পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা : নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই পঞ্চগড়ে আবাদী জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে ইট ভাটা। ফলে বিপর্যয়ের মুখে পরিবেশ। জানা যায়,দেশের প্রতিটি উপজেলায় ভাটা স্থাপনে একটি কমিটি রয়েছে। এই কমিটি সরকারের বৈধ নিয়ম মোতাবেক জমির অবস্থান যাচাই-বাচাই করার পর একটি প্রত্যায়নপত্র দিবেন। সূত্র মতে, পরিবেশ আইন অনুযায়ী উর্বর ও আবাদী জমিতে কোন ভাবেই ভাটা স্থাপন করা যাবেনা।পরিবেশ বিপন্ন তথা জনমানুষের অকল্যান না হয় এমন সামগ্রিক অবস্থা মাথায় রেখে কমিটির সুপারিশ মতে, জেলা প্রশাসক ইট ভাটার বৈধ লাইসেন্স প্রদান করবেন।
এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক।পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সংশ্লিস্ট দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছরের হিসেব অনুযায়ী বৈধ লাইসেন্সের ভাটা ২৪টি। তবে অভিযোগ রয়েছে, পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়মনীতি মোতাবেক এসব ইট ভাটার ছাড়পত্রও বৈধ নয়। কারন সরকারের নিয়মানুযায়ী বা পরিপত্র কিংম্বা পরিবেশ আইনুযায়ী কোন আবাদী বা উর্বর জমিতে কোন ইট ভাটা নির্মান করা যাবে না।
নিয়ম রয়েছে, যেসব এলাকায় ঘনবসতি আছে, বা যে জমিতে দু’ফসলী তিন ফসলী ফসল চাষ হয় সেই জমিতেও ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কোন ভাবে ছাড়পত্র দিতে পারেনা। সে মোতাবেক জেলা প্রশাসক কোনভাবেই সেই ইটভাটার লাইসেন্স দিতে পারেনা। শুধুমাত্র অনাবাদী, অনুর্বর বা পতিত জমিতেই ইটভাটা স্থাপন করা যাবে। এক কথায় ঘনবসতিপূর্ন, উর্বর, আবাদী জমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবেনা। তবে পঞ্চগড়ের যেসব জমিতে কাগজ-কলমে ২৭টি ইটভাটা রয়েছে। তার সবকটাই নিয়মবহির্ভত। কারণ সব জমিই উর্বর, দুই-তিন ফসলী আবাদী জমি। পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের সূত্র মতে, ২৭টির মধ্যে ২৪ টি ইটভাটার লাইসেন্স রয়েছে।এবং বিগত ৩ বছর ধরে ৩/৪টি ইটভাটার আবেদন পত্র জমা আছে। পরিবেশ আইন কঠোর হওয়ায় পরিবেশ অধিদপ্তর ওই আবেদনের ছাড়পত্র না দেওয়ায় সে সব আবেদনপত্র পড়ে আছে এবং তাদের ইটভাটার লাইসেন্স দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বলাবাহুল্য পঞ্চগড়ের ২/৪ টি বাদে সব ইটভাটা পরিবেশ আইন অনুযায়ী অবৈধ।
এসব ইটভাটার মালিক বা প্রোপাইটারগন ওই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রে বদৌলতে লাইসেন্স করে নিজের মত করে উর্বর জমির লাখ লাখ ঘন ফুট মাটি এনে ভাটায় ইট উৎপাদন করছে প্রতিবছর। অনেকে ছাড়পত্র ও লাইসেন্স বলে এসব দু’ফসলী-তিন ফসলী উর্বর জমিতে নামমাত্র হাওয়া ভাটা দিয়ে উর্বর জমি নষ্ট করে শত শত একর জমি নষ্ট করে ফসল উৎপাদন ব্যাহত করে আসছে।একদিকে সরকারের বলবৎ পরিবেশ আইন ভঙ্গ অন্যদিকে ইটভাটার স্থাপনে ছাড়পত্র এ যেন ভানুমতির খেলা।
এছাড়া সরকারের আয়কর বা রাজস্ব প্রদানের ক্ষেত্রে নিয়মপালনে ইটভাটায় ইটবিক্রির নিয়মিত রেজিষ্টার সংরক্ষণ করন বাধ্যতামুলক। তার কোন বালাই নেই। ফলে নামকাওয়াস্তে আয়কর দপ্তর ও কাষ্টমসে গিয়ে বড় অঙ্কের টাকা ঘূষ দিয়ে ইট বিক্রির কাগজপত্র তৈরী করে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হচ্ছে। এসব নিয়মের বালাই না থাকায় ইট ভাটার মালিকগন প্রতিবছর সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। অন্যদিকে এই ফাঁকির অর্থ দিয়ে আরো নামে স্বনামে একাধিক ইট ভাটা স্থাপন করছে।
এবারের ইট পোড়া মৌসুমে পঞ্চগড়ের বোদা, আটোয়ারী ও সদরে বেশ কটি নতুন ইটভাটা স্থাপন করতে দেখা গেছে। এসবের মধ্যে রয়েছে, বেংহাড়ী ইউনিয়নের মানিকপীর সড়ক ও জনপথ (সওজ) ৩০ থেকে ৫০ গজের মধ্যে একটি।পঞ্চগড়-দিনাজপুর মহাসড়কের পাথরাজ নামক স্থানে মন্নাপাড়ায় একটি। যা মহাসড়কের একশ’ গজ পূর্বে অবিস্থত।এদিকে বোদা-আটোয়ারী এলজিইডি সড়কের পাশে সাতখামার নামক স্থানে দুইটি। এলজিইডি সড়ক হতে ২০০ গজ দূরে উত্তর কোনে অবিস্থত।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় এবারে স্থাপিত ইটভাটার ব্যাপারে বোদা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আল-মামুনুর রশীদ বলেন, আমি তিন বছর ধরে এই উপজেলায় কর্মরত আছি। কোন দিন দেখলাম না ইটভাটার প্রত্যায়ন পত্র দেয়ার ক্ষেত্রে উপজেলা কমিটি কোন দিন মিটিং করেছে। তিনি বলেন, আমি জানি পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র দিবেন, তারপর জেলা প্রশাসক লাইসেন্স দিবেন। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বময় ক্ষমতাবান। তিনি এও বলেন, আবাদী জমি নষ্ট করবে, আর আমাদের উৎপাদন বাড়াতে বলবে। এটা কি ঠিক।
এছাড়া ওই সড়কের টাঙ্গন ব্যারেজ আটোয়ারী-বোদা সড়কের রানীগঞ্জ বাজারের পাশে নামাজপাড়া নামক জায়গায় মাত্র ১০ গজ দুরে গত বছরে একটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। যা পরিবেশের জন্য মারাতœক হুমকি। কারন তার দিকে ঘনবসতি।এবং উর্বর জমি ও এই জমি দু-তিন ফসলী আবাদী জমি।
এভাবেই জেলার দেবীগঞ্জে অবাধে গড়ে উঠেছে ভাটা। কেউ মন্ত্রী-এমপি’র নাম ভাঙ্গিয়ে ইট ভাটা স্থাপন করে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব ইটভাটার কারনে আশপাশের বাড়ী-ঘরে ধূলা-বালি গিয়ে মানুষের শরীরে নানা রোগ দেখা দিয়েছে। ইটভাটার ধূলিতে পাশের ফসল নষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি অধিদপ্তর পঞ্চগড়ের উপ-পরিচালক মো. শামছুল হক বলেন, ইট ভাটার বিষয়ে আমার কোন হাত নেই। তবে উপজেলা পর্যায়ে একটি কমিটি আছে। তারাই ইটভাটা স্থাপনের প্রত্যায়নপত্র দেয়। তবে দু-তিন ফসলী ও আবাদী উর্বর জমিতে ইটভাটা স্থাপন করার কোন নিয়ম নাই। তবে যদি কেউ করে থাকে তাহলে প্রশাসন ত্বরিৎ ব্যবস্থা নিতে পারেন।
পঞ্চগড়ে এই অবৈধ ইটভাটা স্থাপনের বিষয়ে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক অমল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, সারাদেশে একই অবস্থা। পরিবেশের নিয়ম, অনুযায়ী জেলায় ২/৪ ইটভাটার লাইসেন্স টিকতে পারে। আমি কতো দিকে সামলাবো। তবে তিনি বলেন, জনবল কম তাই এসব ইটভাটা স্থাপন করার সুযোগ পেয়েছে অনেকে। তবে তিনি বলেন, অচিরেই এসব অবেধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।