Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আতঙ্কগ্রস্ত বিচার বিভাগে ন্যায়বিচারের বদলে নেই বিচারের পরিবেশ -খালেদা জিয়া

আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দেশে সুবিচার ও ন্যায়বিচারের কোনো সুযোগ ও পরিবেশ নেই মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, শাসক মহলের বেপরোয়া কর্মকাÐে দেশে এখন ন্যায়বিচারের বদলে সৃষ্টি হয়েছে ‘নাই বিচারের’ পরিবেশ। অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ও ন্যাক্কারজনকভাবে দেশ থেকে ন্যায়বিচারের পরিবেশ ও সুযোগ সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা হয়েছে। শাসক মহল তাদের এই অপকর্মে ও এই অসদুদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সব রকমের কারসাজির আশ্রয় গ্রহণ করেছে। বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ আতঙ্কগ্রস্ত করে ফেলা হয়েছে। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের পঞ্চম দিনে গতকাল (বৃহস্পতিবার) খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। পঞ্চম দিনেও আত্মপক্ষ সমর্থনে খালেদার বক্তব্য শেষ হয়নি। তার আবেদনে বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলাও ওই দিন একই আদালতে শুনানির জন্য উঠবে।
রাজধানীর বকশীবাজারে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতে প্রায় এক ঘণ্টার বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি এস. কে. সিনহাকে তাঁর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেয়া থেকেই প্রধান বিচারপতি এস. কে. সিনহার বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের অপতৎপরতা শুরু হয়। শাসক মহল তাদের ক্রোধ ও ক্ষোভ গোপন রাখতে পারেনি। তারা প্রকাশ্যেই প্রধান বিচারপতিকে নানা রকম হুমকি দিয়ে আপত্তিকর ও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করতে শুরু করে। সরকারের বিরুদ্ধে রায় দেয়ার অপরাধে তাকে পদত্যাগ করে চলে যেতে বলা হয়। বিচারপতি সিনহা আত্মপক্ষ সমর্থনে বিভিন্ন রকম ব্যাখ্যা দিয়েও ক্ষমতাসীনদের ক্রোধ প্রশমিত করতে পারেননি। তাঁকে কয়েকদিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে প্রায় অন্তরীণ ও বিচ্ছিন্ন অবস্থায় কাটাতে হয়। এরপর সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়, বিচারপতি সিনহা অসুস্থ এবং তিনি বিদেশে যাওয়ার জন্য ছুটি নিয়েছেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা অস্ট্রেলিয়া যাবার আগে সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশবাসীকে সুষ্পষ্টভাষায় জানিয়ে যান যে, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ইদানিং একটি রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহল, আইনজীবী ও বিশেষভাবে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে সমালোচনা করেছেন, এতে আমি সত্যিই বিব্রত। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে শংকার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলে গিয়েছিলেন, ছুটি শেষে তিনি ফিরে আসবেন এবং দায়িত্বে যোগ দেবেন। কিন্তু এরপর এটর্নি জেনারেল বলেন, ছুটিতে যাওয়া প্রধান বিচারপতির ফিরে এসে স্বপদে বসা সুদূর পরাহত। তার এ বক্তব্যে সরকারের মনোভাবের প্রতিফলন ঘটে এবং তার কথাই বাস্তবায়িত হয়। আমরা সংবাদপত্র ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জেনেছি, প্রধান বিচারপতি থাকা অবস্থায় এসকে সিনহাকে অসুস্থ ঘোষণা করে ন্যক্কারজনকভাবে জোর করে ছুটিতে এবং দেশের বাইরে যেতে বাধ্য করা হয়। পরবর্তীতে দেশে না ফিরে পদত্যাগ করতে তাঁকে বিশেষ পন্থায় বাধ্য করা হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের পছন্দ মাফিক রায় না দেয়ার কারণে দেশের প্রধান বিচারপতিকে যেখানে এমন ভাগ্য বরণ করতে হয় সেখানে অন্য বিচাররকদের সামনে ন্যায়বিচারের সুযোগ ও পরিবেশ কি আর থাকতে পারে? এই পরিস্থিতিতে দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর জনগণের কতটা আস্থা থাকতে পারে সেটা নিশ্চয়ই অনুমান করতে পারেন।
এমন পরিস্থিতিতে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করে বেগম জিয়া বলেন, ক্ষমতাসীনরা এই সেদিনও ফেনীতে আমার মোটর বহরে হামলা চালিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে তাদের অপপ্রচার, হুমকি এবং মামলা নিয়ে আদালত অবমাননাকর বক্তব্য অব্যাহত আছে। এসবেও আমি ভীত নই। আমার আশংকার জায়গা হচ্ছে, দেশে ন্যায়বিচারের পরিবেশ ও সুযোগ তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। কাজেই আদালতের কাছে আমি ন্যায়বিচার পাবো কি না সেই সংশয় নিয়েই এই মামলায় আমাকে জবানবন্দী দিতে হচ্ছে। দেশে সংবাদ পত্রের কোন স্বাধীনতা নেই মন্তব্য করে বিএনপি প্রধান বলেন, সংবাদ-মাধ্যমের এখন কোনো স্বাধীনতা নেই। ক্ষমতাসীনদের রোষানলে পড়ার ভয়ে তারা সত্য সংবাদ অবাধে প্রকাশ করার সাহস পায় না।
আদালতে খালেদা জিয়া বলেন, তার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়েই এসব মামলা করা হয়েছে। সবগুলো মামলাই করা হয়েছে অসত্য ও ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে। আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা কোনো মামলারই কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। আমি রাজনীতিতে সক্রিয় বলেই এবং আমাকে ক্ষমতাসীনদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে বিবেচনা করেই এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। অথচ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির মামলাগুলো তুলে নেওয়া হয়েছে। অসত্য ও ভিত্তিহীন অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে ক্রমাগত অপপ্রচার চালিয়েও জনগণ থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন করতে ব্যর্থ হয়েই তারা এসব মিথ্যা মামলার আশ্রয় নিয়েছে। এসব মামলা দায়েরের উদ্দেশ্যই হচ্ছে আমাকে হেনস্তা করা এবং জনগণের সামনে হেয় করা। কিন্তু তাদের সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি এবং হবেও না ইনশআল্লাহ্। বরং এসব করে তারাই জনগণের কাছে হেয় হচ্ছে এবং জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। কারণ এদেশের মানুষ অনেক সচেতন এবং তারা সত্য ও মিথ্যার ফারাক সহজেই বুঝতে পারে। তাই আমাদেরকে যত বেশি মামলায় জর্জরিত করা হচ্ছে আমরা ততো বেশি দেশবাসীর সহানুভূতি ও সমর্থন পাচ্ছি। জনগণ আরো বেশি করে আমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে।
মামলা-মোকদদমায় ভীত নন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, অসত্য ও ভিত্তিহীন অভিযোগে দায়ের করা মামলা-মোকদ্দমায় মোটেই ভীত নই। তবে দেশবাসী ও আমাদের আশংকার কারণ অন্য জায়গায়। সেটা হচ্ছে, অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ও ন্যাক্কারজনকভাবে দেশ থেকে ন্যায়বিচারের পরিবেশ ও সুযোগ সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা হয়েছে।
মমলার সাথে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই জানিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আদালতকে বলেন, আমি এ মামলার বিবরণ থেকে জেনেছি এবং কুয়েত দূতাবাসের চিঠিতে জানানো হয়েছে যে, জিয়াউর রহমানের নামে এতিমখানা স্থাপনের জন্য তারা অনুদান দিয়েছিল। এর সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তদানীন্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ.এস.এম মোস্তাফিজুর রহমান এই প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন এবং তিনিই সবকিছু জানতেন। এ মামলার বিবরণ থেকে আমি আরো জেনেছি যে, কুয়েতের দেয়া অনুদানের অর্থ দুইভাগ করে দুটি ট্রাস্টকে দেয়া হয়। এক্ষেত্রে আইনের কোনো লংঘন হয়নি এবং ব্যক্তিগতভাবে আমার কিংবা অন্য কারো কোনোভাবে লাভবান হবার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন, ট্রাস্ট দুটির কোনোটিতেই আমি কোনো পদে কখনো ছিলাম না এবং এখনো নেই। অনুদানের অর্থ আনা বা বিতরণের সঙ্গেও ব্যক্তিগতভাবে বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার কোনো রকম সংশ্লিষ্টতা ছিলো না। বাগেরহাটে অনুদানের টাকায় ট্রাস্টের মাধ্যমে স্থাপিত এতিমখানা সুন্দর ও সুচারুরূপে পরিচালিত হচ্ছে এবং সেই ট্রাস্ট সম্পর্কে কোনো অভিযোগও নেই। মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ থেকে আমি আরো জানতে পেরেছি যে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টটি বগুড়ায় এতিমখানা স্থাপনের লক্ষ্যে সেখানে জমি ক্রয় করে। এই জমি কেনা সম্পর্কেও কোনো রকম অনিয়মের অভিযোগ নেই। এই ট্রাস্টের বাকি টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে এবং তা সুদাসলে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট একটি বেসরকারি ট্রাস্ট। এই ট্রাস্টটি আইন সম্মতভাবে নিবন্ধিত এবং ট্রাস্টের ডিড অনুযায়ী দেশের ট্রাস্ট আইনে পরিচালিত। ট্রাস্টের কেউ সরকারি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নন। ট্রাস্টের কেউ কোনো অনিয়ম বা আইনের লংঘন করলে সে ব্যাপারে ট্রাস্ট আইনে অভিযোগ বা মামলা হতে পারে। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশন কিভাবে ট্রাস্টের কথিত অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে মামলা রুজু করে? এটা কি তাদের আওতা ও এখতিয়ারের ভেতরে পড়ে? তাছাড়া এখানে কোন রকম দুর্নীতিও হয়নি। এই মামলায় আমাকে কেন অভিযুক্ত করা হয়েছে তাও আমার বোধগম্য নয়।
এ মামলার প্রথম অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার রিপোর্টে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার নাম ছিলনা উল্লেখ করে তিনি আদালতকে বলেন, এ মামলার প্রথম অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা যে অনুসন্ধান রিপোর্ট দাখিল করেছেন সেখানে একজন অভিযুক্ত হিসেবে আমি তালিকাভ‚ক্ত ছিলাম না বলে তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন ও সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই পি.ডবিøউ-৩২ (খালেদা জিয়ার মামলা) তার সাক্ষ্যে বলেন, তিনি আমার বিরুদ্ধে অনুরূপ কোনো সাক্ষ্য প্রমান পান নাই বলে তার অনুসন্ধান রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, তার অনুসন্ধানের বিষয় ছিল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া মেমোরিয়াল ট্রাস্ট, বাগেরহাট। তিনি জিয়া মেমোরিয়াল ট্রাস্ট বিষয়ে কোনো আত্মসাতের অভিযোগ পাননি বলে রিপোর্ট প্রদান করেন। পি.ডবিøউ-৩২ বলেছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট একটি প্রাইভেট ট্রাস্ট এবং এখানে এতদংসক্রান্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ৪০৬/১০৯ ধারার অপরাধ হতে পারে মর্মে বর্ণনা ও তার সাক্ষ্য দান করেছেন। এই মামলাটিতে দ্বিতীয় অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা পি.ডবিøউ-৩১। তিনি পি.ডবিøউ-৩২ এর অধস্তন একজন সহকারী ডাইরেক্টর বলে পি.ডবিøউ-৩২-এর সাক্ষ্য দৃষ্টিতে দেখা যায়। তার অনুসন্ধানকালীন সময়ে তার একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা লোকমান হোসেন মামলার তদারকিতে নিয়োজিত ছিলেন। পি.ডবিøউ-৩২ এর অনুসন্ধান রিপোর্ট দুদক-এর উর্দ্ধতন কোনো কর্তৃপক্ষ দ্বারা বাতিল বা অগ্রহণযোগ্য এই মর্মে কোনো বক্তব্য সাক্ষ্য প্রমাণে আসে নাই। বরং সহকারী ডাইরেক্টর পি.ডবিøউ-৩১ তার উর্দ্ধতন কর্মকর্তা পি.ডবিøউ-৩২-এর প্রণীত অনুসন্ধান রিপোর্টের কিছু অংশ সংযোজন ও পরিবর্ধন করে আমাকে এই মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে রিপোর্ট প্রদান করেন। এ রিপোর্ট প্রদান করতে তিনি মাত্র দুই সপ্তাহ সময় নেন।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান মামলাটি দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কর্মকর্তা কর্তৃক অনুসন্ধান, তদন্ত ও চার্জশীট দেওয়া হয়েছে এবং তারাই মামলার বিচারের জন্য অনুমোদনপত্র দিয়েছেন। এই মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে কার ইঙ্গিতে, কার উদ্যোগে, কার অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে অনুচ্চারিত রয়ে গেছে। অর্থাৎ গোপন করা হয়েছে। এই মামলাটি প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল নামে বর্ণনা দিয়ে ঐ তহবিল তসরূপ সংক্রান্ত একটি মামলা। কিন্তু সাক্ষ্য প্রমাণে দুদকের সাক্ষীগণ অকপটে স্বীকার করেছেন যে, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে কোনো ব্যক্তি, কর্মকর্তা বা কোনো কর্তৃপক্ষ এই মামলা দায়েরের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। একইভাবে সংবিধান স্বীকৃত মতে ১২৭ ও ১২৮ অনুচ্ছেদে বর্ণিত মহাহিসাব নিরীক্ষকের দফতর থেকে কোনরূপ অডিট, নিরীক্ষা, আপত্তির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর কথিত এতিম তহবিলের টাকা তসরূপেরও কোনো অভিযোগ নেই। মামলার বিবরণে এটা স্বীকৃত যে, প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল নামে কোনো তহবিল কখনো কোনো প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকালে খোলা হয়েছে বা ছিল অথবা কোনো প্রাপ্তি কোনো মহল থেকে কখনো গৃহিত বা প্রদান করা হয়েছে কখনো এরূপ কোনো বক্তব্য এই মামলায় কোনো সাক্ষী দিতে পারেনি। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কথিত এতিম তহবিলে প্রারম্ভিক কী স্থিতি ছিল অথবা কোনো পর্যায়ে সংযোজন বা বিয়োজন পর কী স্থিতি ছিল এরূপ কোনো বক্তব্য কোনো সাক্ষী বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করেন নাই। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে লিখিতভাবে এতদসংক্রান্ত বিষয়ে কোনো হিসাবপত্র বা ডকুমেন্ট, বিদেশ থেকে অনুদান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিলে প্রাপ্তি সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্ট রেজিস্টার দুদকের প্রথম অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা পি.ডবিøউ-৩২ কে দেওয়া হয় নাই।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি ২৩ নভেম্বর
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিখিত বক্তব্য পাঠ অব্যাহত রয়েছে। তার আবেদনে মুলতবি রেখে আগামী ২৩ নভেম্বর অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ৫ নং বিশেষ জজ আখতারুজ্জামানের আদালত নতুন দিন ধার্য করেন। আদালতে ৩৪২ ধারায় টানা পঞ্চম দিনের মতো আত্মপক্ষ সমর্থন করেন প্রধান আসামি খালেদা জিয়া। বেলা ১১টা ৪৯ মিনিট থেকে ১২টা থেকে ৫৪ মিনিট পর্যন্ত বক্তব্য পাঠের পর মুলতবির আবেদন জানান তিনি।
এর আগে গত ১৯ অক্টোবর প্রথমদিনের বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। এই নিয়ে এই মামলায় খালেদা জিয়া ষষ্ঠবারের মতো আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন। বিদেশ যাওয়ার আগে একবার তিনি একই মামলায় বক্তব্য উপস্থান করেন।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক।



 

Show all comments
  • বুলবুল আহমেদ ১৭ নভেম্বর, ২০১৭, ৩:০৮ এএম says : 0
    একদম খাঁটি কথা বলেছেন
    Total Reply(0) Reply
  • কাসেম ১৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১:০২ পিএম says : 0
    দেশের বিচারের অবস্থা যে কী তা আল্লাহ তায়ালােই ভালো জানেন।
    Total Reply(0) Reply
  • মাহফুজ ১৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১:১৮ পিএম says : 0
    দেশে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা খুব জরুরী
    Total Reply(0) Reply
  • রিফাত ১৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১:১৯ পিএম says : 0
    আশা করি সবাই এই বাস্তবতাটি বুঝে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবেন
    Total Reply(0) Reply
  • নাসির ১৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১:২১ পিএম says : 0
    এই না হলে আপোষহীন নেত্রী।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ