পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এখনও দেশবিরোধী, পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, তাদের পদলেহনকারী ও তোষামোদকারী রয়ে গেছে মন্তব্য করে তারা যেন আর দেশের ক্ষমতায় না আসতে পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নতি হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচারে বাধা দেয়া হয়েছে। কিন্তু ভাষণ প্রচারে যত বাধা এসেছে, তত তা জাগ্রত হয়েছে। মানুষ ভাষণ প্রচারের জন্য জীবন পর্যন্ত দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না, কেউ মুছতে পারেনি। ইতিহাস বিকৃত করতে চাইলে ইতিহাস প্রতিশোধ নেয়।
গতকাল শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেস্কো বিশ্ব প্রামাণ্য ঐহিত্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় এই নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দেয়ায় সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি বিয়েত্রিস কালদুনের কাছে ইউনেস্কোর মহাসচিব বরাবর একটি ধন্যবাদপত্রও হস্তান্তর করা হয়। এমিরেটস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান নাগরিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। বঙ্গবন্ধুর ৭মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি দেয়ায় সমগ্র বাংলাদেশ সম্মানিত হয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্য, এই বাংলাদেশে এই ভাষণকে বন্ধ করার চেষ্টা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইতিহাস যতই মোছার চেষ্টা করা হোক, ইতিহাসও প্রতিশোধ নেয়, শিক্ষা দেয়। আজ ৭ মার্চের ভাষণ স্বীকৃতি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর কোন ভাষণ এতদিন, এত ঘণ্টা প্রচারিত হয়নি। যতই বাধা এসেছে ততই মানুষ জাগ্রত হয়েছে। তিনি বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে ইউনেস্কো। অথচ একসময় এই ভাষণ এদেশে নিষিদ্ধ ছিল। যারা এই ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিলো, তাদের কি লজ্জা হয় না, তাদের কি দ্বিধা হয় না? জানি না এদের লজ্জা আছে কি না। তারা পাকিস্তানি বাহিনীর প্রেতাত্মা; স্বাধীন বাংলাদেশে থাকলেও তারা পাকিস্তানের লেজুড়বৃত্তি তোষামোদকারী ও চাটুকারের দল। তাদের জন্যই একটি বিজয়ী জাতি বিজয়ের ইতিহাস জানতে পারেনি, এর চেয়ে দুর্ভাগ্য হয় না।
স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যেন আবার ক্ষমতায় না আসতে পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, পাকিস্তানী বাহিনীর পদ লেহনকারী, তোষামোদি, চাটুকারির দল যেন আর ইতিহাস বিকৃত করতে না পারে, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে মানুষের যে উন্নতি হয়, তা তো প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ। ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসার পরই মানুষের উন্নতি হয়েছে। এখন ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় না। বাজেটের ৯৮ শতাংশ এখন নিজেদের টাকায় বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আবার ক্ষমতায় আসলে এই অর্জন হারিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আজ সারা বিশ্বের গর্বিত জাতি। এই গর্বিত, উন্নত শীর যেন কখনও পদানত না হয়। নাগরিক সমাবেশের মধ্যমণি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ভাষণ দেয়ার আগে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িতে নেতাদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর পরামর্শের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অনেকেই অনেক পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছেন তার মতো করে। তিনি তার মা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছার কথা উল্লেখ করে বলেন,
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে মুক্তিযুদ্ধের সব দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল, এমনকি তার অবর্তমানে কী করতে হবে, তাও বলে দেয়া হয়েছিল। কারণ, তিনি জানতেন কিছু একটা হতে যাচ্ছে।
সমাবেশে বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে বক্তব্য দেয়া শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্য শেষ করেন ৪টা ৫০ মিনিটে।
গতকাল দিনভর রাজধানী ঢাকার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের শেষ দিকে সূর্য উঁকি দেয়। বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এতক্ষণ আকাশ মেঘে ছেয়েছিল, আজকে আমাদের সূর্য নতুনভাবে দেখা দিয়েছে। এই সূর্যই আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে আবারও আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব।
এর আগে দুপুর দুইটা ৩৮ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। এসময় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের অংশ বিশেষ মাইকে বাজানো হয়। প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে উপস্থিত হয়ে হাত নেড়ে অভিবাদন গ্রহণ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।