়র পদে ৯৪৫ জনসহ মোট ১২ হাজার প্রার্থী এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে প্রায় ৩ হাজার ৫৮২টি কেন্দ্রে ৬১ হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, এবার আওয়ামী লীগের ২২৮ জন এবং বিএনপির ২২৫ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। এর মধ্যে ২২২টি পৌরসভায় নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীরা আছেন মুখোমুখি লড়াইয়ে।
ইসির ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম ধাপে ২২ মার্চ ৭২২টি, ২৩ মার্চ নাগরপুরে ১১টি এবং ২৭ মার্চ টেকনাফের দু’টি ইউপি, দ্বিতীয় ধাপে ৩১ মার্চ, তৃতীয় ধাপে ২৩ এপ্রিল, চতুর্থ ধাপে ৭ মে, পঞ্চম ধাপে ২৮ মে ও ষষ্ঠ ধাপে ৪ জুন ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ৭২১ ইউপিতে ভোট কাল - সংঘাত-সংঘর্ষে বাড়ছে শঙ্কা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ