Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দু’বাসের প্রতিযোগিতায় প্রাণ গেল একই পরিবারের ৩ জনের

প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দু’টি যাত্রীবাহী বাসের প্রতিযোগিতার খেসারত দিতে হলো প্রাইভেটকার আরোহী একই পরিবারের তিন জনের প্রাণহানির মধ্যে দিয়ে। বেপরোয়া গতির একটি বাস পেছন দিকে থেকে প্রাইভেটকারকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মর্মান্তিক মৃত্যু হয় এর আরোহী দেলোয়ার হোসেন (৬৫) মিসেস মিলন (ভগ্নিপতি মিলন) (৪০) ও ভাগ্নি লাভলি (২২)। গতকাল রোববার বিকেলে রাজধানীর খিলক্ষেত ফ্লাইওভারের পাশের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের বাড়ি গাজীপুরে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রাইভেটকারের চালকসহ দুই বাসের অন্ততঃ ১০ জন যাত্রী। ঘটনার পর ওই সড়কে দুই ঘন্টারও বেশি সময় যান চলাচল বন্ধ ছিলো। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশের গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) মোঃ আব্দুল আহাদ জানান, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ঢাকামুখী এনা পরিবহন ও উত্তরা থেকে মোহাম্মদপুর রুটের তেতুলিয়া পরিবহন বেপরোয়া গতিতে পাশাপাশি প্রতিযোগিতা করে চলছিলো। এ সময় এনা পরিবহনের বাসটি ওভারটেক করতে গিয়ে পেছন দিকে থেকে একটি প্রাইভেটকারকে চাপা দেয়। এতে দুুমড়ে মুচড়ে যায় প্রাইভেটকারটি। এনা পরিবহন প্রাইভেটকারকে চাপা দেয়ার সাথে সাথে তেতুলিয়া পরিবহনের বাসটিও এনা পরিবহনকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটি উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান প্রাইভেটকার আরোহী দেলোয়ার হোসেন তার বোন মিসেস মিলন ও ভাগ্নি লাভলী। গুরুতর আহত হন প্রাইভেটকারের চালক। স্থানীয় লোকজন প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করেন। নিহতদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাইভেটকারের আহত চালককে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এডিসি আহাদ আরো জানান, দূর্ঘটনায় দায়ী বাস দুটি বাস আটক করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ প্রাইভেটকারটিও পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। দূর্ঘটনার মূল কারণ তদন্ত চলছে। ঘটনার পর পরই দায়ী বাসের চালকরা পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। খিলক্ষেত থানার এসআই শহিদুর রহমান বলেন, নিহত দেলোয়ার তার বোন আর ভাগ্নিকে নিয়ে দেলোয়ার মিয়া গাজীপুর থেকে ঢাকায় চিকিৎসক দেখাতে আসছিলেন। দেলোয়ার নিয়মিত মেডিকেল চেকআপের জন্য ঢাকায় আসতেন । কিন্তু গতকাল এসে দুর্ঘটনায় পড়ে বোন ও ভাগ্নিসহ মারা যান তিনি।
পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত ৩
এদিকে দক্ষিণখান, বনানী ও কাওরানবাজার এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে এবং ট্রাকের ধাক্কার পৃথক ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল পৌনে ৮টার দিকে কারওয়ানবাজার খাটপট্টি সংলগ্ন রেল লাইনের পাসে ট্রেনের ধাক্কায় জহিরুল ইসলাম নামে এক রিকশাচালক নিহত হয়েছেন। জহিরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার চালিতেডাঙ্গা গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে। তিনি মিরপুর দক্ষিণ পাইকপাড়া বউ বাজার এলাকায় থাকতেন।
এছাড়া সকাল ৮টার দিকে বনানী রেলস্টেশনে ট্রেনে কাটা পড়ে শামিম আহম্মেদ নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। শামিম আহম্মেদ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাসিন্দা। ঢাকা রেলওয়ে থানার ওসি আব্দুল মজিদ জানান, কমলাপুর থেকে জয়দেপুরগামী একটি ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন শামিম আহম্মেদ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ট্রেনের যাত্রীরা বনানী স্টেশন অফিস ভাঙচুর করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তার কাছে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে।
ভোর সাড়ে ৪টার দিকে দক্ষিণখানের আজমপুর সুপার মার্কেটের সামনে ট্রাকচাপায় জামাল উদ্দিন নামে ওই ট্রাকের হেলপার নিহত হয়েছেন। দক্ষিনখান থানার এসআই সাইফুল ইসলাম জানান, জামাল শরীয়তপুরের নুড়িয়া উপজেলার আলাউদ্দিনের ছেলে।
বুড়িগঙ্গার তীরে গৃহকর্মীর লাশ
ঢাকার হাজারীবাগ থানা এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীর থেকে শনিবার রাতে স্বপ্না আক্তার (১৮) নামে এক গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই গৃহকর্মী লালমাটিয়ার একটি মেসে কাজ করতো বলে জানিয়েছে হাজারীবাগ থানার এসআই আবুল হোসেন জানান। তিনি বলেন, শনিবার রাত ১০টার দিকে হাজারীবাগের হাজী মকবুল হোসেনের বাগানবাড়ি সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীর তীর থেকে ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। সেখানে দুটি মোবাইল ফোন, একটি গামছা ও একটি ওড়না পাওয়া গেছে। ওই তরুণীর কপালে আঘাতের চিহ্ন থাকায় পুলিশ ধারণা করছে তাকে ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়।



 

Show all comments
  • Siddiqur Rahman ২১ মার্চ, ২০১৬, ১১:৩৬ এএম says : 0
    যদি প্রমানিত হয় ড্রাইভীং প্রতিযোগিতার কারনে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার একই ফ্যমেলির তিন জনের মৃত্যু হয়েছে তাহলে এই দুই ড্রাইভারদের ফাঁসি দাবি জানাচ্ছি।
    Total Reply(0) Reply
  • Surjo ২১ মার্চ, ২০১৬, ১১:৪৯ এএম says : 0
    ঘটনা পুরাটাই সত্য, কারণ আমি নিজেই ওই বাসদুটির পরের বাসে মহাখালী যাচ্ছিলাম।খুবই মর্মান্তিক।
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammod Mahdi Hasan ২১ মার্চ, ২০১৬, ১১:৫০ এএম says : 0
    বাসের ড্রাইবারদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Salahuddin Sultan Mollick ২১ মার্চ, ২০১৬, ১১:৫১ এএম says : 0
    দৃষ্টান্তমুলক নয়, এই ধরনের বেয়াদপ Driver দের অতি দ্রুত ফাঁশি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Sayem Khan ২১ মার্চ, ২০১৬, ১১:৫৩ এএম says : 0
    হিল পাটাই ঘষা ঘষি মরিচের দফা শেষ। এভাবে আর কতদিন ?
    Total Reply(0) Reply
  • মিজান ২১ মার্চ, ২০১৬, ১১:৫৩ এএম says : 0
    আর কত জীবন গেলে ড্রাইভাররা সচেতন হবে ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দু’বাসের প্রতিযোগিতায় প্রাণ গেল একই পরিবারের ৩ জনের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ