Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

না.গঞ্জে চড়া দামে গ্যাস বিক্রির অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোঃ হাফিজুর রহমান মিন্টু, নারায়ণগঞ্জ থেকে : নারায়ণগঞ্জে তিতাস গ্যাস সংকটকে পুঁজি করে এলপি গ্যাস সরবরাহকারীরা সিলিন্ডারের গ্যাস কম দিয়ে চড়া দামে বিক্রি করে বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। পাইপলাইনে প্রাকৃতিক গ্যাস সংকটের কারণে অসহায় গ্রাহকগণ বাধ্য হয়ে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার কিনছেন। ফলে সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের বাজারে এলপি গ্যাসের চাহিদা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। আর এই চাহিদাকে পুঁজি করে একটি সিন্ডিকেট চড়া দামে বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে গ্রাহকগণের অভিযোগ। অন্যদিকে ডিলারদের অভিযোগ বিপিসি’র কয়েক যুগের পুরনো সিলিন্ডারগুলো ব্যবহারে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়েছে।
এলপি গ্যাস সিলিন্ডার আবাসিক খাতে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। ১২ কেজির বেশি ওজনের গ্যাস সিলিন্ডার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও শিল্প-কারখানায় ব্যবহার করা হচ্ছে। সম্প্রতি সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জেও প্রাকৃতিক গ্যাসে নতুন সংযোগ প্রদানে ধীরগতিতে বিপাকে পড়েছেন আবাসিক গ্রাহকরা। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে আবাসিক খাতে নতুন সংযোগ প্রদান প্রায় বন্ধ রয়েছে। গ্রাম-গঞ্জে জ্বালানি সংকট বেড়ে যাওয়ায় সেখানেও এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহার বাড়লেও সরকারিভাবে মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় গ্রাহকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ। এ দিকে নারায়ণগঞ্জে গত ৪/৫ মাস যাবত্ সরবরাহ লাইনে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় আবাসিক গ্রাহকদের রান্নার কাজে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে নগরীতে অনেক এলাকায় সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত গ্যাস থাকছে না। রান্নার চুলা জ্বলছে না। সবকিছু মিলিয়ে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের চাহিদার উপর নির্ভরতা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।
এলপি গ্যাস পরিবেশক সমিতি জানায়, সরকারিভাবে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তেল কোম্পানি ছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে ১২/১৩ কোম্পানির এলপি গ্যাস বাজারজাত হচ্ছে। গ্যাস বাজারজাতকরণের জন্য এসব কোম্পানির প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ডিলার রয়েছে। তাদের কাছ থেকে খুচরা বিক্রেতারা নিয়ে থাকেন। খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারি বিক্রেতা ডিলাররা অতি মুনাফার জন্য নানা অনিয়ম করে চলেছে। কোম্পানি থেকে নির্ধারিত ওজনে গ্যাস কিনলেও তারা বোতল থেকে গ্যাস নিয়ে নিচ্ছে। গ্রাহকরা বোতলে গ্যাস কম পাওয়ার অভিযোগ করছেন। বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের এলপি গ্যাস সিলিন্ডারগুলোতে গ্যাস কম থাকার অভিযোগ পাচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি বাংলাদেশ এলপি গ্যাস পরিবেশক সমিতির সভাপতি এসএম হাবিবুল হক বলেছিলেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বোতলে গ্যাস কমানোর কাজে লিপ্ত। অনেকে ৪০ ও ৪৫ কেজি ওজনের সিলিন্ডার কিনে একাধিক ছোট সিলিন্ডারে ভর্তি করে বিক্রি করছে। বেসরকারি কোম্পানিগুলোর প্রতিযোগিতামূলক বাজারজাতকরণের কারণে এলপি গ্যাসের দাম এখনো গ্রাহকদের নাগালের মধ্যে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।’
নগরীর খুচরা বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। সিলিন্ডারের মূল্যসহ প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর এলপি গ্যাস ২ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। সিলিন্ডার ছাড়া শুধুমাত্র ১২ কেজি ওজনের গ্যাস ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সরকারি এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে প্রতি বোতল ২ হাজার ৪০০ টাকা।
এদিকে সরকারিভাবে তেল কোম্পানিগুলো তাদের তালিকাভুক্ত ডিলারদের মাধ্যমে এলপি গ্যাস বাজারজাত করে থাকেন। এসব এলপি গ্যাস ভুর্তকি দিয়ে বিক্রি করলেও অসাধু চক্র চড়া দামে বিক্রি করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। বিপিসি’র বিভিন্ন সময়ে কেনা প্রায় ৪ লাখ ২৬ হাজার সিলিন্ডার রয়েছে। কয়েক যুগের পুরনো অধিকাংশ সিলিন্ডারের অবস্থা নাজুক। যথাসময়ে মেরামত না করায় এসব সিলিন্ডার ব্যবহারে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে বলে ডিলারদের অভিযোগ। এলপি গ্যাস পরিবেশক খোরশেদ আলম জানান, প্রতি সিলিন্ডার গ্যাস কেনার সময় মেরামত বাবদ ২ টাকা করে আদায় করা হয়। কিন্তু সিলিন্ডারগুলো মেরামত করা হচ্ছে না। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। বিপিসি সূত্র জানায়, সম্প্রতি ২০ হাজার নতুন সিলিন্ডার আমদানি করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। এ প্রসঙ্গে জনৈক সিলিন্ডার ব্যবসায়ী বলেন, পুরনো সিলিন্ডারগুলো উপরের আবরণ দেখতে খারাপ হলেও ব্যবহার উপযোগী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: না.গঞ্জে চড়া দামে গ্যাস বিক্রির অভিযোগ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ