পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পদোন্নতি কিংবা গ্রেড উন্নতির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে মাসের পর মাস ঘুরেও যেখানে ফাইল নড়ানো যায় না, সেখানে আবেদন প্রাপ্তির একদিনের মধ্যেই অদৃশ্য ক্ষমতায় সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) ফাইল অনুমোদন করেছে। গতকাল রোববার জনপ্রশামন মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত সভায় ফাইলটি মন্ত্রীর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়। মন্ত্রী ফাইলটি অনুমোদন করে প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের জন্য তার দফতরে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় আর এ ক্ষেত্রে সহযোগী হয়ে কাজ করেছে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড ও সংস্কারের দায়িত্বে থাকা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো: রফিকুল ইসলামকে গ্রেড-১ এ উন্নীত করতেই বিধি ভেঙে দ্রæততার সাথে এটি করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অজ্ঞাতেই দুই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কিছু কর্মকর্তা বিশেষ সুবিধাভোগী হয়ে এই অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রেড-১ এ পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রধান প্রকৌশলী পদে চাকরির আগের এক বছর এবং বর্তমান পদে চাকরির বিগত তিন মাসের এসিআর জমাদান বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া পদোন্নতির জন্য আবেদন করা প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ আছে কি-না তা জানাতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হালনাগাদ প্রতিবেদন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই), ডিজিএফআই/এসবির প্রতিবেদন থাকাটাও জরুরি। কিন্তু গণপূর্ত অধিফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো: রফিকুল ইসলামের এসএসবি সংক্রান্ত আবেদনে এসব কিছুর হালনাগাদ তথ্য নেই বলে জানা গেছে। দুই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কিছু কর্মকর্তা বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে এসব বিষয় গোপন করে রফিকুল ইসলামের গ্রেড-১ এ পদোন্নতির এসএসবি ফাইলটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন। অপেক্ষা এখন শুধু প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো: মোজাম্মেল হক খান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, অবশ্য এতে দোষের কিছু দেখছেন না। আবেদন প্রাপ্তির পরই একদিনে তড়িঘড়ি করে দাফতরিক সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর পদটি গ্রেড-১ এ উন্নীত করার লক্ষ্যে এসএসবি ফাইল অনুমোদনের জন্য প্রস্তুত করাটাকে আনন্দের বিষয় বলেই অভিহিত করেন। তিনি বলেন, সরকারি একপি দফতর দ্রæততার সাথে কাজটি সম্পাদন করায় সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য বলেই মনে করেন তিনি। তবে অন্যসব ফাইল রেখে শুধু এই ফাইলটি দ্রæততার সাথে কেন সম্পন্ন করা হলো, এ বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। সিনিয়র সচিব বলেন, গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর এসএসবির ফাইলটি প্রক্রিয়াধীন। আমাদের এখানেই এটি চ‚ড়ান্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়ে স্বাক্ষর করলেই রফিকুল ইসলাম গ্রেড-১ পদের কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচিত হবেন।
এদিকে বিধিভঙ্গ করে তড়িঘড়ি করে বিশেষ একজন কর্মকর্তাকে মাত্র আড়াই মাসের মাথায় ফের পদোন্নতি দেয়ার তৎপরতায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এ বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করছেন তারা। কমিটির একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, গ্রেড-৩ এর একজন কর্মকর্তাকে এত দ্রæততার সাথে ডাবল প্রমোশন দিয়ে গ্রেড-১ এ উন্নীত করা সমীচীন হবে না। তা ছাড়া ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদের বেশ কয়েকটি স্থায়ী কমিটিতে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এরপরও তাকে কেন পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের যে কোনো দিন এসএসবি করিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে সুবিধাভোগী চক্রটি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত জারি করা পরিপত্র, গ্রেড উন্নয়নের চাহিদাপত্রসহ বেশকিছু অত্যাবশ্যকীয় কাগজপত্র এ প্রতিবেদকের হাতে পৌঁছেছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের আওতাধীন দফতর/সংস্থা/করপোরেশনের প্রধানের পদকে গ্রেড-১ এবং গ্রেড-২ এ উন্নীতকরণ সংক্রান্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত পদগুলোর মধ্যে ৩০টি পদকে গ্রেড-১ এবং ২০টি পদকে গ্রেড-২ এ উন্নীত করার কথা বলা রয়েছে। ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রæয়ারি করা এ প্রস্তাবনাটি এতদিন ফাইলবন্দী হয়ে পড়ে থাকলেও চলতি বছরের (২০১৭) ৭ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর পদটিকে গ্রেড-১ এ উন্নীত করে পরিপত্র জারি করে। এরপরপরই সংস্থাটির প্রধান প্রকৌশলী মো: রফিকুল ইসলাম নিজের গ্রেড উন্নয়নের জন্য তদবির শুরু করেন। কিন্তু এতে বাধ সাধে বিধি। কারণ তিনি অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী থাকাকালীন গ্রেড-৩ এর কর্মকর্তা ছিলেন। প্রধান প্রকৌশরী হওয়ার পর নানাভাবে তদবিরের মাধ্যমে মাত্র আড়াই মাস আগে চলতি বছরের ৩১ জুলাই তিনি গ্রেড-২ এ উন্নীত হন। এখন গ্রেড-১ এ উন্নীত করার আবেদন করায় বিপাকে পড়ে যান তিনি।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেড-১ এ উন্নীত হওয়ার আবেদন দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাত্র আড়াই মাসের মাথায় তিনি কিভাবে এ আবেদন করলেন এবং এটি পাওয়ার কি যৌক্তিকতা আছে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা চায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে মো: রফিকুল ইসলাম অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (গ্রেড-২) তে কত বছর চাকরি করেছেন, তাকে গ্রেড-১ এ উন্নীত পদোন্নতি প্রদান করতে হলে ফেডার পদে (গ্রেড-২) চাকরির অভিজ্ঞতা প্রমার্জন করতে হবে কি-না এসবও জানতে চাওয়া হয়। বিষয়ে ব্যাখ্যা উপস্থাপনের পাশপাশি প্রধান প্রকৌশলী (গ্রেড-১) পদ উন্নীতকরণ সংক্রান্ত প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের জিও এবং সংশোধিতব্য নিয়োগ বিধির কপি দাখিল করতে বলা হয়। জবাবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রধান প্রকৌশলীর পদটি গ্রেড-১ এ উন্নীত হয়েছে বিধায় গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীকে এই গ্রেডে পদোন্নতি করা যেতে পারে বলে জানায়। কিন্তু জনপ্রশাসনের দাবি অন্য ব্যাখ্যাগুলোর কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। রফিকুল ইসলামের গ্রেড-২ পদে চাকরি করার শর্ত প্রমার্জন করে তাকে পদোন্নতি দেয়ারও সুপারিশ করা হয় গণপূর্তের চিঠিতে।
গ্রেড-১ এ পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রধান প্রকৌশলী পদে চাকরির আগের এক বছর এবং বর্তমান পদে চাকরির বিগত তিন মাসের এসিআর জমাদান বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া পদোন্নতির জন্য আবেদন করা প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ আছে কি-না তা জানাতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হালনাগাদ প্রতিবেদন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই), ডিজিএফআই/এসবির প্রতিবেদন থাকাটাও জরুরি। কিন্তু গণপূর্ত অধিফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো: রফিকুল ইসলামের এসএসবি সংক্রান্ত আবেদনে এসব কিছুর হালনাগাদ তথ্য নেই বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, দুই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কিছু কর্মকর্তা বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে এসব বিষয় গোপন করে রফিকুল ইসলামের গ্রেড-১ এ পদোন্নতির এসএসবি ফাইলটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন। অপেক্ষা এখন শুধু প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।