পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, কত একর জমি অবৈধ দখলে রয়েছে তার সঠিক পরিমাণ জানা নেই। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা প্রতিরোধ বেড়িবাঁধগুলোর উভয় পার্শ্বে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য কাজ চলছে।
সারাদেশের বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১০টি জোনে সরকারি অধিগ্রহণকৃত মোট ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩৫ একর জমির মধ্যে ৫ হাজার একর জমি রাজনৈতিক দলের নেতাসহ বিভিন্ন প্রভাবশালীর দখলে। এসব জমির আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ২০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্পের কাজে ব্যবহার হচ্ছে এক লাখ ৮৬ হাজার ৭ শত ৩৫ একর এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংরক্ষিত জমির পরিমাণ ১৮ হাজার ৮ শত ৯৯ একর। দখল হওয়া জমির বেশির ভাগ বেড়িবাঁধ এবং ছোট ছোট নদী ও জলাশয়। অবৈধ দখলদাররা এসব জমিতে গড়ে তুলেছেন দোকান, বাসা-বাড়ি, স্কুল-কলেজ, গরুর খামার, হাউজিং কোম্পানী, বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং তেলের পাম্প। বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারে গড়িমসি করছে মন্ত্রণালয়। জেলা প্রশাসকরাও রয়েছেন নিষ্ক্রীয়। এছাড়া চলতি বছরের বন্যায় সারাদেশে ৪৫১টি স্থানে ১৬৫ দশমিক ৮৯ কিলোমিটার বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারে মন্ত্রণালয় থেকে সাড়া পাচ্ছেন না তারা। অন্যদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা প্রতিরোধ বেড়িবাঁধের উভয় পার্শ্বে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন জেলায় চিঠি দেয়ার পরও সারা মিলছে না বলে জানান সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এসব জমি বেশিরভাগ দখল করেছে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর লোক জড়িত রয়েছে। এ বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান ইনকিলাবকে বলেন, কত একর জমি অবৈধ দখলে রয়েছে তার সঠিক পরিমাণ জানা নেই। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা প্রতিরোধ বেড়িবাঁধগুলোর উভয় পার্শ্বে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য কাজ চলছে। এখানে মন্ত্রণালয়ের কোন গড়িমসি নেই। জমি উদ্ধারে দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তারাই এ কাজ করবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সারাদেশের ১০টি জোনে সরকারি অধিগ্রহণকৃত মোট জমির পরিমাণ ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩৫ একর। ঢাকা জোনে স্থায়ী জমির পরিমাণ ৮২৫৫ দশমিক ৮২ একর, প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ৭৭৫৬ দশমিক ৭০ এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংক্ষিপ্ত জমির পরিমাণ ৪৯০ দশমিক ১১ একর। এর মধ্যে কুমিল্লা জোনে স্থায়ী জমির পরিমাণ ২৬৯২৭ দশমিক ০৪ একর, প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ২৬৯২৭ দশমিক ০৪ একর এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংক্ষিপ্ত জমির পরিমাণ ২০০ একর। চট্টগ্রাম জোনে স্থায়ী জমির ১৪৭৫৯ দশমিক ৬০ একর, প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ১৩০৬৮ দশমিক ০৬ এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংক্ষিপ্ত জমির পরিমাণ ১৬৯১ দশমিক ৫৪ একর। উত্তরাঞ্চল রংপুর জোনে স্থায়ী জমির পরিমাণ ১৯৩৫৬ দশমিক ৪৭ একর, প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ১৮৫৪৩ দশমিক ২৯ এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংক্ষিপ্ত জমির পরিমাণ ৮১৩ দশমিক ১৮ একর। উত্তরাঞ্চল (পশ্চিম) রাজশাহী জোনে স্থায়ী জমির ২৫৫১২ দশমিক ৪৯ একর, প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ২২৫০৮ দশমিক ২২ এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংক্ষিপ্ত ভূমির পরিমাণ ৩০০৪ দশমিক ২৭ একর। পশ্চিম উত্তরাঞ্চল ফরিদপুর জোনে স্থায়ী জমির ৩৫৪২৩ দশমিক ১৮ একর, প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ৩৪৩৮৪ দশমিক ৬৭ এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংক্ষিপ্ত ভূমির পরিমাণ ১০৩৮ দশমিক ৫১ একর। দক্ষিণ-পশ্চিম খুলনা জোনে স্থায়ী জমির ৩৩৯২৪ দশমিক ১১ একর, প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ২৫৬৯৯ দশমিক ৩২ এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংক্ষিপ্ত ভূমির পরিমাণ ৮২২৪ দশমিক ৭৯ একর। উত্তরাঞ্চল-পশ্চিম রাজশাহী জোনে স্থায়ী জমির ২৫৫১২ দশমিক ৪৯ একর, প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ২২৫০৮ দশমিক ২২ এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংক্ষিপ্ত জমির পরিমাণ ৩০০৪ দশমিক ২৭ একর। দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল জোনে স্থায়ী জমির পরিমাণ ৩৫২৪৬ দশমিক ০৯ একর, প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ৩৩১১০ দশমিক ১৫ এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংক্ষিপ্ত ভূমির পরিমাণ ২১৩৫ দশমিক ৯৪ একর। উত্তর-পর্বাঞ্চল সিলেট জোনে স্থায়ী জমির পরিমাণ ৬১১৪ দশমিক ৪৪ একর, প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ৪৮১৩ দশমিক ৩৯ এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংক্ষিপ্ত ভূমির পরিমাণ ১৩০১ দশমিক ৫ একর। এছাড়া অন্যান্য দপ্তরগুলোতে ব্যবহার করা হয় স্থায়ী জমির ১১৬ দশমিক ১২ একর, প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ১১৬ দশমিক ১২।
মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, সারাদেশের ১৯ হাজার ২২৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে সাড়ে ৯ হাজার কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ইতোমধ্যে চলতি বছরের কয়েক দফা বন্যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সাড়ে ৩শ’ কিলোমিটার বাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। এসব বেড়িবাঁধের উপর ৫ হাজার ৩৩১ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করে অবৈধ দখলে রয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার। তাই রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আরও বেড়িবাঁধ বিলীন হওয়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর। ষাটের দশকে নির্মাণ করা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৭০টি জোনের ১৯ হাজার ২২৯ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ৮ হাজার ৪২৯ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ৪ হাজার ৭৫০ কিলোমিটার উপকূলীয় বাঁধ, ২ হাজার ৪৩৬ কিলোমিটার ডুবন্ত বাঁধ এবং সেচ খালের ডাইক বাঁধ রয়েছে ৩ হাজার ৬১২ কিলোমিটার। এসব বাঁধের মধ্যে বন্যার পানিতে উত্তরাঞ্চলের গাইবান্ধা, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী জেলায় ৩শ’ কিলোমিটার বাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া সারাদেশে এসব বাঁধের মধ্যে ৪ হাজার ১৩৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের উপর রাস্তা নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এলজিইডি। ১ হাজার ৩২৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের উপর রাস্তা নির্মাণ করে দখল করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সিটি করপোরেশন। পৌরসভা বেড়িবাঁধের উপরে রাস্তা নির্মাণ করে দখল করেছে ৮৭০ কিলোমিটার। এসব বাঁধ উদ্ধারে তেমন কোনো তৎপরতা নেই।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো: মাহফুজুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫ হাজার একর জমি বিভিন্ন ব্যক্তি অবৈধভাবে দখল করেছে। দখল হওয়া জমির বেশির ভাগ বেড়িবাঁধ এবং ছোট ছোট নদী ও জলাশয়। আমরা এগুলো উচ্ছেদের জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিভিন্ন জেলায় চিঠি দেয়ার পরও ডিসিদের কাছে থেকে কোনো সারা পাওয়া যাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।